ঢাকা বৃহস্পতিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৩

চট্টগ্রামের সিডিএ প্রকল্পে বিলাসী সফর

চট্টগ্রামের সিডিএ প্রকল্পে বিলাসী সফর

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ০৩ অক্টোবর ২০২৩ | ১৮:০০

‘শো মাস্ট গো অন’ শিরোনামে ব্রিটিশ রক ব্যান্ড কুইনের গানের কথাই অক্ষরে অক্ষরে ফলিতেছে বাংলাদেশে। আর্থিক পরিস্থিতি যতই নাজুক হউক; বিলাসী কেনাকাটা ও বিলাসী সফর বন্ধ করা যাইবে না– শো মাস্ট গো অন, যাহা চলিতেছে, যাহা বারংবার অনুষ্ঠিত হইতেছে, তাহাই চলিবে। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) নগরবাসীর করের অর্থ, বিদেশ হইতে ঋণ করিয়া আনা মহার্ঘ্য ডলার হেলায় তুচ্ছ করিয়া বিদেশে ‘আনন্দ ভ্রমণ’ করিয়া আসিয়াছে। ঘটনা ২০১৭ সালের হইলেও, এখন জানা যাইতেছে, ১ কোটি ৮ লাখ টাকা ব্যয়ের ঐ সফর যেই প্রকল্পের বরাতে হইতে পারিয়াছিল, সেই প্রকল্পটিই বাস্তবায়নযোগ্য ছিল না। সাম্প্রতিক ডলার সংকটের পশ্চাতে এই জাতীয় অপচয়ই যে দায়ী– তাহা অস্বীকার করা যায় কী প্রকারে?

মঙ্গলবারের সমকালে ‘সিডিএ প্রকল্প মানেই বিদেশে আনন্দ ভ্রমণ’ শীর্ষক সংবাদ জানাইতেছে, উক্ত বিদেশযাত্রার ৩৪ জনের মধ্যে ২৩ জনই প্রকল্পের সহিত সম্পর্কহীন। এইদিকে তাহারা যুক্তরাষ্ট্র, কানাডাসহ ১৪টি দেশ সফর সম্পন্ন করিয়াছেন। প্রকল্পের সম্ভাব্যতাই যাচাই হইতে পারে নাই, কিন্তু বিদেশ ছুটিয়া গিয়াছেন কর্মকর্তাগণ। প্রকল্প সিডিএর অথচ সফরকারীগণের তালিকায় রহিয়াছেন গণপূর্তের সাবেক সচিব ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা! আলোচিত প্রকল্পগুলি চট্টগ্রাম মহানগরবিষয়ক কিছুই নহে; উহা ছিল ‘অনন্যা আবাসিক এলাকার উন্নয়ন (দ্বিতীয় পর্যায়)’। অধুনা প্রকল্পটি বাস্তবায়নযোগ্য নহে বলিয়া যখন বাতিল হইয়া গিয়াছে, তখন কি তাহারা উক্ত সফরে ব্যয় হওয়া ডলার ফেরত দিবেন? যেই কর্মকর্তাগণ এই ধরনের খায়েশ মিটাইবার অনুমতি দিয়াছিলেন, তাহাদেরই বা কী জবাবদিহি হইবে? দেখা যাইতেছে, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কক্সবাজারের বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের সম্মুখে অভিযোগ কেন্দ্র খুলিয়া বসিয়া আছে। দুদক কি একটু পরিশ্রম করিয়া সিডিএ দপ্তরে হাজির হইতে পারিবেন? কিংবা সমকালে প্রকাশিত সংবাদের সূত্র ধরিয়া বিষয়টা তদন্ত করিয়া দেখিবেন? শুধু বিদেশ সফর নহে; যানজট ও জলাবদ্ধতা ভয়াবহ হইয়া উঠিবার পশ্চাতে এই জাতীয় দুর্নীতি ও অনিয়মের সম্পর্কও যেন তাহারা উদ্ঘাটন করেন।

আরও পড়ুন