পরীমণি, রঙিলা কিতাব ও অন্যান্য

ছবি কোলাজ: সমকাল
অনিন্দ্য মামুন
প্রকাশ: ০৭ নভেম্বর ২০২৪ | ১৯:৪০
জীপন অদ্ভুত এক ছকের মধ্য দিয়ে চলমান। জীবন ছকের এ বৃত্ত একেক মানুষের কাছে একেক রকম হয়। সুখ-দুখ, হাসি-কান্না, ক্ষমতা, দাপট, রাজনীতি এবং সাদামাটা– সবকিছু মিলিয়েই দারুণ এক বর্ণময় ক্যানভাস হচ্ছে জীবন। চিত্রনায়িকা পরীমণির জীবন যেন আরও বর্ণময়, আরও রহস্যজনক, আরও থ্রিলার আর সাসপেন্সে ভরপুর। সবকিছু ছাপিয়ে এ পরীমণি এখন পুরোদস্তুর মা। দুই সন্তান নিয়েই এখন তাঁর পৃথিবী ঘূর্ণায়মান। যে পৃথিবীতে অভিনয়, উদযাপন আরও অনেক অনুষঙ্গ রয়েছে। নায়িকারা মা হওয়ার পর ভক্তদের মাঝে প্রশ্ন জাগে তিনি কি আর কাজে ফিরতে পারবেন? বা কাজে কি নিয়মিত হবেন? পরীমণির বেলাতেও এমন প্রশ্ন অহরহ এসেছে, আসছে। এসব প্রশ্নের মধ্যেই পরীমণি করেছেন ওটিটি সিরিজ ‘রঙিলা কিতাব’। যার ট্যাগলাইনে লেখা ‘রক্তে রাঙানো প্রেমের কিসসা’। যে সিরিজটির গল্পেও পরীর বাস্তব জীবনের মা হওয়ার অভিজ্ঞতাই প্রতিফলিত হয়েছে। তাই সিরিজটিতে সহসাই পরীমণি থেকে সুপ্তি হয়ে উঠতে পেরেছিলেন নায়িকা।
রঙিলা কিতাবে যা থাকছে
নব্বইর দশকের প্রেক্ষাপটে কিংকর আহসান রচিত উপন্যাস ‘রঙিলা কিতাব’। প্রকাশিত ট্রেলারে সেটা অনুভব করা গেছে। যেখানে দেখা যায়, বরিশালের শহরে প্রদীপ ও সুপ্তির সুখের সংসার। নতুন জীবন শুরু হওয়ার আগেই মিথ্যা অভিযোগে সবকিছু এলোমেলো হতে থাকে। প্রদীপের জীবনের অতীত তাড়া করে বেড়ায় তাদের। গর্ভবতী সুপ্তিও ছুটতে থাকে তাঁর স্বামীর সঙ্গে। এ গল্পের মূল চরিত্র সুপ্তির ভূমিকায় অভিনয় করেছেন পরীমণি। তাঁর বিপরীতে আছেন মোস্তাফিজুর নুর ইমরান। তিনি অভিনয় করেছেন ‘প্রদীপ’ চরিত্রে। এর চিত্রনাট্য যৌথভাবে লিখেছেন অনম বিশ্বাস ও আশরাফুল আলম শাওন। ২০২১ সালে বিশিষ্ট চিত্রনির্মাতা অনম বিশ্বাস উপন্যাসটি নিয়ে চলচ্চিত্র বানাতে লেখকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম হইচইয়ের প্রযোজনায় শুরু হয় ওয়েব সিরিজ ‘রঙিলা কিতাব’-এর কাজ। সিরিজে পরীমণিকে কীভাবে সুপ্তি হিসেবে দাঁড় করালেন, আর মিঠুকে কীভাবে প্রদীপ বানালেন, এ প্রশ্ন রাখা হয় নির্মাতাকে। অনম বিশ্বাস বলেন, পরীমণি খুব ট্যালেন্টেড। মানসিকভাবে ক্যারেক্টারকে যথেষ্ট সময় দিয়েছে এবং প্রিপারেশন নিয়েছে। পরীর ওজন বাড়িয়েছে। ইমরানও প্রচুর খেটেছে ডায়ালগুলোর ভেতর কিছুটা লোকাল টোন এনেছে। শুটের পুরো সময়টা খুব ঝক্কির ছিল, এক সেকেন্ডের জন্যও ধৈর্য্য হারায়নি কেউ। তাদের এ পরিশ্রমই তাদের দুটি পূর্ণাঙ্গ চরিত্র হয়ে উঠতে পেরেছে।
পরীমণিকে যে কারণে নেওয়া
সাত পর্বের এ সিরিজের গল্প এক গ্যাংস্টারকে নিয়ে। যিনি বাবা হতে যাচ্ছেন জানার পর গ্যাংস্টার অপরাধ জগত ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু ভাগ্য এ ক্ষেত্রে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখায়। তখনই তিনি জড়িয়ে পড়েন এলাকার এমপি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায়। শুরু হয় অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে নিয়ে তাঁর পলাতক জীবন। গ্যাংস্টার প্রদীপের স্ত্রী সুপ্তি। এ চরিত্রে কেন পরীমণিকে নেওয়া? পরিচালক অনম বিশ্বাসের উত্তর, সুপ্তি চরিত্রের জন্য এমন একজনকে প্রয়োজন ছিল, যে নারী মাতৃত্বের স্বাদ অনুভব করেছেন। দারুণভাবে চরিত্রটি ফুটিয়ে তোলার ক্ষেত্রে পরীমণিই তখন আমাদের একমাত্র প্রথম পছন্দ ছিল।
যেন বাস্তব চরিত্র
কয়েক সপ্তাহ আগে রঙিলা কিতাবের পোস্টার প্রকাশ করে জানানো হয়, সিরিজটি হইচইয়ে প্রকাশ পাবে আগামীকাল ৮ নভেম্বর। সে সময় থেকেই পোস্টারে ব্যবহৃত পরীমণির প্রেগন্যান্সির ছবিগুলো চর্চায় উঠে আসে। বাস্তব জীবনেও যে পরীমণি কয়েক বছর আগে মা হয়েছেন। সেই পরীমণির কাছে এমন চরিত্রে পর্দা বা পোস্টারে আসতে কেমন লাগছে? পরীমণির সহজ উত্তর, নায়িকাদের কখনও প্রেগন্যান্সি বা বেবি বাম্প দেখাতে নেই, আমি এ ব্যাপারটিতে একদমই বিশ্বাসী না। মা হওয়ার পর রঙিলা কিতাব আমার কাছে এসেছে, তাই কাজটি আমি দারুণভাবে গ্রহণ করেছি ও উপভোগ করেছি। শুটিংয়ের সময় মনে হয়েছিল যেন বাস্তবের চরিত্র করছি।
- বিষয় :
- পরীমণি
- নতুন সিনেমা