বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ২০১৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর রাতের ভোট ডাকাতির কেলেঙ্কারিতে অস্বস্তিতে পড়ে এখন ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ডিজিটাল ভোট ডাকাতির প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। তাঁবেদার নির্বাচন কমিশন সেই আয়োজন করতে ব্যস্ত। নীরবে, নিঃশব্দে জনগণের ভোটাধিকার হরণের অপর নাম ইভিএম। সারা বিশ্বে বাতিল হওয়া ভোটাধিকার হরণের যন্ত্র ইভিএমে ভোট করার পথ থেকে এখনই সরে আসার জন্য নির্বাচন কমিশনের (ইসি) প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

রোববার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী আরও বলেন, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটকক্ষ প্রায় ১৪ হাজার। প্রতিটি কক্ষে একটি করে ইভিএম ধরে ১৪ হাজার ইভিএমের প্রয়োজন পড়ে। ইসির বক্তব্য অনুযায়ী, ব্যাকআপ হিসেবে ৫০ শতাংশ মেশিন যদি রাখাও হয়, তাহলে মোট ২১ হাজার ইভিএম লাগার কথা। কিন্তু নির্বাচন কমিশন আরও ১৪ হাজার ইভিএম অতিরিক্ত প্রস্তুত করে রাখছে। এটি রাখার মূল উদ্দেশ্য হলো, ভোটের আগেই ভোটের ফল প্রস্তুত করা। এটি সম্পূর্ণ রহস্যজনক।

বিশেষজ্ঞদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার তথ্য তুলে ধরে ইভিএমের ত্রুটির বিভিন্ন দিক তুলে ধরে তিনি বলেন, ইভিএমে ডিজিটাল ভোট ডাকাতি করা যায় খুবই সহজে। নির্বাচন কমিশন যে ইভিএমটি ব্যবহার করতে যাচ্ছে, তার দুটি ইউনিট আছে। একটি কন্ট্রোল ইউনিট, অন্যটি ব্যালট ইউনিট। কন্ট্রোল ইউনিটে ফিঙ্গার প্রিন্ট থাকলেও ব্যালট ইউনিটে ফিঙ্গার প্রিন্টের ব্যবস্থা নেই। ইভিএমের কন্ট্রোল ইউনিটে ফিঙ্গার প্রিন্ট ম্যাচিংয়ের পর ব্যালট ইউনিটে গিয়ে একজনের ভোট দিতে পারবেন অন্যজন।

কোনো ভোটারের ফিঙ্গার প্রিন্ট ম্যাচিং না হলে সহকারী প্রিসাইডিং অফিসারের হাতে ৫ শতাংশ ফিঙ্গার ম্যাচিং ক্ষমতা দিয়ে দিচ্ছে এই সরকারের একান্ত অনুগত নির্বাচন কমিশন। ফলে সাজানো ভোটের আয়োজন করে জনগণকে ধোঁকা দেওয়া হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু ও সহসাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম উপস্থিত ছিলেন।