তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ওয়ান-ইলেভেনের মাধ্যমে বিরাজনীতিকরণের প্রচেষ্টা করা হয়েছিল। এর মাধ্যমে প্রচেষ্টা ছিল রাজনীতিকদের জনসম্মুখে হেয় প্রতিপন্ন করা, বিরাজনীতিকরণ করা, মানুষকে রাজনীতিবিমুখ করা; কিন্তু এ প্রচেষ্টা সফল হয়নি। তবে এখনও বিরাজনীতিকরণের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলীর লেখা 'আমার দেখা ওয়ান ইলেভেন' গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, বিরাজনীতিকরণ প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে জরুরি অবস্থার সরকার যেন টিকে থাকতে পারে, সে জন্য প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা ছিল। যারা তখন বিরাজনীতিকরণের চেষ্টা করেছে, তারা এখনও সক্রিয়। কিছু কাগজপত্র দেখলেই বোঝা যায়, প্রায়ই রাজনীতিকদের চরিত্রহননের চেষ্টা করা হচ্ছে।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, পঁচাত্তরে রাজনীতিতে পরাজিত করতে না পেরে কিছু মানুষ ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল। আজও চক্রান্তের পথে হাঁটছে অনেকে। শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কৌশলের কাছে, নেতৃত্বের গুণাবলির কাছে, দূরদৃষ্টির কাছে পরাজিত হয়ে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ প্রচণ্ড হোঁচট খেয়েছে। রাজনৈতিকভাবে পরাজিত করতে না পেরে তারা ষড়যন্ত্রের পথে হাঁটছে। বিএনপি ও তার দোসররা রাজনীতিতে পরাজিত হয়ে ১/১১-এর কুশীলবদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। তাদের উদ্দেশ্য যে কোনো উপায়ে ওয়ান-ইলেভেন বা পঁচাত্তরের মতো করে হলেও শেখ হাসিনাকে বিদায় করতে চান তারা। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আলল্গাহ ছাড়া কাউকে ভয় করেন না। ১/১১-এ গ্রেপ্তারের পর শেখ হাসিনার মুক্তিতে শুধু তিনিই মুক্তি পাননি, তার হাত ধরে দেশের গণতন্ত্রও প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বর্তমানে দেশ সমৃদ্ধির পথে হাঁটছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন সারাবিশ্বের অনুকরণীয় রাষ্ট্রনায়ক।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ওয়ান-ইলেভেন সংঘটিত হওয়ার একটি কারণ হচ্ছে, বিএনপির লাগামহীন দুর্নীতি। সরকার পরিচালনায় অব্যবস্থাপনা, দেশে নৈরাজ্য, জঙ্গিবাদের মাথাচাড়া দিয়ে ওঠা- এসব কারণে তখন দেশে একটি নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। যারা বিরাজনীতিকরণ করতে চেয়েছিল, তারা সে সুযোগই নিয়েছিল। একটি পক্ষ আছে, যারা মনে করে রাজনীতিকরা পড়ালেখা কম জানে, দুর্নীতিগ্রস্ত। সবসময় তারা বিরাজনীতিকরণের চেষ্টা করে। এটি পাকিস্তান আমলেও ছিল।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, যে রাজনীতিবিদ সাহসী হয় না, সে হয় আপসকামী। যে সাহসী হয় না সে রাজনীতি থেকে হারিয়ে যায়। সাহস ছাড়া রাজনীতিতে এগোনো যায় না। বঙ্গবন্ধু সাহসী ছিলেন, আর বাঙালি জাতিকে তিনি ভালোবাসতেন। এ জন্যই তিনি বঙ্গবন্ধু হয়েছিলেন।

প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব শাবান মাহমুদ। ভাষাচিত্র প্রকাশনীর আয়োজনে এ প্রকাশনা উৎসবে আরও বক্তব্য দেন গ্রন্থের লেখক অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ও যুগান্তরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সাইফুল আলম, বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম, রাজনৈতিক বিশ্নেষক ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব সুভাষ সিংহ রায়, সৈয়দ বোরহান কবীর, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এমএ আজিজ প্রমুখ।