করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে বাংলাদেশ ঝুঁকিতে থাকলেও আতঙ্কিত হওয়ার মত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, 'প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত। দেশে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সবধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের সর্বাত্মক প্রয়াস ও সম্মিলিত উদ্যোগে করোনা যত বড় শত্রুই হোক, এই শত্রুকে আমরা পরাজিত করবোই।'

শুক্রবার রাজধানীর বনানী কবরস্থানে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তার কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। এর আগে তারর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা প্রয়াত নেতার কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এছাড়া জিল্লুর রহমানের পরিবারসহ বিভিন্ন সংগঠন নেতারাও শ্রদ্ধা জানান।

ওবায়দুল কাদের বলেন, 'করোনা বিষয়টা নিয়ে আমরা ঝুঁকিতে আছি, সেটা নি:সন্দেহে বলা চলে। কিন্তু আতঙ্কিত হওয়ার মত সেরকম পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি।আমাদের এখানে এ পর্যন্ত ১৮ জন (বর্তমানে ২০) করোনা রোগী সনাক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে। তারপরও ঝুঁকি আছে।'

'দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের মধ্যেও বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন থামছে না'- বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'করোনাভাইরাসের মধ্যেও বিরোধী দলের ওপর নির্যাতন কীভাবে হচ্ছে- সেটা আমার জানা নেই। কোনো তথ্যপ্রমাণও তো নেই। কোথায় তাদের ওপর নির্যাতন করা হচ্ছে? তথ্যপ্রমাণ নিয়ে আসুক। তারা ঢালাওভাবে অন্ধকারে ঢিল ছুঁড়বে যে নির্যাতন ও অত্যাচার হচ্ছে- এটা তাদের পুরানো অভ্যাস।'

করোনা সংকটের কারণে পাঁচটি সংসদীয় আসনের উপনির্বাচন ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন পিছিয়ে দিতে বিএনপির দাবির প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলামরা কখন কী যে বলেন! সবকিছুতে তারা রাজনীতি খুঁজে বেড়ান। নির্বাচনের বিষয়টা সম্পূর্ণভাবে নির্বাচন কমিশনের ব্যপার। নির্বাচন কমিশন এই সময়ে নির্বাচন পেছাতে চাইলে সরকারের কোনো কিছু করণীয় নেই।

তিনি আরও বলেন, নির্বাচন কমিশনকে সরকার নিয়ন্ত্রণ করে না। তাদের সিদ্ধান্ত তারাই নেয়। মির্জা ফখরুল নির্বাচন কমিশনের কাছে নির্বাচন পেছানোর যে আবেদন জানিয়েছেন, সেটা কার্যকর করবে কী করবে না- সেটাও নির্বাচন কমিশনের বিষয়।

প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্মৃতিচারণ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, জিল্লুর রহমান এদেশের একজন বরেণ্য রাজনীতিবিদ এবং সৎ ও সাহসী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ছিলেন। যিনি স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধে অবদান রেখেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর খুবই ঘনিষ্ট সহচর এবং দল ও দেশের সংকটে একজন সাহসী নেতা হিসেবে তিনি এদেশের রাজনৈতিক অঙ্গণে সবার কাছে প্রিয় ব্যক্তিত্ব।

তিনি বলেন, বিশেষ করে নেত্রী শেখ হাসিনা যখন কারাগারে, সে সময় জিল্লুর রহমান সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন। দলের দুঃসময়ে তিনি ছিলেন ঐক্যের প্রতীক, নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন। বয়স অনেক বেশি হলেও সে সময় আন্দোলন-সংগ্রামে তিনি যে অবদান রেখেছিলেন সেটা দলের নেতাকর্মীদের জন্য ছিল অনুপ্রেরণার উৎস।

এ সময় আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া ও উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খানসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।