- রাজনীতি
- আগামী বাজেট যথাসময়ে হবে?
আগামী বাজেট যথাসময়ে হবে?
অন্তর্বর্তীকালীন বাজেটের পরামর্শ অর্থনীতিবিদদের

করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে আগামী (২০২০-২১) অর্থবছরের বাজেট যথাসময়ে ঘোষণা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। অর্থনীতিবিদরা বলেছেন, অর্থনীতিতে এত বড় দুর্যোগ আর কখনও আসেনি। সংকট আরও কতটা প্রলম্বিত হয় তা দেখতে হবে। ফলে সময়মতো নতুন বাজেট ঘোষণা করা সরকারের জন্য কঠিন হবে। বিকল্প ভাবতে হবে সরকারকে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, ১১ জুন নতুন বাজেট ঘোষণা করা হতে পারে। এখন পর্যন্ত ওই সময়ই নির্ধারিত আছে। সে লক্ষ্যে কাজ চলছে। বাজেট প্রণয়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়কে বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করেছি। নির্ধারিত সময় মাথায় রেখে আগামী বাজেট প্রণয়নের কাজ চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সে লক্ষ্যে প্রস্তুতি চলছে। তবে পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করবে বাজেট ঘোষণার বিষয়টি।
এদিকে নতুন বাজেট পিছিয়ে গেলে সাংবিধানিক সংকট তৈরি হবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অর্থনীতিবিদসহ সংশ্নিষ্টরা বিভিন্ন মত দিচ্ছেন। কেউ কেউ বলেছেন, সরকার অন্তর্বর্তীকালীন বাজেট দিতে পারে, যেটার মেয়াদ তিন কিংবা ছয় মাস হতে পারে। কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন বাজেট সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে কিনা তা খতিয়ে দেখতে হবে।
কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ বলছেন, অন্তর্বর্তী বাজেট দিলে সাংবিধানিক কোনো সংকট তৈরি হবে না। কারণ সংবিধান অনুযায়ী পূর্ণাঙ্গ বাজেট ঘোষণার আগ পর্যন্ত আংশিক বাজেট দেওয়া যায়। জানা যায়, এর বাইরে বিকল্প আরও একটি ব্যবস্থা আছে। রাষ্ট্রপতি ৬০ দিন বাজেট ঘোষণা পিছিয়ে দিতে পারেন।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র বলেছে, তারা বিষয়গুলো পর্যালোচনা করছেন। এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। প্রথা অনুযায়ী প্রতিবছর বাজেট প্রণয়নের আগে অংশীজনের সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনা করা হয়। এ ছাড়া ব্যবসায়ীদের সঙ্গে খাতভিত্তিক আলোচনা করে এনবিআর। কিন্তু করোনার কারণে এবার এসব কিছুই হয়নি। ফলে যথাসময়ে নতুন বাজেট ঘোষণা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। অবশ্য এ বিষয়ে এখনও মুখ খোলেননি অর্থমন্ত্রী।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, করোনার আক্রমণের আগে নতুন বাজেটের আকার নিয়ে ধারণা করা হয়েছিল পাঁচ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট চূড়ান্ত করা হয়েছে। সংশোধিত বাজেট কমিয়ে পাঁচ লাখ কোটি টাকা হতে পারে। মূল বাজেট ছিল পাঁচ লাখ ২৩ হাজার কোটি টাকা।
এখন কর্মকর্তারা বলছেন, করোনার কারণে আগের ওই হিসাব ওলট-পালট হয়ে গেছে। ফলে নতুন বাজেটের আকার কমতে পারে। সূত্র বলেছে, করোনার কারণে স্বাস্থ্য সেবা, আর্থিক প্রণোদনা ও সামাজিক সুরক্ষায় ব্যাপক ব্যয় বাড়বে। ফলে নতুন বাজেটে ভর্তুকির চাপ ব্যাপক বাড়বে। চলতি বাজেটে ভর্তুকি খাতে মোট ৩২ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ আছে। করোনার কারণে তা ২০ শতাংশ বাড়বে। নতুন বাজেটে এ খাতে আরও বেশি বরাদ্দ দিতে হবে।
সূত্র বলেছে, এবার রাজস্ব আয়ের অবস্থা খুবই খারাপ। চলতি অর্থবছরের বাজেটে এনবিআরের মাধ্যমে তিন লাখ কোটি টাকার রাজস্ব আয়ের কথা বলা হলেও বাস্তবতা ভিন্ন। এনবিআর সূত্র বলেছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে অর্থবছর শেষে আড়াই লাখ কোটি টাকার জোগান দেওয়া যেত। কিন্তু করোনার কারণে রাজস্ব আয়ে ধস নেমেছে। ফলে এবার দুই লাখ কোটি টাকার বেশি রাজস্ব আয় হবে না।
ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বলেছেন, সরকারি ব্যয় বৃদ্ধি, আর্থিক সহায়তা প্যাকেজ প্রদান, সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমের আওতা বৃদ্ধি ও মুদ্রা সরবরাহ বৃদ্ধি করে দেশের অভ্যন্তরীণ অর্থনীতি চাঙ্গা করা হবে। কিন্তু এসব উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে হলে প্রচুর অর্থ লাগবে। সে পরিমাণ অর্থের জোগান কোথা থেকে আসবে তা অজানা। অর্থনীতিবিদরা বলেছেন, এ মুহূর্তে সরকারকে দুটি বিষয়ে নজর দিতে হবে। এক. বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে টাকা ধার নেওয়া। দুই. আরও বেশি বিদেশি সহায়তা আনা।
যোগাযোগ করা হলে কম্পট্রোলার অডিটর জেনারেল (সিএজি) ও সাবেক অর্থসচিব মুহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী সমকালকে বলেন, সংবিধানে আছে, পূর্ণ বাজেটের আগ পর্যন্ত আংশিক বাজেট দেওয়া যায়। জরুরি কিংবা দুর্যোগের কারণে যদি বাজেট ঘোষণা করা না যায়, তা হলে রাষ্ট্রপতি আদেশ জারি করে ৬০ দিন পর্যন্ত সময় বাড়াতে পারেন।
অর্থনীতিবিদ ডক্টর মির্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন বাজেট দিলে কোনো সমস্যা হবে না। কিন্তু সরকারকে বাজেট দিতেই হবে। তিনি মনে করেন, এবার অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণ তেমন হবে না। অভ্যন্তরীণ ঋণের সুযোগ সীমিত। কারণ এর মধ্যে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে প্রচুর ঋণ নিয়েছে সরকার। এ ছাড়া সঞ্চয়পত্র বিক্রি কমে গেছে। এ অবস্থায় বাজেটে অর্থায়নের জন্য দুটি বিষয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে সরকারকে। এক. কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ধার নেওয়া। দুই. বৈদেশিক সহায়তার ওপর জোর দেওয়া। সম্পদের সীমাবদ্ধতার কারণে নতুন বাজেটের আকার পাঁচ লাখ কোটি টাকার বেশি হওয়া ঠিক হবে না।
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পিআরআই ও আইএমএফের সাবেক কর্মকর্তা ডক্টর আহসান এইচ মনসুর বলেন, এ অবস্থায় পূর্ণাঙ্গ বাজেট দেওয়া ঠিক হবে না। জরুরি অবস্থায় দুই মাস পেছানো যেতে পারে। এ সময়ে না পারলে অন্তর্বর্তীকালীন বাজেট দিতে পারে সরকার, যেটার মেয়াদ ছয় কিংবা তিন মাস হতে পারে। ভারতসহ অরেক দেশে অন্তর্বর্তীকালীন বাজেট দেওয়া হয়।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, ১১ জুন নতুন বাজেট ঘোষণা করা হতে পারে। এখন পর্যন্ত ওই সময়ই নির্ধারিত আছে। সে লক্ষ্যে কাজ চলছে। বাজেট প্রণয়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়কে বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করেছি। নির্ধারিত সময় মাথায় রেখে আগামী বাজেট প্রণয়নের কাজ চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সে লক্ষ্যে প্রস্তুতি চলছে। তবে পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করবে বাজেট ঘোষণার বিষয়টি।
এদিকে নতুন বাজেট পিছিয়ে গেলে সাংবিধানিক সংকট তৈরি হবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অর্থনীতিবিদসহ সংশ্নিষ্টরা বিভিন্ন মত দিচ্ছেন। কেউ কেউ বলেছেন, সরকার অন্তর্বর্তীকালীন বাজেট দিতে পারে, যেটার মেয়াদ তিন কিংবা ছয় মাস হতে পারে। কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন বাজেট সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে কিনা তা খতিয়ে দেখতে হবে।
কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ বলছেন, অন্তর্বর্তী বাজেট দিলে সাংবিধানিক কোনো সংকট তৈরি হবে না। কারণ সংবিধান অনুযায়ী পূর্ণাঙ্গ বাজেট ঘোষণার আগ পর্যন্ত আংশিক বাজেট দেওয়া যায়। জানা যায়, এর বাইরে বিকল্প আরও একটি ব্যবস্থা আছে। রাষ্ট্রপতি ৬০ দিন বাজেট ঘোষণা পিছিয়ে দিতে পারেন।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র বলেছে, তারা বিষয়গুলো পর্যালোচনা করছেন। এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। প্রথা অনুযায়ী প্রতিবছর বাজেট প্রণয়নের আগে অংশীজনের সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনা করা হয়। এ ছাড়া ব্যবসায়ীদের সঙ্গে খাতভিত্তিক আলোচনা করে এনবিআর। কিন্তু করোনার কারণে এবার এসব কিছুই হয়নি। ফলে যথাসময়ে নতুন বাজেট ঘোষণা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। অবশ্য এ বিষয়ে এখনও মুখ খোলেননি অর্থমন্ত্রী।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, করোনার আক্রমণের আগে নতুন বাজেটের আকার নিয়ে ধারণা করা হয়েছিল পাঁচ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট চূড়ান্ত করা হয়েছে। সংশোধিত বাজেট কমিয়ে পাঁচ লাখ কোটি টাকা হতে পারে। মূল বাজেট ছিল পাঁচ লাখ ২৩ হাজার কোটি টাকা।
এখন কর্মকর্তারা বলছেন, করোনার কারণে আগের ওই হিসাব ওলট-পালট হয়ে গেছে। ফলে নতুন বাজেটের আকার কমতে পারে। সূত্র বলেছে, করোনার কারণে স্বাস্থ্য সেবা, আর্থিক প্রণোদনা ও সামাজিক সুরক্ষায় ব্যাপক ব্যয় বাড়বে। ফলে নতুন বাজেটে ভর্তুকির চাপ ব্যাপক বাড়বে। চলতি বাজেটে ভর্তুকি খাতে মোট ৩২ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ আছে। করোনার কারণে তা ২০ শতাংশ বাড়বে। নতুন বাজেটে এ খাতে আরও বেশি বরাদ্দ দিতে হবে।
সূত্র বলেছে, এবার রাজস্ব আয়ের অবস্থা খুবই খারাপ। চলতি অর্থবছরের বাজেটে এনবিআরের মাধ্যমে তিন লাখ কোটি টাকার রাজস্ব আয়ের কথা বলা হলেও বাস্তবতা ভিন্ন। এনবিআর সূত্র বলেছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে অর্থবছর শেষে আড়াই লাখ কোটি টাকার জোগান দেওয়া যেত। কিন্তু করোনার কারণে রাজস্ব আয়ে ধস নেমেছে। ফলে এবার দুই লাখ কোটি টাকার বেশি রাজস্ব আয় হবে না।
ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বলেছেন, সরকারি ব্যয় বৃদ্ধি, আর্থিক সহায়তা প্যাকেজ প্রদান, সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমের আওতা বৃদ্ধি ও মুদ্রা সরবরাহ বৃদ্ধি করে দেশের অভ্যন্তরীণ অর্থনীতি চাঙ্গা করা হবে। কিন্তু এসব উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে হলে প্রচুর অর্থ লাগবে। সে পরিমাণ অর্থের জোগান কোথা থেকে আসবে তা অজানা। অর্থনীতিবিদরা বলেছেন, এ মুহূর্তে সরকারকে দুটি বিষয়ে নজর দিতে হবে। এক. বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে টাকা ধার নেওয়া। দুই. আরও বেশি বিদেশি সহায়তা আনা।
যোগাযোগ করা হলে কম্পট্রোলার অডিটর জেনারেল (সিএজি) ও সাবেক অর্থসচিব মুহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী সমকালকে বলেন, সংবিধানে আছে, পূর্ণ বাজেটের আগ পর্যন্ত আংশিক বাজেট দেওয়া যায়। জরুরি কিংবা দুর্যোগের কারণে যদি বাজেট ঘোষণা করা না যায়, তা হলে রাষ্ট্রপতি আদেশ জারি করে ৬০ দিন পর্যন্ত সময় বাড়াতে পারেন।
অর্থনীতিবিদ ডক্টর মির্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন বাজেট দিলে কোনো সমস্যা হবে না। কিন্তু সরকারকে বাজেট দিতেই হবে। তিনি মনে করেন, এবার অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণ তেমন হবে না। অভ্যন্তরীণ ঋণের সুযোগ সীমিত। কারণ এর মধ্যে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে প্রচুর ঋণ নিয়েছে সরকার। এ ছাড়া সঞ্চয়পত্র বিক্রি কমে গেছে। এ অবস্থায় বাজেটে অর্থায়নের জন্য দুটি বিষয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে সরকারকে। এক. কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ধার নেওয়া। দুই. বৈদেশিক সহায়তার ওপর জোর দেওয়া। সম্পদের সীমাবদ্ধতার কারণে নতুন বাজেটের আকার পাঁচ লাখ কোটি টাকার বেশি হওয়া ঠিক হবে না।
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পিআরআই ও আইএমএফের সাবেক কর্মকর্তা ডক্টর আহসান এইচ মনসুর বলেন, এ অবস্থায় পূর্ণাঙ্গ বাজেট দেওয়া ঠিক হবে না। জরুরি অবস্থায় দুই মাস পেছানো যেতে পারে। এ সময়ে না পারলে অন্তর্বর্তীকালীন বাজেট দিতে পারে সরকার, যেটার মেয়াদ ছয় কিংবা তিন মাস হতে পারে। ভারতসহ অরেক দেশে অন্তর্বর্তীকালীন বাজেট দেওয়া হয়।
মন্তব্য করুন