সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, করোনা সংকটের শুরু থেকে আজ পর্যন্ত শেখ হাসিনা সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ এবং গৃহীত ও বাস্তবায়িত সিদ্ধান্ত যখন দেশ বিদেশে প্রশংসিত হচ্ছে, তখন মির্জা ফখরুলসহ বিএনপি নেতারা পুরনো নেতিবাচকতার বৃত্তেই ঘুরপাক খাচ্ছেন। সিয়াম সাধনার পর ঈদের দিনেও তারা মানুষের পাশে না থেকে, মানুষকে সাহস না জুগিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদ্গারের মরচে ধরা সমালোচনার তীর ছুড়েছেন, যা অনাকাঙ্ক্ষিত ও অপ্রত্যাশিত।

মঙ্গলবার সংসদ ভবনের সরকারি বাসভবনে আয়োজিত এক অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, বিএনপি নেতারা জনগণের পাশে দাঁড়াবেন না, ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত  মানুষের খোঁজ-খবরও নেবেন না। অথচ মিডিয়ায় সরকারের সমালোচনা করবেন। তাহলে এটাই কি বিএনপির রাজনীতি? পবিত্র ঈদের দিনেও জনগণ তাদের মুখের বিষ থেকে রেহাই পায়নি।

বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে ওবায়দুল কাদের বলেন, সরকার একদিকে করোনার সংক্রমণ রোধ ও আক্রান্তদের চিকিৎসা করছে। অন্যদিকে ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের সুরক্ষায় পূর্ণ মনোনিবেশ করছে। এমতাবস্থায় বিএনপিকে কোনো কর্মসূচিতে বাধা প্রদানের অভিযোগ মিথ্যাবাদী রাখাল বালকের গল্পের সামিল।

তিনি বলেন, করোনা সংকট ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রমাণ হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগই জনগণের পাশে থাকে। এটাই আওয়ামী লীগের ঐতিহ্য।

ঈদের সময় গ্রাম-শহরের মানুষের অবাধ বিচরণ করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিয়েছে মন্তব্য করে সেতুমন্ত্রী বলেন, অধিকাংশ মানুষের মধ্যে ধৈর্য্য ও শৃঙ্খলার ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। কেউ কেউ স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঘরে অবস্থান করলেও অনেকেই এসব কানেও তুলছেন না। তারা স্বাভাবিক সময়ের মত ঘোরাফেরা করছেন, হাট বাজারে ভিড় ও জনসমাগম ঘটাচ্ছেন। স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে চলছেন না। এই উদাসীনতা ও সামান্যতম শৈথিল্য নিজের, পরিবারের এবং আশপাশের সবার ভয়ানক বিপদ ডেকে আনছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ উদ্যোগের অবনতি ঘটাচ্ছে। এতে শহর-গ্রাম সর্বত্রই সংক্রমণ ও মৃত্যু বাড়ছে।

দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে মানুষের এই অসাবধানতার কারণে সামনে বাংলাদেশের জন্য আরও কঠিন সময় আসছে। প্রতিকার সমাধান নয়, প্রাণঘাতী এ ভাইরাস থেকে বাঁচতে ও সুরক্ষা পেতে প্রতিরোধ ব্যবস্থা জোরদারের বিকল্প নেই। সামনে কঠিন সময়। দয়া করে আসুন, সবাই সচেতন হই। ঐক্যবদ্ধ হয়ে সম্মিলিতভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলি।

বাংলাদেশের করোনা পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতি হওয়ার কথা তুলে ধরে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, করোনাভাইরাস আক্রান্ত বিশ্বের ২১৫টি দেশ এবং অঞ্চলের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থানের আরও অবনতি হয়েছে। বাংলাদেশের অবস্থান বর্তমানে বিশ্বের ২৩তম। এর সংক্রমণ থেকে ছোট-বড়, ধনী-গরিব কেউই রেহাই পাচ্ছেন না। আগামী কিছুদিনে পরিস্থিতি আরও কঠিন হবে বলে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তাই ধৈর্য্যহারা না হয়ে সবাইকে সাবধানতা অবলম্বনের জন্য আবারও আহ্বান জানাচ্ছি। যারা ফ্রন্টলাইনে যুদ্ধ করছেন, তাদেরও মনোবল না হারিয়ে সাহসিকতার সঙ্গে লড়াইয়ের অনুরোধ জানাচ্ছি।