- রাজনীতি
- রাষ্ট্রীয় পাটকল বন্ধের সিদ্ধান্ত বাতিল না হলে ঈদের পর বৃহত্তর আন্দোলন
বাম জোটের ‘বঙ্গভবন থেকে গণভবন পর্যন্ত মানবপ্রাচীর’ কর্মসূচি পালিত
রাষ্ট্রীয় পাটকল বন্ধের সিদ্ধান্ত বাতিল না হলে ঈদের পর বৃহত্তর আন্দোলন

অবিলম্বে রাষ্ট্রীয় পাটকল বন্ধের সিদ্ধান্ত বাতিল এবং আধুনিকায়ন করে রাষ্ট্রীয় পরিচালনায় পাটকল চালু রাখার দাবি জানিয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। নেতারা বলেছেন, সরকার এই গণবিরোধী সিদ্ধান্ত থেকে সরে না এলে ঈদের পর বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারে বাধ্য করা হবে। এর আগে পাটচাষী, পাটকল শ্রমিক, বুদ্ধিজীবী, অর্থনীতিবিদ, ছাত্র, সংস্কৃতিকর্মী এবং নারীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে সঙ্গে নিয়ে জাতীয় কনভেনশন করে আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
সোমবার বাম গণতান্ত্রিক জোটের উদ্যোগে ‘বঙ্গভবন থেকে গণভবন পর্যন্ত মানবপ্রাচীর’ কর্মসূচি পালনকালে রাজধানীর বিভিন্নস্থানে আয়োজিত সমাবেশগুলোতে নেতারা এসব কথা বলেন। রাষ্ট্রীয় পাটকল বন্ধের গণবিরোধী সিদ্ধান্ত বাতিল এবং গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের নামে বন্ধ বা পিপিপি নয় আধুনিকায়ন করে পাটকল চালু রাখাসহ বিভিন্ন দাবিতে সকাল ১১টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত এক ঘণ্টার এই মানবপ্রাচীর কর্মসূচি পালিত হয়। একই দাবিতে একই দিন সারাদেশে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচিও পালন করেছে বাম জোট।
রাজধানীতে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যে মানবপ্রাচীর কর্মসূচি পালনকালে বাম জোটের শরিক দলগুলোর নেতাকর্মীরা ব্যানার ও ফেস্টুনসহ ছয়টি স্পটে রাস্তার পাশে অবস্থান নেন। বঙ্গভবন-রাজউক, পল্টন মোড়, জাতীয় প্রেস ক্লাব, শাহবাগ, সায়েন্স ল্যাবরেটরি (সিটি কলেজ) এবং গণভবনের (আসাদ গেট মোড়) সামনের এই ছয়টি স্পটে পৃথক পৃথক সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
সমাবেশ গুলোতে বক্তব্য রাখেন বাম জোটের সমন্বয়ক বজলুর রশীদ ফিরোজ, কেন্দ্রীয় নেতা সাইফুল হক, আব্দুল্লাহ্ হেল কাফী রতন, আকবর খান, লক্ষ্মী চক্রবর্ত্তী, রাজেকুজ্জামান রতন, সাজ্জাদ জহির চন্দন, মানস নন্দী, শহীদুল ইসলাম সবুজ, বাচ্চু ভুইয়া, রুহিন হোসেন প্রিন্স, মানবেন্দ্র দেব, মফিজুর রহমান লাল্টু, ডা. ফজুলর রহমান, হাসান তারেক চৌধুরী সোহেল, বহ্নিশিখা জামালী, আহসান হাবিব লাভলু, অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার, খালেকুজ্জামান লিপন, সাজেদুল হক রুবেল, লুনা নুর প্রমুখ। এছাড়া মৎস্য ভবনের সামনে খান আসাদুজ্জামান মাসুমের নেতৃত্বে যুব ইউনিয়ন নেতারা কর্মসূচির সঙ্গে সংহতি জানিয়ে মানববন্ধন করেছেন।
নেতারা বলেন, লোকসানের অজুহাতে সরকার ২৬টি রাষ্ট্রীয় পাটকল বন্ধ ঘোষণা করেছে। অথচ লোকসানের প্রকৃত কারণ কী সেটা চিহ্নিত ও দূর করার কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। প্রকৃতপক্ষে লোকসানের জন্য শ্রমিকরা দায়ী নন। দায়ী সরকারের দুর্নীতি, লুটপাট ও ভুলনীতি। এর দায় শ্রমিক ও জনগণ নেবে না।
তারা আরও বলেন, এ সিদ্ধান্ত গণবিরোধী ও গোটা জাতির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতার সামিল। পাট এবং পাটকল দেশের জাতীয় ঐতিহ্য এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে সম্পর্কিত। ফলে পাটকল বন্ধ করার অর্থ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও অঙ্গিকারের সঙ্গেও বিশ্বাসঘাতকতা করা। বর্তমান সরকার সবসময় বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার কথা বলে। বঙ্গবন্ধু পাটকল জাতীয়করণ করেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেগুলো বন্ধ ও বেসরকারিকরণ করছেন। শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন নয়, লুটেরাদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে ক্ষমতায় বসেছেন।
নেতারা বলেন, বাস্তবে জমিসহ পাটকলের ২৫ হাজার কোটি টাকার সম্পদ দখলে নেওয়ার ওপর শোষক-লুটেরাদের দৃষ্টি পড়েছে। আর সরকার ওই লুটেরাদের পক্ষে কাজ করছে। কিন্তু দেশের জনগণ সেটা হতে দেবে না।
মন্তব্য করুন