বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‌‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে দেশে পরিবর্তন আসবে। হতাশার কোনো জায়গা নেই। পরিবর্তন তো হবেই, পরিবর্তন আসতে হবে। সেই পরিবর্তনের জন্যই কাজ করতে হবে। জনগণকে সামনে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে, সকলের মধ্যে ঐক্য সৃষ্টি করে পরিবর্তন আনতে হবে, দেশে গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে হবে।’

মঙ্গলবার বিএনপি আয়োজিত এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় সরকারের সমালোচনা করতে গিয়ে বিএনপি মহাসচিব এই প্রত্যাশা ব্যক্ত করে মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘আমরা যে লড়াইটা লড়ছি- সেটা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই, এদেশের মানুষের বেঁচে থাকার জন্য লড়াই, এদেশের মানুষের যে মালিকানা, তার রাষ্ট্রের মালিকানা তা ফেরত পাওয়ার লড়াই। এই লড়াইয়ে প্রায় বেশির ভাগ মানুষের সমর্থন রয়েছে। গণতান্ত্রিক অবস্থা তারা ফিরে পেতে চায়, তারা গণতন্ত্রকে ফিরে পেতে চায়, তারা অধিকার ফিরে পেতে চায়, তারা ভোট দিতে চায়। কিন্তু হচ্ছে না, পারা যাচ্ছে না। এখানে এমন এক শক্তি পুরোপুরিভাবে রাষ্ট্রযন্ত্রকে দখল করে, ক্ষমতা দখল করে বসে সবার স্বপ্নগুলোকে খান খান করে দিচ্ছে। এজন্য এখন আমাদের ভাবতে হবে।’

বিএনপির উদ্যোগে স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রয়াত সভাপতি শফিউল বারী বাবু ও বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল আউয়ালের স্মরণে এই ভার্চুয়াল আলোচনা সভা হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এখন বিশ্ব পরিস্থিতিতে যে রাজনীতি এসেছে সেখানে আমাদের গণতন্ত্রের উত্তরণ এতো সহজ নয়। ডিক্টেটর থেকে ডেমোক্রেসি অথবা ফ্যাসিজম থেকে ডেমোক্রেসি-এটা এতো সহজে আসে না। এর জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়, অনেক মূল্য দিতে হয় করতে হয়। আমরা কিন্তু গণতান্ত্রিক দল হিসেবে বিএনপি ইতিমধ্যেই আমরা প্রচুর দান দিয়েছি, দিচ্ছি, দিয়ে চলেছি। প্রায় ২০ লাখ আসামি মিথ্যা মামলায়, এক লাখের ওপরে মামলা, আমাদের প্রায় হাজারের উপর মানুষ গুম হয়ে গেছে, হাজারের উপরে মানুষ খুন হয়ে গেছে এবং কথা বলার কোনো স্বাধীনতা নেই, বিচার পাওয়া যাচ্ছে না এবং অর্থনৈতিক ন্যুনতম যেটুকু স্বাধীনতা ছিলো সেটাও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।’

তিনি বলেন, এক্ষেত্রে আমাদের সবচেয়ে বড় দায়িত্ব রাজনৈতিক দল হিসেবে জনগণকে সংগঠিত করা। যেই জনগণ ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে একটা বিক্ষুব্ধ হয়ে আছে তাদেরকে সংগঠিত করতে হবে। এর মাধ্যমেই জনগণের অধিকারটাকে ফিরিয়ে দিতে সক্ষম হবো, এছাড়া হবে না।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, শফিউল বারী বাবু ও আবদুল আউয়াল খানকে হারিয়ে আমরা একেকজন যে উদীয়মান তরুন নেতাকে হারালাম। তারা নিজ নিজ এলাকায় যেভাকে কাজ করছিলো, আমাদের ভবিষ্যত নেতৃত্ব দেয়ার জন্য তারা প্রস্তুত হচ্ছিল।

বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহিদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি পরিচালনায় আলোচনা সভায় দলের ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান, শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খান খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।