আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, হেফাজতে ইসলাম নামের একটি উগ্র সাম্প্রদায়িক অপশক্তি দেশের বিদ্যমান স্বস্তি ও শান্তি বিনষ্টে বিভিন্ন স্থানে অব্যাহত তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছে। এই তাণ্ডব সহনশীলতার সকল মাত্রা অতিক্রম করেছে। দেশের জনগণের ধৈর্য্য ও সহনশীলতার একটা সীমা আছে। সীমা অতিক্রম করলে তার পরিণতি হবে ভয়াবহ।

বুধবার জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় তার সরকারি বাসভবনে সমসাময়িক বিষয়ে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, 'জনগণের জানমালের সুরক্ষা দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সন্ত্রাস, নৈরাজ্য সৃষ্টিকারী ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তির উস্কানিদাতাদের তালিকা প্রস্তুত করে তাদের রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে হবে।'

তিনি আরও বলেন, 'সরকার পরিচালনার দায়িত্বে আছে বলেই প্রতিক্রিয়াশীল চক্রের ধ্বংসাত্মক রাজনীতির বিপরীতে আওয়ামী লীগ এখনও দায়িত্বশীল আচরণ করছে, দেখাচ্ছে সহনশীলতা। বাংলাদেশের মানুষ ধর্মপ্রাণ জাতি। তারা কোনো ধর্মান্ধতাকে সমর্থন দেয় না।'

তাণ্ডব সৃষ্টিকারী অপশক্তিকে সতর্ক করে দিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'আগুন নিয়ে খেলবেন না, সেই আগুনে নিজেদের হাতই পুড়ে যাবে। ধৈর্য্যের বাঁধ ভেঙে দেবেন না। মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং বঙ্গবন্ধুর অবমাননা জাতি আর সহ্য করবে না। বঙ্গবন্ধুর ছবি ও ভাস্কর্যের ওপর যারা হামলা করেছে, আওয়ামী লীগ কর্মীরা তাদের এ ধৃষ্ঠতার জবাব দেবে। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা আঘাত আসলে প্রতিঘাত করতে জানেন। আক্রমণ করলে পাল্টা আক্রমণও করতে জানেন।'

তিনি বলেন, 'দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরকারি-বেসরকারি স্থাপনায় হামলা, অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। ভূমি অফিসে আগুন দিয়ে জমিজমার গুরুত্বপূর্ণ দলিল, খতিয়ান ও নামজারি রেকর্ড ছাই করা হয়েছে। এখন ভূমির প্রয়োজনীয় দলিল ও নথিপত্রের অভাবে মানুষকে বংশপরম্পরায় মামলা-মোকদ্দমা লড়তে হবে। সুতরাং যারা এসবের সঙ্গে জড়িত, তাদের চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।'

মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল দেশপ্রেমিক জনগণকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, 'বিএনপি-জামায়াত নৈরাজ্য সৃষ্টি করে ধ্বংসাত্মক আগুনসন্ত্রাসের মাধ্যমে ২০১৩-১৪ সালে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করার ঘৃণ্য খেলায় মত্ত হয়েছিল। এই আগুনসন্ত্রাসী ও অশুভ শক্তিকে প্রতিহত ও পরাজিত করতে হবে।'

সড়ক পরিবহন মন্ত্রী বলেন, 'পঁচাত্তরে জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার পর মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হারানো গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করেছেন। তিনি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করছেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের মাধ্যমে জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করেছেন। বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে দাঁড় করিয়েছেন। দেশের অর্থনীতিকেও দাঁড় করিয়েছেন শক্ত ভিতের ওপর।'

পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের কাছে নতি স্বীকার করে সরকার গণপরিবহন চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে- বিভিন্ন মহলের এমন অভিযোগের জবাবে তিনি বলেন, 'ঢাকাসহ দেশের সবকটি সিটি করপোরেশনে জনস্বার্থে গণপরিবহন চালুর যে সিদ্ধান্ত সরকার নিয়েছে, সে ব্যাপারে কেউ কেউ বিরূপ মন্তব্য করছেন। যা অত্যন্ত দুঃখজনক। জনস্বার্থে ও জনগণের দাবির মুখে তাদের দুর্ভোগ কমাতেই সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটা নিয়ে বিভ্রান্তির অবকাশ নেই। দুয়েকদিনের মধ্যে দূরপাল্লার বাস সার্ভিস চালু হবে বলেও কেউ কেউ অপপ্রচার ও বিভ্রান্তিকর মন্তব্য করেছেন। এটা মোটেও সত্য নয়।'