বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘এই সরকার নির্বাচিত নয়, তাদের সঙ্গে জনগণের কোনো সম্পর্ক নেই, জনগণের প্রতি এদের কোনো দায়িত্ববোধও নেই। এজন্য প্রস্তাবিত বাজেটে পরিবেশের তাদের কোন গুরুত্ব নেই, কোন বরাদ্দ নেই। অথচ জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য বিশ্ব ফান্ড থেকে সরকার টাকাও পেয়েছে। অর্ধেকের বেশি তারা খেয়ে ফেলেছে, কাজ করতে পারেনি। তাদের কর্মের মূল লক্ষ্যই হচ্ছে লুট করা। এই লুটপাট ছাড়া আর কিছুই দেখতে পায় না।’

শনিবার বিশ্ব জলবায়ু উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবে 'বৈশ্বিক দুর্যোগ ভবিষ্যত পরিকল্পনা ও করণীয়' শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

সভায় দলের নেতাকর্মীদের হতাশ না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বিএনপি জনগণের সরকার ছিল। ভবিষ্যতেও সেই ধরনের কাজ করবে। হতাশ হবেন না, হতাশ হলে বাঁচার পথ থাকবে না। সংগ্রাম করেই চলমান পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। আমরা অত্যন্ত আশাবাদী।’

তিনি বলেন, ‘আমরা বর্তমানে এক ভয়ঙ্কর পরিবেশে বাস করছি। কোভিড-১৯ ভাইরাস দেশে দেশে সংক্রমন হচ্ছে, মারা যাচ্ছে। অনেকেই বলছেন প্রকৃতি এখন প্রতিশোধ নিচ্ছে। আমি মনে করি- টেকসই অর্থনীতি ও টেকসই পরিবেশ তৈরী করতে চাইলে নদী, পানি, বন-জঙ্গল সবকিছুকে ম্যানেজ করার ওপর নির্ভর করবে আমি কতটা টেকসই থাকব।’

ভারতের পানি আগ্রাসনের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘দেশের রাজনৈতিক পরিবেশ সঙ্গত না হলে, জবাবদিহিতামূলক সরকার না হলে এবং রাষ্ট্রের মালিক জনগণকে তার মালিকানা ফিরিয়ে দেয়া না গেলে চলমান দুর্বৃত্তায়ন চলতে থাকবে। সেক্ষেত্রে আমাদেরকে জিয়াউর রহমানের বাস্তব ও বিজ্ঞান ভিত্তিক দেখানো পথে হাটতে হবে। তাহলেই আমরা আমাদের রাজনৈতিক ও প্রাকৃতিক পরিবেশ ঠিক রাখতে পারব।’

সাবেক পানি সম্পদ মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ বীরবিক্রম বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনে বিশ্বব্যাপী সুশাসনের অভাবও দায়ী। ভারত ৫৪টি অভিন্ন নদীর ওপর বাঁধ দেওয়ায় আমাদের নদীগুলোর পানি প্রবাহ কমে গেছে। এতে করে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে মরুকরণ শুরু হয়েছে। বেড়ে গেছে লবনাক্ততা। ফারাক্কা নদীতে বাঁধের কারণে ২০টি নদী হারিয়ে গেছে। এই নিয়ে কথা বলার মতো সরকার দেশে নেই। যে সরকার দেশ ও জনগণের স্বার্থ নিয়ে কথা বলতে পারবে তেমন একটি সরকার চাই। সেজন্য দেশে ও দলের মধ্যে গণতন্ত্র থাকতে হবে। দেশে সুশাসন ও ন্যায়নীতির সরকার থাকতে হবে। এ লক্ষ্যে রাজপথে আন্দোলন করতে হবে।’

বিএনপির বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের সভাপতিত্বে এবং বন ও পরিবেশ বিষয়ক সহ সম্পাদক কাজী রওনাকুল ইসলাম টিপুর সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন দলের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক সদস্য ইশরাক হোসেন, সেভ দ্য সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের সভাপতি ড. ফরিদুল ইসলাম প্রমুখ।