নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, প্রস্তাবিত বাজেটের চূড়ান্ত আকার (ব্যয়) ধরা হয়েছে ৬ লাখ ৩ হাজার কোটি টাকা; ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকা। ঘাটতির পরিমাণ জিডিপির ৬ দশমিক ২ শতাংশ, যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। অকল্পনীয় উদ্ভট রাজস্বের ওপর ভিত্তি করে এই ঘাটতি দেখানো হয়েছে, সেটা এর আশপাশেও যাবে না। অর্থাৎ সরকার প্রস্তাবিত বাজেটে যে ঘাটতি দেখাচ্ছে ঘাটতি হবে কমপক্ষে তার দ্বিগুণ।

শনিবার বাংলাদেশ শিশু কল্যাণ পরিষদ মিলনায়তনে প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাতে নাগরিক ঐক্য আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

মূল বক্তব্যে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, বাজেটে বলা হচ্ছে- জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ২ শতাংশ হবে। করোনার অভিঘাতের মধ্যে এই দাবি উদ্ভট।

তিনি বলেন, ১৯৭৪-৭৫ অর্থবছরে দেশের ইতিহাসের সর্বোচ্চ জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়, যা ছিল ৯ দশমিক ৫৯ শতাংশ। দেশের কে না জানে ১৯৭৪ সালের ভয়ংকর দুর্ভিক্ষের কথা। সেই দুর্ভিক্ষে সরকারি হিসাবেই ২৭ হাজার মানুষ অনাহারে মারা যায়। বেসরকারি হিসাবে এক লাখ থেকে সাড়ে চার লাখ মানুষ মারা যায়। বিরাট জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়ে থাকলেও অসংখ্য মানুষ না খেয়ে মারা যেতে পারে এটা সরকারের বোঝা উচিত।

মান্না আরও বলেন, বিশ্বব্যাংকে বাংলাদেশ ডাটাবেজে গেলে যে কেউ আরেকটি তথ্য দেখে নিতে পারেন, এই ভূখণ্ডের আরও দুটি উল্লেখযোগ্য জিডিপি প্রবৃদ্ধি ছিল ৯ দশমিক ৪৮ এবং ১০ দশমিক ৯৫ যথাক্রমে ১৯৬৮ ও ১৯৬৪ সালে, আইয়ুব খানের আমলে। ওই দুই বছর তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে এই প্রবৃদ্ধি হয়েছিল।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, করোনার কারণে এখনও পরিস্থিতি যেমন আছে, ভবিষ্যতে দেশে কর্মসংস্থান নষ্ট হওয়ার কারণে মানুষের আয়, অভ্যন্তরীণ ভোগ যতটা কমে যাবে সেটা মাথায় রাখলে আগামী অর্থবছরে ৩ লাখ ৮৯ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়াটা হাস্যকর। চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে ৩ লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকার লক্ষ্য নেমে এসেছে ৩ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকায়।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দলের সমন্বয়ক শহীদুল্লাহ কায়সার, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোমিনুল ইসলাম, জিন্নুর চৌধুরী দীপু, মোফাখখারুল ইসলাম নবাব, মাহবুব মুকুল, ডা. জাহেদ উর রহমান, সাকিব আনোয়ারসহ নাগরিক ঐক্যের কেন্দ্রীয় নেতারা।