- রাজনীতি
- অসুস্থতা নিয়ে বিএনপির রাজনীতি খালেদা জিয়ার প্রতি অসম্মান: হাছান মাহমুদ
অসুস্থতা নিয়ে বিএনপির রাজনীতি খালেদা জিয়ার প্রতি অসম্মান: হাছান মাহমুদ

রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা যখন ক্রমাবনতির দিকে, ঠিক সে সময়ে বিএনপির নানা রাজনৈতিক কর্মসূচি ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
বিএনপির উদ্দেশ তিনি বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে অসুস্থ রাজনীতি করবেন না। বেগম জিয়াকে অসুস্থ রেখে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের অপচেষ্টায় বেগম জিয়ার প্রতি অসম্মান জানানো হচ্ছে।’
বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে চট্টগ্রাম জার্নালিস্ট ফোরাম, ঢাকার (সিজেএফডি) নবনির্বাচিত পরিষদের প্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময় শেষে তিনি এসকথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘বেগম জিয়া একটু অসুস্থ হলেই অতীতের মতো বিদেশ পাঠানোর জিকির তোলার কারণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। বিএনপি বেগম জিয়াকে বিদেশের কথা বলে লন্ডনে পাঠাতে চান যেখানে তারেক জিয়া আছে। যাতে বেগম জিয়া যেন তারেক জিয়ার মতো দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি হয়ে সেখান থেকে রাজনীতি করতে পারেন। সে কারণেই তারা মেডিকেল বোর্ড গঠন করে বেগম জিয়ার আসলে কি হয়েছে, সেটি পরীক্ষার কথা বলছেন না। তারা ঠিকই জানেন, সরকার বেগম জিয়ার সঠিক চিকিৎসার জন্য সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নিতে বদ্ধপরিকর।’
বিএনপি নেতাদের ধারাবাহিক সমালোচনার জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, খালেদা জিয়া ইস্যুতে বিএনপির ভূমিকা ‘রহস্যজনক’।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আসলে বেগম জিয়ার ব্যাপারে বিএনপির ভূমিকাটাই রহস্যজনক। সরকারের ভূমিকা অত্যন্ত স্পষ্ট। বেগম জিয়া যাতে সর্বোচ্চ চিকিৎসা সুবিধা বাংলাদেশে পান সেটি নিশ্চিত করতে সরকার বদ্ধপরিকর। তারা যদি মনে করেন দেশের সমস্ত বড় বড় চিকিৎসকদের নিয়ে বেগম জিয়ার জন্য সর্বোচ্চ চিকিৎসা যাতে নিশ্চিত করা হয় সেটিও সরকার করতে চায়। কিন্তু তাদের ভূমিকা রহস্যজনক কারণ তারা বেগম জিয়া যখনই অসুস্থ হন, তখনই বিদেশ নিয়ে যেতে চান, এটিই রহস্যজনক।’
খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং তার বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে আটদিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। এসব কর্মসূচি বিএনপিসহ দলটির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হবে।
আগামী ২৫ নভেম্বর যুবদল ঢাকাসহ সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবে, ২৬ তারিখ বাদ জুম্মা খালেদা জিয়ার মুক্তি ও রোগমুক্তির জন্য দোয়া চাওয়া হবে এবং অন্যান্য সম্প্রদায়ের যারা আছেন তারা তাদের উপাসনালয়ে প্রার্থনা করবেন, ২৮ তারিখ স্বেচ্ছাসেবক দল ঢাকাসহ সারাদেশে বিক্ষোভ করবে, ৩০ তারিখে বিভাগীর সদরগুলোতে বিএনপির উদ্যোগে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া আগামী ১ ডিসেম্বর ছাত্রদল সারাদেশে সমাবেশ করবে, ২ তারিখে মুক্তিযোদ্ধা দল জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করবে, ৩ তারিখে কৃষক দল ঢাকাসহ সারাদেশে সমাবেশ করবে এবং ৪ তারিখে মহিলা দল মৌনমিছিল করবে।
বিএনপির এসব কর্মসূচি প্রসঙ্গে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘অবশ্য বিএনপি’র বিভিন্ন জনের মধ্যে এ নিয়ে সভা-সেমিনার করার একটা প্রতিযোগিতাও দেখে দিয়েছে কারণ তাদের পদ রক্ষা করতে হয়। বেগম জিয়া, তারেক জিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে হয় কে কত বেশি দৌঁড়াচ্ছেন, সেজন্য অনশন করছেন সেটি দেখাতে। তবে অনশনের সময় নয়াপল্টনে খাবারের দোকানে খুব ভালো বিক্রি হতে দেখা গেছে, এটিই বাস্তবতা।’
খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার দাবির প্রসঙ্গে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার জীবন সংকটাপন্ন, একথা কে বলছেন? মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব, রিজভী সাহেবসহ বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ এটি বলছেন। কোনো ডাক্তার বা এভারকেয়ার হাসপাতাল বলেনি যে বেগম জিয়ার জীবন সংকটাপন্ন। এখন ডাক্তারদের বাদ দিয়ে কি বিএনপির নেতারা চিকিৎসক হয়ে গেছেন। সরকার এখন বিএনপির নেতাদের প্রেসক্রিপশনে সিদ্ধান্ত নেবে কি না, সেটিও একটি প্রশ্ন।’
চট্টগ্রাম জার্নালিস্ট ফোরাম- সিজেএফডি’র নবনির্বাচিত সভাপতি মামুন আব্দুল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুর রহমান, সাবেক সভাপতি শাহেদ সিদ্দিকী, প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক শাহিন উল ইসলাম চৌধুরী, অনুপ খাস্তগীর, মেজবাহ উদ্দীন চৌধুরী, সাঈফ ইসলাম দিলাল, মুজিব মাসুদ, সায়েম টিপু, রিশাদ হুদা, মোমেনা আক্তার পপি আলোচনায় অংশ নেন।
মন্তব্য করুন