জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেছেন, রাজতন্ত্রের নতুন মডেল এখন বাংলাদেশে। একে চিরদিনের জন্য বিদায় করতে জাতীয় সরকার গঠন অনিবার্য হয়ে পড়েছে। বর্তমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে জাতীয় সরকার অপরিহার্য।

সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে জেএসডির উদ্যোগে জাতীয় সরকারের প্রস্তাবনা তুলে ধরে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় সরকার গঠন, রূপরেখা ও মেয়াদকাল ঐকমত্যের ভিত্তিতে নির্ধারিত হবে বলেও জানান তিনি।

আ স ম রব বলেন, জাতীয় সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের একটি নৈতিক ও মানবিক রাষ্ট্র বিনির্মাণ করা। তাই আমাদের সকল শক্তি ও সামর্থ্য দিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মুক্তিযুদ্ধের কাঙ্ক্ষিত রাষ্ট্র বিনির্মাণে এগিয়ে আসতে হবে।

জাতীয় সরকারের উদ্দেশে ছয় দফা তুলে ধরেন তিনি। এর মধ্যে রয়েছে- মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচারের ভিত্তিতে রাষ্ট্র পরিচালনার নীতি প্রণয়ন করা; সাংবিধানিক ব্যবস্থাকে পুনরুজ্জীবিত করা; আইনের শাসন ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা; রাজবন্দিদের মুক্তি দেওয়া এবং গায়েবি মামলা প্রত্যাহার করা; অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে একটি ‘স্বাধীন নির্বাচন কমিশন’ প্রতিষ্ঠা করা এবং নির্বাচনের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। এ সময় দেশের বিরাজমান বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে জাতীয় সরকারের ১৩ দফা কর্মসূচিও তুলে ধরা হয়।

অনুষ্ঠানে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. আবদুল লতিফ মাসুম বলেন, জাতীয় সরকার গণতন্ত্রের অনেক পুরোনো ধারণা। ব্রিটেনে প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়সহ তিন বার জাতীয় সরকার গঠিত হয়েছিল। চীনে ও ভুটানে জাতীয় সরকার হয়েছে।

ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, বর্তমান সরকার ও তাদের সংসদ বৈধ নয়। আজকে র্যা ব ও সংস্থাটির কর্মকর্তাদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের যে নিষেধাজ্ঞা, সেটা তাদের অন্যায়ের প্রতিফলন। তাই বর্তমান সংকট নিরসনে সবার মতামতের ভিত্তিতে কমপক্ষে দুই বছরের জন্য একটি জাতীয় সরকার হতে পারে।

জেএসডির কার্যকরী সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপনের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে গণফোরামের (একাংশ) সভাপতি মোস্তফা মহসিন মন্টু, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, জেএসডির কার্যকরী সভাপতি সিরাজ মিয়া, সাধারণ সম্পাদক ছানোয়ার হোসেন তালুকদার, কামালউদ্দিন পাটোয়ারী প্রমুখ বক্তব্য দেন।