নির্বাচনকেন্দ্রিক গভীর রাজনৈতিক সঙ্কট উত্তরণে রাষ্ট্রপতিকে খোলা চিঠি দিয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। 

এই চিঠিতে মতৈক্যের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন গঠনসহ নির্বাচনকেন্দ্রিক সঙ্কট উত্তরণে রাষ্ট্রপতিকে তার পদের নৈতিক ক্ষমতা ব্যবহার করে সরকারকে অবিলম্বে রাজনৈতিক উদ্যোগ গ্রহণের পরামর্শ প্রদানের আহ্বান জানিয়েছে জোটটি।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর পুরানা পল্টন মোড়ে বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমাবেশ থেকে এই খোলা চিঠি প্রকাশ করা হয়। পরে জোটের একটি প্রতিনিধি দল বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের কাছে রাষ্ট্রপতির উদ্দেশ্যে দেওয়া খোলা চিঠির কপি পৌঁছে দেন।

সমাবেশে খোলা চিঠি প্রকাশ ও পাঠ করে শোনান থেকে বাম জোটের সমন্বয়ক ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। 

চিঠিতে বলা হয়, ‘নির্বাচন কমিশন গঠনসহ নির্বাচনকেন্দ্রিক সঙ্কটটি রাজনৈতিক। গত দুটি জাতীয় নির্বাচনের মত আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনও ব্যর্থ হলে গোটা দেশ ও দেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ আরও বিপর্যস্ত হবে। অনিশ্চিত অন্ধকারে নিপতিত হবে।’

এতে বলা হয়, ‘সরকার ও সরকারি দল রাষ্ট্রপতির ওপর ভর দিয়ে বৈতরণী পার হতে চায়। কিন্তু তাতে সঙ্কটের কোনো সমাধান হবে না। বিদ্যমান ব্যবস্থায় আপাতত নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের নিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠিত হলেও নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ তদারকি সরকারের কোনো বিকল্প নেই।’

চিঠিতে দেশ ও জাতির এই গুরুত্বপূর্ণ ক্রান্তিকালে রাষ্ট্রের প্রধান অভিভাবক হিসাবে রাষ্ট্রপতিকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়ে আরও বলা হয়, সাংবিধানিক সীমাবদ্ধতা থাকলেও রাষ্ট্রপতি তার মর্যাদাপূর্ণ পদের নৈতিক ক্ষমতা ব্যবহার করে সরকারকে নির্বাচনকেন্দ্রিক রাজনৈতিক সঙ্কট উত্তরণে কার্যকর রাজনৈতিক উদ্যোগ গ্রহণের পরামর্শ দিতে পারেন; যাতে সরকার ক্রিয়াশীল রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে মতৈক্যের ভিত্তিতে সাংবিধানিক নির্দেশনা অনুযায়ী আইন প্রণয়ন করে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন, সরকারের পদত্যাগ এবং নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ তদারকি সরকার গঠনে প্রয়োজনীয় সমঝোতায় আসতে পারে। 

রাষ্ট্রপতিকে যথাসম্ভব দ্রুততার সঙ্গে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয় চিঠিতে।

সাইফুল হকের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সিপিবি'র প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুল্লাহ ক্বাফি রতন, বাসদের কেন্দ্রীয় নেতা রাজেকুজ্জামান রতন, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী জোটের সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের কেন্দ্রীয় নেতা নজরুল ইসলাম, বাসদের (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় নেতা মাসুদ খান, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতা আবদুল আলী, ওয়ার্কার্স পার্টির (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় নেতা বিধান দাস।

সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন জোটের কেন্দ্রীয় নেতা বজলুর রশীদ ফিরোজ, বহ্নিশিখা জামালী, ফখরুদ্দীন কবীর আতিক, শহীদুল ইসলাম সবুজ, আকবর খান, জলি তালুকদার প্রমুখ।

সমাবেশের পর বাম জোট নেতা আকবর খান, শহীদুল ইসলাম সবুজ, জুলফিকার আলী ও সাদেকুর রহমান শামীম বঙ্গভবনে যান। এ সময় রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের কাছে রাষ্ট্রপতির উদ্দেশ্যে দেওয়া খোলা চিঠির কপি পৌঁছে দেন।