নির্বাচন কমিশন গঠনে সার্চ কমিটিকে সরকারের পক্ষ থেকে যাদের নাম দেওয়া হবে তারাই নির্বাচন কমিশনার হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি। ‘নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিতে’ এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আজ যাদের সার্চ কমিটিতে নেওয়া হয়েছে, সকলেই আওয়ামী লীগের সমর্থক এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলে। তারা আজকে সার্চ কমিটির সদস্য। কী সার্চ কমিটি, মাশাল্লাহ! এই সরকার থাকবে, সার্চ কমিটি তাদের হবে। এই সার্চ কমিটিকে শেখ হাসিনা বা সরকারের পক্ষ থেকে যাদের নাম দেবে তারাই নির্বাচন কমিশনার হবে।’

বিএনপির কাছ থেকে পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশন গঠনে নাম প্রস্তাবনার আহ্বান থাকলেও খন্দকার মোশাররফ বলেন, এসব অর্থহীন।

তিনি বলেন, ‘এটাতে অংশগ্রহণ করা, এটাতে মাথা ঘামানোকে আমরা মনে করি, অর্থহীন। তাই এ ব্যাপারে আমরা কোনো গুরুত্ব দেই না। এই যে নাটক, এই নাটক হচ্ছে- এই সরকার আবার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য আরেকটি ডাকাতির নির্বাচন করার জন্য।’

সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমরা বলতে চাই, এনাফ ইজ এনাফ। অনেক হয়েছে। আর নয়। আজকে শুধু বাংলাদেশের মানুষ নয়, আন্তর্জাতিক বিশ্বও কিন্তু বলে দিয়েছে, এনাফ ইজ এনাফ। আর এটা চলবে না।’ 

সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনির হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘নিশ্চয় তারা সরকারের এমন কিছু গুপ্ত সংবাদ জেনেছিল যার জন্য তাদেরকে হত্যা করা হয়েছিল। দুঃখজনক হচ্ছে, আজ ১০ বছর চলে গেছে, সাগর-রুনির হত্যাকাণ্ডের যে তদন্ত রিপোর্ট, বিচার তো পরের কথা- তদন্ত রিপোর্ট এখন পর্যন্ত দেওয়া হচ্ছে না।’ 

‘এ নিয়ে তদন্ত কমিটি কোর্ট থেকে ৮৫ বার সময় চেয়েছে। কী পরিমান একটা স্বৈরাচারী এবং কী পরিমাণ একটা নির্যাতিত সরকার হলে, দুজন সাংবাদিকের হত্যাকাণ্ডের তদন্ত রিপোর্ট তারা ১০ বছরেও দাখিল করতে পারে না। এটা সঠিক পারে না যে তা নয়। করবে না। করলে এমন কিছু তথ্য প্রকাশিত হবে, যে তথ্য এই সরকারের জন্য সুখকর হবে না।’ যোগ করেন খন্দকার মোশাররফ।

সরকারকে উদ্দেশ্য করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘আপনারা তো ১০ বছর এই তথ্য দিচ্ছেন না। সাগর রুনি কি তথ্য দিয়েছিল? আজকে যে তথ্য আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে আপনার সব বেরিয়ে যাচ্ছে, এটার জন্য দায়ী কে? কিভাবে ঠোকাবেন? সাগর-রুনির সেই রহস্যকে ধামাপাচা দিয়ে কিন্তু এই সরকার পার পাচ্ছে না। দেশে-বিদেশে আজকে প্রতিনিয়ত এই সরকারের মন্ত্রীদের, এই সরকারের কর্তাব্যক্তিদের এবং এই সরকারের ব্যবসায়ীদের তথ্য ও কথোপকথনসহ সব কিন্তু বেরিয়ে যাচ্ছে।’  

বিএনপি গণতন্ত্র বুঝে না- প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিএনপি বলছে- গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য আমরা আন্দোলনে আছি। যদি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য আন্দোলনে থাকি তাহলে আমরা গণতন্ত্র বুঝি না, এই কথা বলা কতো অসার এবং হাস্যকর- এটা বলার আর অপেক্ষা রাখে না।’ 

এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদের সভাপতিত্বে এবং মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফার সঞ্চালনায় সভায় ইসলামী ঐক্যজোট চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আব্দুর রকিব, এনডিপির চেয়ারম্যান ক্বারী আবু তাহের, জাগপার সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমান, ডিএলের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন মনি,এনপিপির প্রেসডিয়াম সদস্য নবী চৌধুরী, মুখ্য মহাসচিব মো. ফরিদ উদ্দিন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।