ভোজ্যতেলের মূল্যবৃদ্ধি রোধে ব্যর্থতার দায়ে বাণিজ্যমন্ত্রীর অপসারণ দাবি করেছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। দলটির নেতারা বলেছেন, বাণিজ্যমন্ত্রী লুটেরা ব্যবসায়ীদের রক্ষক। এই ব্যর্থ বাণিজ্যমন্ত্রীকে এখনও অপসারণ না করে এবং মজুতদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে সরকার প্রমাণ করেছে তারা সিন্ডিকেট ও মজুতদারদের সরকার। তারাই এদের লুটপাটের সুযোগ করে দিচ্ছে।

বৃহস্পতিবার ভোজ্যতেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদসহ বিভিন্ন দাবিতে সিপিবি ঘোষিত বিক্ষোভ কর্মসূচির আগে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সামনে এক সমাবেশে নেতারা এসব কথা বলেন।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর পুরানা পল্টন মোড়ে সমাবেশ শেষে সিপিবির বিক্ষোভ মিছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দিকে যাত্রার সময় গুলিস্তান শহীদ নূর হোসেন চত্বরে পুলিশি বাধার মুখে পড়ে। মিছিলটি পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে বিক্ষোভ অব্যাহত রাখে এবং সমাবেশ করার মধ্য দিয়ে কর্মসূচি শেষ করে।

সিপিবির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলমের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন দলের সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাজ্জাদ জহির চন্দন, ডা. সাজেদুল হক রুবেল, কাজী রুহুল আমীন, জলি তালুকদার, লুনা নূর প্রমুখ।

সমাবেশে শাহ আলম বলেন, এই সরকার দুর্নীতিবাজ আমলা, লুটেরা রাজনীতিবিদ, সামাজিক দস্যু ও সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিত্ব করছে। তাদের পক্ষে জনগণের অধিকার সংরক্ষণ সম্ভব নয়। দেশে পাঁচ ভাগের রাজনীতি-অর্থনীতি ৯৫ ভাগকে শোষণ করছে। এই রাজনীতি উল্টে দিতে হবে। পুলিশি ব্যারিকেড দিয়ে ৯৫ ভাগের জনরোষ থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে না। গণবণ্টন, স্থায়ী রেশনিং ব্যবস্থা ও সরকারি উদ্যোগে বাজারব্যবস্থা গড়ে তোলা এবং সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান সিপিবি সভাপতি।

রুহিন হোসেন প্রিন্স সরকারের প্রতি বলেন, অনুনয়-বিনয় করে ব্যবসায়ীদের মন গলানো যাবে না। বিকল্প বাজারব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। জনগণের দুর্ভোগ দূর করতে টিসিবির গাড়ি সংখ্যা বাড়িয়ে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে অন্তত তিন কোটি পরিবারকে তেলসহ নিত্যপণ্য সরবরাহ করতে হবে। টিসিবির গাড়িতে বোতলের তেল ১১০ টাকা হলে খোলা তেল ৯০ টাকা লিটারে বিক্রি করতে হবে। সারাদেশে রেশনিং ব্যবস্থা ও ন্যায্যমূল্যের দোকান চালু করতে হবে।

নেতারা বলেন, এ দেশে গণঅভ্যুত্থান অনেকবার হয়েছে। জনগণ যে কোনো সময় এই অভ্যুত্থান ঘটাবে। চলমান দুঃশাসনের অবসান, ব্যবস্থা বদল এবং বাম গণতান্ত্রিক বিকল্প শক্তির সমাবেশ গড়ে তোলার সংগ্রামে দেশবাসীকে শরিক হওয়ার আহ্বান জানান তারা।