গুলি চালিয়ে, হামলা ও মামলা করে গণতান্ত্রিক আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন বিএনপি নেতারা। তারা বলছেন, সরকার আবার গায়েবি মামলায় বিএনপিকে দমাতে চায়। এভাবে নির্যাতন করে বিএনপিকে পরাজিত করা যাবে না। নারায়ণগঞ্জে বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর যে পুলিশ সদস্য গুলি করেছেন, তাকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। সরকার যদি তা না করে, বিএনপি বসে থাকবে না। ভোলায় মামলা করা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জেও মামলা হবে।

শনিবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির যৌথ উদ্যোগে দেশের বিভিন্ন স্থানে হামলার প্রতিবাদে আয়োজিত সমাবেশে দলের নেতারা এ কথা বলেন। বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী ব্যানারসহ খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশে অংশ নেন। এদিকে সমাবেশকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সতর্ক অবস্থায় ছিলেন।

এতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, গত ২২ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত বিএনপির তিনজন নেতাকে হত্যা করা হয়েছে। সারাদেশে হয়রানিমূলক মামলায় আসামির সংখ্যা ২০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। মামলা দিয়ে, হামলা করে আওয়ামী লীগ আবারও একই কায়দায় নির্বাচন করতে চায়। জনগণ তাদের এভাবে একা নির্বাচন করতে দেবে না। অন্যায়, অত্যাচার চালানো ও মানুষকে হত্যা করতে দেওয়া হবে না। হামলাকারীদের বিচার হবে এবং জনগণের কাঠগড়ায় তাদের দাঁড়াতে হবে।

আন্দোলন চলমান থাকবে জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, নারায়ণগঞ্জে নিহত যুবদল নেতা শাওন অত্যন্ত নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের যুবক। তার মা শোকে পাথর হয়ে গেছেন। আমরা গিয়ে যখন তার হাত ধরলাম, তিনি শুধু বললেন- বাবা যে বইলা গেল, আমি ফিরা আইসা ভাত খামু। ফিরা আইসা আর ভাত খাইল না! এর কি জবাব আছে?

সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, এই সরকারকে হঠাতে যা করা দরকার, আমরা তাই করব। আমাদের কর্মসূচি এবং কার্যক্রম আরও বাড়ানো হবে।

স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, পুলিশ বাহিনীর একটি অংশকে সরকার ব্যবহার করে জনগণের ওপর প্রতিনিয়ত গুলি চালিয়ে যাচ্ছে। পুরো পুলিশ বাহিনীর বিবেককে জাগ্রত করতে হবে- নিজ দেশের জনগণকে তাদের কেউ না কেউ হত্যা করছে। এটা অন্যায় ও অসাংবিধানিক।

ঢাকা দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে এবং উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক ও দক্ষিণের সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুর সঞ্চালনায় সমাবেশে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, জয়নুল আবদিন ফারুক, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুবদল নেতা সুলতান সালাউদ্দিন টুকুসহ অনেক নেতাকর্মী বক্তব্য দেন।

‘জনগণ রাস্তায় নামতে শুরু করেছে’:

সারাদেশে বিএনপির সমাবেশে হামলা ও গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়ে এক বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকারের ভয়াবহ দুঃশাসনের বিরুদ্ধে জনগণ ফুঁসে উঠেছে। তাদের ক্ষমতা থেকে সরাতে জনগণ ঐক্যবদ্ধভাবে রাস্তায় নামতে শুরু করেছে।