দেশে গণতন্ত্র ফেরাতে বিএনপির হাজারো নেতা-কর্মী প্রাণ দিতে প্রস্তুত রয়েছে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, এখনও সময় আছে- নিরাপদে ক্ষমতা ছেড়ে চলে যান, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা দেন, সংসদ বিলুপ্ত করুন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার এবং নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে করে নির্বাচন দেন। এখনও সময় আছে। তা না হলে, পালাবার পথ খুঁজে পাবেন না।

সোমবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) কার্যালয়ে শহীদ জেহাদ স্মৃতি পরিষদের উদ্যোগে স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী গণআন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত নাজির উদ্দিন জেহাদের ৩২তম মৃত্যুবার্ষিকীর আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ১৯৯০ সালের ১০ অক্টোবর পল্টনে পুলিশের গুলিতে নিহত হন ছাত্রদল কর্মী জেহাদ। দিবসটি উপলক্ষে সকালে তৎকালীন ডাকসুর ভিপি আমান উল্লাহ আমানের নেতৃত্বে ছাত্রঐক্যের নেতা-কর্মীসহ ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা দৈনিক বাংলা মোড়ে জেহাদ স্মৃতি চত্বরে পুস্পমাল্য অর্পণ করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, জনগণের উপর বিএনপির আস্থা আছে। এদেশের মানুষ কোনোদিন অন্যায়কে মেনে নেয়নি, গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে তারা কাউকে জয়ী হতে দেয়নি। আজ সেই দেশের মানুষরা জেগে উঠছে।

তরুণদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, শুধুমাত্র নিজের ভাগ্যের কথা চিন্তা না করে দেশের কথা চিন্তা করুন। দেশের কাথা ভেবে যে আন্দোলন শুরু হয়েছে। দেশকে মুক্ত করার যে আন্দোলন শুরু হয়েছে, সেই আন্দোলন-সংগ্রামে আপনারা সবাই যুক্ত হোন। জনগণকে সংগঠিত করুন। তিনি বলেন, ফয়সালা হবে রাজপথে, সেই রাজপথেই এই সরকারকে পরাজিত করা হবে।

বিদ্যুতের লোডশেডিং নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, এই লোডশেডিংয়ের জন্য সরকারই দায়ী। এখন প্রতিদিন কমপক্ষে ৩-৪ বার বিদ্যুৎ যায়, দিনে ছয় ঘন্টার বেশি লোডশেডিং থাকে। অথচ কত ঢাক-ঢোল পিটিয়ে আতশবাজি ফুটিয়ে বিদ্যুৎ উৎসব পালন করেছে সরকার। বর্তমান অবস্থা আরও ভয়াবহ। সরকারের চুরি, দুর্নীতি, কুইক রেন্টালসহ পাওয়ার প্ল্যান্টের নামে লুটপাট করে টাকা বিদেশে পাচার করেছে। ক্যাপাসিটি চার্জ ২৮ হাজার কোটি টাকা একবছরে দিতে হয়েছে এবং দিতেই হচ্ছে। এটা জনগণের উপর অতিরিক্ত বোঝা।

তিনি বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্দ্ধগতির কারণে শ্রমিকদের আজ ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। এখান থেকে পরিত্রাণ চায় সবাই। ইতোমধ্যে জনগণের সঙ্গে বিএনপির সম্পৃক্ততা বাড়ছে। এতদিন যারা বিএনপির নিন্দা করে বলতেন- বিএনপি নেই, বিএনপির কোনো চিহ্নই নেই, রাস্তায় বিএনপি নেই, মুরদ নেই বিএনপির, হাটুভাঙা। সেই দিন এখন আর নেই।

জেহাদ স্মৃতি পরিষদের সভাপতি নব্বইয়ের সর্বদলীয় ছাত্রঐক্যের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে ও খায়রুল কবির খোকনের পরিচালনায় আলোচনা সভায় সাবেক ছাত্রনেতা শামসুজ্জামান দুদু, আসাদুজ্জামান রিপন, হাবিবুর রহমান হাবিব, ফজলুল হক মিলন, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, নাজিম উদ্দিন আলম, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, শহিদুল ইসলাম বাবুল, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটর সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল, জেহাদের ভাই কে এম শরীফ উদ্দিন প্রমুখ বক্তব্য দেন।