বাংলাদেশের জনগণ রক্ত দিয়ে সংবিধান পরিবর্তন করবে দাবি করে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহবায়ক ও ডাকসুর সাবেক ভিপি আমান উল্লাহ আমান বলেছেন, সংবিধান জনগণের জন্য। দেশের মানুষ রক্ত দিয়ে সংবিধান পরিবর্তন করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার আনবে। সেই সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে। শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না।  

শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে এলডিপি আয়োজিত এক প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সরকারের পদত্যাগ, খালেদা জিয়ার মুক্তি ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে এই প্রতিবাদ সভা আয়োজন করা হয়।

বিচারপতি খায়রুল হক আইন কমিশনের কয়বার চেয়ারম্যান হয়েছেন প্রশ্ন করে বিএনপির এই নেতা বলেন, তাকে কেন বার বার চুক্তিভিত্তিক রাখছেন। কারণ উনি যেটা বলেছিলেন সেটাই শেখ হাসিনা করেছেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রথা বাতিল করেছেন। আর ওবায়দুল কাদের সাহেব গতকাল বলেছেন সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। ৯০ সালে মনে নেই। আন্দোলনে সংবিধান পরিবর্তন হয়েছিল। কি মনে আছে? আপনারা ভোট চুরি করে এমপি নির্বাচন করে সংসদে যে সংবিধান তৈরি করেছেন, সেই সংবিধান বাংলাদেশে চলবে না। বাংলাদেশের মানুষ রক্ত দিয়ে সেই সংবিধান পরিবর্তন করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার আনবে। এর বাইরে কোনো কথা নেই।

আমান বলেন, সংবিধান জনগণের জন্য, সংবিধান জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য। সংবিধান জনগণের মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য, জনগণের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য। সেই সংবিধানই বাংলাদেশে হবে।

তিনি বলেন, খালেদা জিয়া সম্পর্কে শেখ হাসিনা যে কথা বলেছেন তাতে মনে হচ্ছে শেখ হাসিনার ভ্যানিটি ব্যাগের মধ্যে আইন। সেই আইন উনি নিজেই তৈরি করেন, নিজেই প্রয়োগ করেন। খালেদা জিয়াকে দয়া করে মুক্ত করেছেন। আবার বেশি বাড়াবাড়ি করলে ঢুকিয়ে দেবেন। বেশি বাড়াবাড়ি কি? শেখ হাসিনা আপনি নির্বাচন করবেন আর আমরা সে ব্যাপারে কথা বলতে গেলে বাড়াবাড়ি? সেটা যদি বাড়াবাড়ি হয়, এর চেয়েও বেশি বাড়াবাড়ি হবে হাসিনার পতন ঘটানোর জন্য।

আমান উল্লাহ বলেন, খালেদা জিয়াকে যে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়েছে এই মামলায় প্রতিটি মানুষ জামিন পায়, শুধু খালেদা জিয়া জামিন পায় না। উনি (শেখ হাসিনা) নিজের হাতে কিছু লোকজন নিয়োগ করে তাদের দিয়ে বিচার করাচ্ছেন। 

ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনাকে বলে দিচ্ছি। আপনাকে, আপনার নেত্রীকে এই সংবিধান পরিবর্তন করতে হবে। সেই সংবিধান পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে। হাসিনা সরকারের অধীনে নয়। জেলে পাঠাবেন। জেলে না, আপনারা পালানোর পথ পাবেন না। কোথায় যাবেন সেটা জনগণ নির্ধারণ করবে। দলীয় নেতাকর্মী, গুণ্ডাপাণ্ডা কাউকে নামিয়ে লাভ হবে না। জনগণ সমুচিত জবাব দেবে।

ওবায়দুল কাদের অসত্য কথা বলছেন দাবি করে সাবেক এই ছাত্রনেতা বলেন, তিনি বলেছেন বিএনপির সমাবেশে বাধা দেওয়া হচ্ছে না। অথচ দেশের মানুষ সবাই দেখছে কি করা হচ্ছে। আজকে বরিশালে সবকিছু বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বরিশাল আজকে অবরুদ্ধ। বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন, সেলিনা সুলতানা নিশিতাসহ অনেক নেতার গাড়িতে সরকারি দলের নেতাকর্মীরা হামলা করে প্রায় ২৫টি গাড়ি ভাঙচুর করেছে।

এলডিপির সভাপতি আবদুল করিম আব্বাসীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন দলটির সিনিয়র সহসভাপতি আবদুল গনি, সহসভাপতি সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম রওনক, মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, অতিরিক্ত মহাসচিব তমিজ উদ্দিন টিটু, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, জাগপার একাংশের সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমান, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা, ডেমোক্রেটিক লীগের মহাসচিব সাইফুদ্দিন মনি, কল্যাণ পার্টির অতিরিক্ত মহাসচিব নুরুল কবির পিন্টু প্রমুখ।