পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, দরিদ্রতা সমস্যার সমাধান বোধ হয় হবে না। এটা কোনো না কোনো মাত্রায় থেকেই যাবে। অতি ধনী দেশগুলোতেও দরিদ্র মানুষ রয়েছে। সমস্যাটা হলো সংখ্যা নিয়ে। আমাদের সংখ্যা একটু বেশি, তাদের কম। তবে আমাদের জন্য কষ্টের বিষয় হলো, একজন ব্যক্তি তার নিজের ইচ্ছায় দরিদ্র নয়, বরং যেসব সামাজিক অন্যায় আমরা সংসদে নানা আইনের মাধ্যমে স্বীকৃতি দিয়েছি, সে আইনগুলো দরিদ্রদের দরিদ্র থাকার সুযোগ করে দেয়। দরিদ্রতা আমরাই সৃষ্টি করেছি।

বুধবার জাতীয় সংসদের পার্লামেন্ট মেম্বারস ক্লাবের সভাকক্ষে 'নগরের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন ও মৌলিক মানবাধিকার নিশ্চিতকরণ :বৈষম্য ও দরিদ্রতা নিরসনে আইনপ্রণেতাদের ভূমিকা' শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সর্বদলীয় সংসদীয় গ্রুপ (এপিপিজি) এ আয়োজন করে।

এম এ মান্নান বলেন, ১৯৭১-৭২ সালে দেশের প্রায় ৮০ ভাগ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করত। আমরা তা ২২ ভাগে নামিয়ে এনেছি। তখনকার দরিদ্র মানুষের কষ্ট এবং এখনকার দরিদ্র মানুষের কষ্টের মধ্যে তারতম্য রয়েছে। তখন দরিদ্র মানুষ টিউবওয়েলের পানিও পেত না, পরিস্কার টয়লেটও ছিল না তাদের। এখন দরিদ্ররা অন্তত আশপাশের টিউবওয়েলের পানি খেতে পারে। সার্বিকভাবে আগের এবং বর্তমান অবস্থার মধ্যে তারতম্য থাকলেও তাদের ব্যথা ঠিকই আছে। তথাকথিত ধনীরা নিজেদের স্বার্থে দরিদ্র মানুষকে বেড়া দিয়ে আড়াল করে রাখে। দরিদ্র মানুষদের কথাগুলো বেশি করে বলতে হবে।

এপিপিজির কো-চেয়ার গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকারের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন- সংসদ সদস্য নুরন্নবী চৌধুরী, আহমেদ ফিরোজ কবির, রুমানা আলী, অপরাজিতা হক, ফেরদৌসী ইসলাম, সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আবু সালেহ মোস্তফা কামাল, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) মো. হামিদ খান, নারী মৈত্রীর নির্বাহী পরিচালক শাহীন আক্তার ডলি, কোয়ালিশন ফর আরবান পুওরের (কাপ) নির্বাহী পরিচালক খন্দকার রেবেকা সান-ইয়াত, সাজিদা ফাউন্ডেশনের ডেপুটি এপিকিউটিভ ডিরেক্টর মো. ফজলুল হক, সোশ্যাল ইকোনমিক ইনহ্যান্সমেন্ট প্রোগ্রামের (সিপ) ডেপুটি এপিকিউটিভ ডিরেক্টর তহমিনা জেসমিন মিতা প্রমুখ। অনুষ্ঠানে একাধিক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্স বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. রবিউল হক, উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আসিফ এম শাহান এবং ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের রিসার্চ ফেলো ডেভোরা। ধন্যবাদ জানান কনসার্ন ওয়ার্ল্ডওয়াইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর মণীষ কুমার আগারওয়াল।