জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই। অনিয়মের বিরুদ্ধে কথা বলেই যাব।

রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) হাইকোর্টের আদেশে দায়িত্ব পালনে নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর জি এম কাদের ঢাকা মহানগর উত্তর জাপার সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন। সেখানে তিনি এসব কথা বলেন। 

মহানগর উত্তরের সভাপতি শফিকুর ইসলাম সেন্টুর সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহিদুর রহমান টেপা, মীর আবদুস সবুর আসুদ, রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া প্রমুখ।

জাপা চেয়ারম্যান বলেন, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হলেই সমাজে জবাবদিহিতা নিশ্চিত হয়। এতে গণতন্ত্র সফল হয়। জনগণ রাষ্ট্রের মালিক। তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে সরকার দেশ শাসন করে। জনগণ চাইলে নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিনিধি বদল করতে পারে।

জি এম কাদের বলেন, কথা বলা জন্মগত অধিকার। গণমানুষের পক্ষে কথা বলব। এটা শুধু অধিকারই নয়, আমার কর্তব্যও। ভুল-ত্রুটি ধরিয়ে দিলে সরকারের উপকার হয়। সমালোচনার অধিকার নিশ্চিত হলে মানুষের মঙ্গল হয়। 

তিনি বলেন, ভালো কাজের মূল্য দিতে হয়। মূল্য চোকাতে নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকতে হবে।

উল্লেখ্য, রোববার দলীয় দায়িত্ব পালনে নিম্ন আদালতের নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করেন বিচারপতি আব্দুল হাফিজের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ। এর আগে জাপা থেকে বহিষ্কার সাবেক সংসদ সদস্য জিয়াউল হক মৃধার মামলায় গত ৩১ আগস্ট ঢাকার যুগ্ম জেলা জজ আদালত দলীয় দায়িত্ব পালনে জি এম কাদেরের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেন। হাইকোর্টে তা ৩০ নভেম্বর স্থগিত হলেও আপিল বিভাগ ফের নিম্ন আদালতে পাঠান নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি। গত ১৯ জানুয়ারি নিম্ন আদালত নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখেন। ওই আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করেন জি এম কাদের। 

তাঁর আইনজীবী শেখ মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম আদালতে শুনানি করেন। তিনি বলেন, রোববার রুল জারিসহ নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। এর ফলে দায়িত্ব পালনে আর কোনো বাধা নেই জি এম কাদেরের।

নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ার আগে বছরখানেক ধরেই সরকারের সমলোচনায় মুখর ছিলেন জি এম কাদের। নির্বাচন, অর্থনীতিসহ সব ইস্যুতে ক্ষমতাসীন দলের কড়া সমালোচনা করেন তিনি। 

গত আগস্টে নেতৃত্ব নিয়ে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদের সঙ্গে বিরোধে জড়ান জি এম কাদের। এরপর তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয়। নানা নাটকীয়তার পর দেবর-ভাবির মধ্যে সমঝোতা হয়। গত ৯ জানুয়ারি যৌথ বিবৃতিতে তাঁরা জাপাকে ঐক্যবদ্ধ করার ঘোষণা দেন। আগেরবার হাইকোর্টের স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে গিয়েছিলেন জিয়াউল হক মৃধা। এবার আপিল করবেন কিনা-এ প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায়নি।