ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সরকারকে দেশের মানুষ আর দেখতে চায় না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান।

শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। 'বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের অনিবার্যতা' শীর্ষক এ আলোচনা সভার আয়োজন করে 'অন্তরে মম শহীদ জিয়া' নামের একটি সংগঠন।

ড. মঈন খান বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারকে একদিন না একদিন বিদায় নিতে হবে। এই সরকারকে এই দেশের মানুষ আর দেখতে চায় না। আমরা শান্তিপূর্ণ রাজনীতিতে বিশ্বাসী। আমরা লগি-বৈঠার রাজনীতি করি না। অনেকেই অভিযোগ করে বিএনপি কিছু করতে পারে না। অভিযোগ করুক আর যাই করুক- আমরা হিংসাত্মক রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। আমরা নিয়মতান্ত্রিক, গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে বিশ্বাসী। আমরা নিয়মতান্ত্রিক ক্ষমতা পরিবর্তনে বিশ্বাসী।

সরকারের মাথা খারাপ হয়ে গেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, তারা আবোল-তাবোল কথা বলছে। আজ একজন বলে খালেদা জিয়া রাজনীতি করতে পারবেন, কাল আরেকজন বলে করতে পারবেন না। পরশু একজন বলে রাজনীতি করতে পারবেন, তারপরের দিন আরেকজন বলে করতে পারবেন না।

মঈন খান বলেন, 'আওয়ামী লীগ উপলব্ধি করেছে, দেশের মানুষ খালেদা জিয়াকে ভালোবাসে। হুমকি-ধমকি দিয়ে, মানুষ হত্যা করে, মানুষ গুম করে ক্ষমতায় থাকা যেতে পারে, কিন্তু দেশের মানুষের ভালোবাসা পাওয়া যায় না। তারা ১৪-১৫ বছর ক্ষমতায় আছে, আরো কতদিন ক্ষমতায় থাকবে তা জানি না, কিন্তু একটি কথা আমি বলতে চাই- পৃথিবীর ইতিহাস আপনারা অবলোকন করুন। কোনো স্বৈরাচার সরকার চিরদিন ক্ষমতায় থাকতে পারে না।'

তত্ত্বাবধায়ক সরকার আওয়ামী লীগ বাতিল করেছে উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ১৯৯৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা আওয়ামী লীগ দাবি করেছিল। সঙ্গে ছিল জামায়াতে ইসলামী। যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ১৯৯৬ সালে হালাল ছিল, আজ তা কেন হারাম হয়ে গেল? 

তিনি বলেন, জনগণের দাবির মুখে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন খালেদা জিয়া। খালেদা জিয়া জনগণের নেত্রী। তিনি পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসেন নাই। তিনি ক্ষমতায় এসেছিলেন সামনে দরজা দিয়ে। আট বছর রাজপথে রাজনীতি করে এসেছিলেন।

সংবিধানের জন্য মানুষ নয়, মানুষের জন্য সংবিধান- এমন মন্তব্য করে মঈন খান বলেন, মানুষ যেভাবে চায় সেভাবে সংবিধান লিখিত হবে। মানুষের প্রয়োজনে স্বাধীনতার পর থেকে বিগত ৫০ বছরে বাংলাদেশের সংবিধান বারবার লিখিত হয়েছে, পুনঃলিখিত হয়েছে এবং তা হতে থাকবে। মানুষের প্রয়োজনে যেভাবে সংবিধান তৈরি করতে হয়, ঠিক সেভাবে করতে হবে।

আয়োজক সংগঠনের উপদেষ্টা ঢালি আমিনুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান, নির্বাহী কমিটির সদস্য শাম্মি আক্তার, বিলকিস জাহান শিরিন।