সরকারের ব্যর্থতায় রাজধানী বিস্ফোরণের নগরীতে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সাম্প্রতিক সময়ে বিস্ফোরণের প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, এই সরকারের ব্যর্থতার কারণে ঢাকা মহানগরী একটি বিস্ফোরণের নগরীতে পরিণত হয়েছে। বিপদজনক নগরীতে পরিণত হয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে শুধু বিস্ফোরণ হচ্ছে। এটা আমাদের দুর্ভাগ্য।

বুধবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত এক র‌্যালির পূর্বে বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী মহিলা দল এই র‌্যালির আয়োজন করে।

ফখরুল বলেন, যে ভবনে বিস্ফোরণ হচ্ছে সেই ভবনে নির্মাণ কাজ, রক্ষণাবেক্ষণ তা দেখাশোনা করা হয় না। গ্যাস জমে থেকে সাইন্সল্যাবের বিস্ফোরণে তিনজন লোক মারা গেলেন। গতকাল ভয়াবহ বিস্ফোরণ হয়েছে। একটি বাণিজ্যিক ভবনে বিস্ফোরণের ফলে ১৮ জন মানুষ মারা গিয়েছেন, যাদের মধ্যে দু'জন মহিলা রয়েছেন। এর আগে চট্টগ্রামে বিস্ফোরণ হলো, সেখানে সাতজন লোক মারা গেলেন। কেন হচ্ছে এসব?

তিনি বলেন, সরকারের যে ডিপার্টমেন্টগুলো রয়েছে, যাদের এগুলো দেখার কথা, নজরদারিতে রাখার কথা, তারা কোনো কাজ করে না। সবাই দুর্নীতির সাথে জড়িত। এ কারণেই ভবনগুলোতে কোনো নিরাপত্তা নেই। বিস্ফোরণ প্রতিরোধ করার, আগুনকে প্রতিরোধ করার কোনো ব্যবস্থা না থাকার কারণে আজকে এভাবে মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে। ঢাকা মহানগর সবচেয়ে বিপদজনক নগরীতে পরিণত হয়েছে। 

বিএনপি মহাসচিব বলেন, শুধু তাই নয়, ঢাকা মহানগরের যে বাতাস সেটাকে বলা হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে দূষিত বাতাস। মজার ব্যাপার হচ্ছে, ইংল্যান্ডে প্রকাশিত ইকোনোমিক্স পত্রিকা বলছে, দূষিত মহানগরকে ছাড়িয়ে দুর্নীতির বাতাস বাংলাদেশকে পুরোপুরি গ্রাস করে ফেলছে।

ফখরুল বলেন, আজ আওয়ামী লীগের আমলে নারীরা যেভাবে নির্যাতিত হচ্ছেন, অতীতে কখনও এরকম নির্যাতন হয়েছে বলে আমার জানা নেই।

মহিলা দলের নেত্রীদের উদ্দেশে ফখরুল বলেন, আপনাদের আরও বেশি সোচ্চার হতে হবে। আরও বেশি সংগঠিত হতে হবে। দেশের মানুষ, বিশেষ করে মহিলাদের সংগঠিত করতে হবে। 

ফখরুল বলেন, দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী হচ্ছেন বেগম খালেদা জিয়া। সম্ভবত নারীদের মধ্যেও তিনি সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী। আমি যেখানে যাচ্ছি বয়স্ক মহিলারা জিজ্ঞেস করেন, বেগম জিয়া কেমন আছেন। তিনি তাদের বুকের মধ্যেই রয়েছেন। আজ তারা বেগম জিয়ার মুক্তির জন্য বড় আন্দোলন করে তুলবেন। চলমান আন্দোলনের তারা আরও বেশি করে শরিক হবেন।

মহিলা দলের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আপনাদের আরও বেশি সংগঠক হতে হবে এবং আন্দোলনের মাধ্যমে এই জগদ্দল পাথরকে সরিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে, খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। এটাই হচ্ছে আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ। তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মেয়েদের অত্যাচার করা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এগুলো সরকারি দলের লোকেরাই করছে।

তিনি বলেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় যখন শিক্ষার্থীর ওপর নির্যাতন করা হয়, তখন নারীদের একটি সংগঠনও প্রতিবাদের জন্য এগিয়ে আসেনি। দুঃখ হয়। আপনাদের বেরিয়ে আসতে হবে, প্রতিবাদ করতে হবে। প্রতিবাদ না করলে কিভাবে আমরা আমাদের অধিকার আদায় করব। আর কিভাবে আমাদের ন্যায্য দাবি আদায় করব। আপনারা নিজেদের অধিকারের জন্য রাস্তা নামেন এবং আপনারা সফল হন এই প্রত্যাশা করছি। 

এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক হেলেন জেরিন খান, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক নায়াবা ইউসুফ, দক্ষিণের আহ্বায়ক রুমা আক্তার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।