ইউক্রেনের পার্শ্ববর্তী এলাকায় ড্রোন দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বড় ধরনের গুপ্তচরবৃত্তি চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে রাশিয়া। এটিকে উস্কানি হিসেবে দেখছে দেশটি। এখনই এর প্রতিক্রিয়া না দেখালেও সমুচিত জবাব দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে দেশটি। রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র যতটা গুপ্তচরবৃত্তি করবে, ভবিষ্যতে সেই পরিমাণ গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ অভিযানই চালাবে মস্কো।

 গত মঙ্গলবার কৃষ্ণসাগরে একটি মার্কিন এমকিউ-৯ রিপার ড্রোন বিধ্বস্ত করার পর যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং সামরিকপ্রধানরা বুধবার বিরল টেলিফোন কথোপকথন করেছেন। সেখানেই রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনকে এসব কথা বলেন।

ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে তলানিতে রয়েছে ওয়াশিংটনের সঙ্গে মস্কোর সম্পর্ক। শোইগুকে উদ্ধৃত করে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ক্রিমিয়ার উপকূল রেখায় আমেরিকার কৌশলগত প্রাণঘাতী ড্রোন ওড়ানো উস্কানিমূলক ছিল। এই তৎপরতা কৃষ্ণসাগর অঞ্চলে উত্তেজনা সৃষ্টি করবে। তবে এ নিয়ে সংঘাত বাড়াতে চাচ্ছে না দু’পক্ষই।

ক্রমবর্ধমান ঝুঁকি হ্রাস করা প্রয়োজন বলে মনে করেন রুশ ও মার্কিন কর্মকর্তারা। অবশ্য, রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ এর আগে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, কৃষ্ণসাগরের কিছু অঞ্চলে বিমান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল। এ ধরনের ঘটনা দুই বৃহৎ পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যে সংঘর্ষের উদ্রেক ঘটালে বিপজ্জনক ঝুঁকি বাড়াবে।

এদিকে পেন্টাগনে সংবাদ সম্মেলনে অস্টিন বলেন, এই ঘটনার পর দু’পক্ষই আলোচনার দ্বার খোলা রাখতে সক্ষম হয়েছে। এটি ইতিবাচক। তিনি মনে করেন, এ ধরনের আলাপ-আলোচনার দ্বার উন্মুক্ত রাখলে ভবিষ্যতে যে কোনো ভুল বোঝাবুঝি রোধ সহজ হবে।

এদিকে, গভীর সাগরে বিধ্বস্ত ড্রোনটি উদ্ধার করা কঠিন হবে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ওই এলাকায় এখন রুশ জাহাজ টহল দিচ্ছে বলেও জানিয়েছে দেশটি।

মার্কিন জেনারেল মার্ক মিলি বলেন, ড্রোনটি কৃষ্ণসাগরের অন্তত ১ হাজার ৫০০ মিটার গভীরে ডুবে আছে। অপরদিকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে বসন্তের পাল্টা আক্রমণের জন্য দ্রুতই ইউক্রেনকে প্রয়োজনীয় অস্ত্র দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কিয়েভকে সমর্থনকারী ৫০টিরও বেশি দেশের প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা গত বুধবার বৈঠক করেছেন।

ভার্চুয়াল ওই বৈঠকে অস্টিন বলেন, বসন্তে এবং পরেও ইউক্রেনের চাহিদা মেটাতে এগিয়ে আসবে মিত্ররা। ইউক্রেনে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে চারটি মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান পাঠাবে পোল্যান্ড। দেশটির প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেজ ডুদা বৃহস্পতিবার এই ঘোষণা দিয়ে বলেন, অন্য দেশগুলো কিয়েভকে যুদ্ধবিমান দিতে দ্বিধা করছে। রুশসমর্থিত দোনেৎস্ক অঞ্চলের নেতা বলেছেন, ইউক্রেনের সেনাদের বাখমুত ছেড়ে যাওয়ার কোনো লক্ষণই তিনি দেখছেন না।

পূর্ব ইউক্রেনের বনে চীনের তৈরি একটি অস্ত্রযুক্ত ড্রোন ভূপাতিত করেছে ইউক্রেনীয় সেনারা। মুগিন-৫ নামে ড্রোনটি চীনা প্রতিষ্ঠান মুগিন লিমিটেডের তৈরি বাণিজ্যিক মানববিহীন আকাশযান।