সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে বিদ্যালয় কমিটির সভাপতি নির্বাচন নিয়ে দ্বন্দ্বে আওয়ামী লীগের ১০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। ছাত্রলীগ নেতা রবিন হাসান রকির নেতৃত্বে এ হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন আহতরা। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ওই নেতা।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।

হামলায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ আলী আকন্দ, তাঁর স্ত্রী রাজাপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা সোনিয়া সবুর আকন্দ, আব্দুল মজিদ, হোসেন আলী, একাব্বর আলী, মজনু আকন্দ, আব্দুল খালেক, আশরাফুল ইসলামসহ ১০ জন আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ ও র‍্যাব ঘটনাস্থলে গিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে অবরুদ্ধ মোহাম্মদ আলী আকন্দ ও সোনিয়া সবুরকে উদ্ধার করে। পরে উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম সাজেদুল, পৌর মেয়র সাজ্জাদুল হক রেজা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আনিছুর রহমান ঘটনাস্থলে যান।

আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ আলীর সমর্থকরা জানান, গতকাল বিদ্যালয়ে সভাপতি নির্বাচনের প্রক্রিয়া চলছিল। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি রবিন হাসান রকি এবং সাবেক শিক্ষক শাহজাহান আলী মাস্টার। সভায় আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন মোহাম্মদ আলী আকন্দ, সনিয়া সবুরসহ তাঁদের কয়েকজন সমর্থক। নির্বাচন চলাকালে রকি পরাজিত হয়েছেন– এমন সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে  তাঁর সমর্থকরা উত্তেজিত হয়। এ সময় উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবে মিল্লাত ও পৌর ছাত্রলীগ সভাপতি এম. আকতার হামিদের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ নেতাকর্মী তাঁদের ওপর চড়াও হয়। তারা মোহাম্মদ আলী, সোনিয়া সবুরসহ বাকিদের মারধর করে। দৌড়ে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে আশ্রয় নিলে সেখানেও তাঁদের মারধর করা হয়। অফিস কার্যালয়ে ভাংচুরের ঘটনাও ঘটে।

রাজাপুর ইউপি চেয়ারম্যান সোনিয়া সবুর আকন্দ বলেন, ‘সভাপতি নির্বাচনে জয়-পরাজয় নির্ধারণের আগেই এমপির সমর্থক উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি রবিন হাসান রকি, সাধারণ সম্পাদক হাবিবে মিল্লাত ও পৌর ছাত্রলীগ সভাপতি এম. আকতার হামিদের নেতৃত্বে হামলার ঘটনা ঘটে। তারা আমাদের মারধর করার পর অবরুদ্ধ করে রাখে। আমাদের উদ্ধার করতে গিয়ে ৮-১০ নেতাকর্মী আহত হন।

উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি রবিন হাসান রকি বলেন, ‘নির্বাচনে হেরে তাঁরা নিজেরাই ঘটনা ঘটিয়ে উল্টো আমাদের ওপর দায় চাপাচ্ছেন। এখানে এমপির কোন যোগসূত্রতা নেই।

বেলকুচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসলাম উদ্দিন জানান, ‘খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।’

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশানুর বিশ্বাস বলেন, ‘এমপির ইন্ধনে তাঁর সমর্থকরা বারবার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটাচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনেও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা কামালকে ছাত্রলীগ মারধর করেছে। তাদের ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের বিষয়টি শিগগিরই জেলা ও কেন্দ্রে লিখিতভাবে জানানো হবে।’

জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আহসান হাবিব খোকা বলেন, ‘সংঘর্ষের বিষয়ে অবগত নই।’ একই কথা বলেন জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট কে.এম. হোসেন আলী। তাঁর ভাষ্য, উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে বিবদমান দ্বন্দ্ব নিরসনে দ্রুত সাংগঠনিকভাবে আলোচনা করা হবে।’

এমপি আব্দুল মোমিন মণ্ডল বলেন, কিছু ঘটলেই সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাস ও তাঁর স্ত্রী আশানুর বিশ্বাসসহ পরিবারের লোকজন আমার দিকেই আঙুল তোলেন। বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের খতিয়ে দেখা উচিত।