- রাজনীতি
- প্রলয় গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে ঢাবি উপাচার্যের কাছে শিক্ষার্থীদের লিখিত অভিযোগ
প্রলয় গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে ঢাবি উপাচার্যের কাছে শিক্ষার্থীদের লিখিত অভিযোগ

প্রলয় গ্যাংয়ের নির্মম ও নৃশংস হামলার প্রতিবাদে ঢাবি শিক্ষার্থীদের মানব্বন্ধন। ছবি-সমকাল
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী জোবায়ের ইবনে হুমায়ুনের ওপর প্রলয় গ্যাংয়ের নির্মম ও নৃশংস হামলার প্রতিবাদে এবং গ্যাং সংস্কৃতিমুক্ত ক্যাম্পাসের দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন জোবায়েরের সহপাঠী ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এ মানববন্ধন হয়।
মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা অনতিবিলম্বে হামলায় জড়িত সকলকে ক্যাম্পাস থেকে স্থায়ী বহিষ্কার ও আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
গত শনিবার রাতে কবি জসীমউদ্দিন হলের সামনে প্রকাশ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের একদল শিক্ষার্থীদের পরিচালিত এই গ্যাংয়ের হামলার শিকার হন জোবায়ের। হামলায় গুরুতর আহত হয়ে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। এ বিষয়ে সমকালে 'প্রলয় গ্যাংয়ে তটস্থ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস' শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
মানববন্ধনে অংশ নিয়ে বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান খন্দকার ফারজানা রহমান বলেন, সংঘবদ্ধভাবে একজন শিক্ষার্থীর ওপর হামলা করা খুবই ভয়ানক বিষয়। এটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস-ঐতিহ্যের সঙ্গে যায় না। এর আগে এ ধরনের অপরাধের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অনেক শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদের শাস্তি দিয়েছে। এ ঘটনায় ইতোমধ্যে তদন্ত কমিটি হয়েছে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ওপর আস্থা রাখি। আশা করছি সঠিক তদন্তের মাধ্যমে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং আগামীতে এ ধরনের গ্যাং কালচার থেকে মুক্ত থাকবে আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
এসময় বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নাজমুস সাকিব হামলায় জড়িতদের শাস্তি দাবি করেন।
অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী তানভীর আহমেদ সিয়াম বলেন, ‘জোবায়েরের ওপরে এ হামলা প্রত্যেকটি সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে এসেছি এবং আমরা মনে-প্রাণে বিশ্বাস করি এই গ্যাং কালচার বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিতে থাকতে পারে না। তাদের নির্যাতন, নিপীড়ন সাধারণ শিক্ষার্থীরা আর সইতে পারবে না। সাধারণ শিক্ষার্থীরা এর বিরুদ্ধে শাস্তি চায়, মুক্তি চায়।’
একই ব্যাচের জান্নাতী ঈশা বলেন, ‘শুধু প্রলয় গ্যাং না, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ধরনের যত গ্যাং আছে সবকিছুর নির্মূল চাই। আমরা একটি নিরাপদ ক্যাম্পাস চাই।’
এর আগে গত রোববার জোবায়ের গ্যাংয়ের ১৯ জনের পরিচয়ে এবং অজ্ঞাত ৬ থেকে ৭ জনকে দায়ী করে শাহবাগ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযুক্তরা হলেন, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল ও শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়নের তবারক মিয়া, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল ও ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস বিভাগের ফয়সাল আহমেদ সাকিব ও ফারহান লাবিব, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল ও দর্শন বিভাগের অর্ণব খান, মার্কেটিং বিভাগের মোহাম্মদ শোভন ও বিপ্লব হাসান জয়, কবি জসীমউদ্দিন হল ও নৃ বিজ্ঞান বিভাগের নাইমুর রহমান দুর্জয়, কবি জসীমউদ্দিন হল ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাদ, টুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজেমেন্টের সিফরাত সাহিল, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের সমাজকল্যাণ বিভাগের হেদায়েতুন নুর ও গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ছাত্র মাহিন মনোয়ার ও তথ্য বিজ্ঞান ও গ্রন্থগার ব্যবস্থাপনা বিভাগের সাদমান তাওহিদ বর্ষণ, একই হলের আব্দুল্লাহ আল আরিফ; মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল ও ফার্সি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের সৈয়দ নাসিফ ইমতিয়াজ, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের আবু রায়হান, জগন্নাথ হলের ও লোকপ্রশাসন বিভাগের প্রত্যয় সাহা, জসীমউদ্দিন হলের রহমান জিয়া, চাইনিজ ল্যাঙ্গুয়েজ বিভাগের ফেরদৌস আলম ইমন, ফাইন্যান্স বিভাগের মোশারফ হোসেন, জগন্নাথ হলের জয় বিশ্বাস।
মন্তব্য করুন