- রাজনীতি
- সুন্দর নির্বাচনে সমর্থন দেওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রকে ধন্যবাদ: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
সুন্দর নির্বাচনে সমর্থন দেওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রকে ধন্যবাদ: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। ফাইল ছবি
সরকার একটি স্বচ্ছ ও সুন্দর নির্বাচন চায়, ভিসা নীতির মাধ্যমে তাতে সমর্থন দেওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। বুধবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন মন্ত্রী। এর আগে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
গত ২৪ মে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন ঘোষিত ভিসা নীতিতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত বলে মনে করা যে কোনো বাংলাদেশি নাগরিকের ভিসা প্রদানে বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে।
বৈঠকের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘মার্কিন রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশ নিয়ে ভিসা নীতি নিয়ে আমাদের প্রতিক্রিয়া জানতে এসেছিলেন। শুরুতেই তিনি বলেছিলেন যে, কাউকে উদ্দেশ্য করে এই ভিসা নীতি করা হয়নি। নির্বাচন যাতে সুন্দর হয়, তা নিশ্চিত করতেই এই নীতি করা হয়েছে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমি তাদের স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছি, ভিসা যার যার দেশের একটি নিজস্ব ব্যাপার। সেই দেশে কাকে ঢুকতে দেবেন, কী দেবেন না; সেটি সেই দেশই জানেন। সেখানে আমাদের কিছু বলার নেই। ভিসা সম্পর্কে তারা যে ঘোষণা দিয়েছেন, এটি তাদের নিজস্ব ব্যাপার। সেখানে কিছু বলার নেই। আমরাও বিশ্বাস করি, একটি সুন্দর নির্বাচন হবে। কোনো ষড়যন্ত্র না, কোনো রকমের মাসলসম্যানের অভ্যুত্থান না, কিংবা বন্দুকের নল না, জনগণের ম্যান্ডেট নিয়েই একটি নির্বাচন হোক, আমরাও সেটি চাই। আমরা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছি, আওয়ামী লীগ কখনো ষড়যন্ত্রে বিশ্বাস করে না। আমরা জনগণের ম্যান্ডেটে বিশ্বাস করি। যে কারণে যুক্তরাষ্ট্র যে ভিসা নীতি দিয়েছে, সেটিকে আমরা স্বাগত জানিয়েছি। পাশাপাশি আমরা যে একটি স্বচ্ছ ও সুন্দর নির্বাচন চাই, তাতে যে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন দিয়েছে, সে জন্য তাদের ধন্যবাদ জানাই।’
আলোচনায় রাষ্ট্রদূতের নিরাপত্তার বিষয়টি এসেছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘হঠাৎ করে কেন তার সড়ক নিরাপত্তা তুলে নেওয়া হয়েছে, সেই প্রশ্ন তুলেছেন। আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তাকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে, আমরা সিস্টেমটি পরিবর্তন করেছি। আজ পিটার হাসকে সেই কথারই পুনরাবৃত্তি করেছি। আমরা কূটনৈতিক পাড়ায় কোনো ধরনের নিরাপত্তার ত্রুটি হতে দেব না। কূটনৈতিক পাড়া ও তাদের চলাচল যাতে নিরাপদ থাকে; সেই ব্যবস্থা আমরা করব। সেজন্য আমরা কাজ করছি।’
মার্কিন রাষ্ট্রদূত কোন কোন বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘তাকে সড়ক নিরাপত্তা দেয়া হতো, সেটি সম্পর্কে তিনি কথা বলেছেন। কেন সেটি প্রত্যাহার করা হলো। তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রালয় থেকে একটি চিঠি পেয়েছেন। আমরা সিদ্ধান্ত এ রকমই নিয়েছি যে যেসব দূতাবাস মনে করে, সড়কেও তাদের নিরাপত্তার দরকার আছে, তাদের আমরা সড়ক নিরাপত্তা দেব। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে চিঠি দিয়ে আমরা সব দূতাবাসকে জানিয়ে দিয়েছি।’
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘তাদের নিরাপত্তা ও নির্বিঘ্নে চলাচলের বিষয়ে আমরা সবসময় সতর্ক আছি। আমাদের অঙ্গীকার হলো, সব রাষ্ট্রদূত যাতে নিশ্চিন্তে নিরাপদে থাকেন, তার ব্যবস্থা করা।’
আনসার রেজিমেন্টের মাধ্যমে তাদের নিরাপত্তা দেওয়ার ব্যবস্থার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সেটি তাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তারা কিছু সময় চেয়েছেন। কিন্তু আমরা যাদের মাধ্যমে এই নিরাপত্তার ব্যবস্থা করব, তারা সুপ্রশিক্ষিত। কাজেই তাদের নিরাপত্তায় রাষ্ট্রদূতরা নির্বিঘ্নে থাকতে পারবেন।’
রাষ্ট্রদূতরা এখন পর্যন্ত আবেদন করেছেন কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাস্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তারা মৌখিকভাবে আবেদন করেছেন। আমরাও তাদের জানিয়ে দিয়েছি, আমরা আবারও কথা বলব, বসব। যদি আমরা মনে করি, কোনো জায়গায় আপনাদের নিরাপত্তার অভাব আছে, সেটা আমরা ব্যবস্থা করব।’
আরও নিষেধাজ্ঞা আসছে বলে শোনা যাচ্ছে, এ নিয়ে পিটার হাসের সঙ্গে কোনো কথা হয়েছে কিনা- এ বিষয়ে আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘এটি যুক্তরাষ্ট্রের বিষয়। তাদের সিদ্ধান্ত তো আমাদের জানা নেই। আমরা মনে করি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সুন্দরভাবে পরিচালিত হচ্ছে। এ দেশের মানুষ খুবই খুশি। তারা ভালোভাবে আছে। তারা দেশকে নিয়ে গর্ব করতে পারে।’
মন্তব্য করুন