খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বী চারজনই সব বুথে পোলিং এজেন্টও দিতে পারছেন না। এজেন্ট দিতে তাঁরা কোনো বাধার মুখোমুখিও হচ্ছেন না। এ ক্ষেত্রে সামর্থ্যের অভাবের কথা স্বীকার করেছেন তাঁরা। এতে বোঝা যাচ্ছে, নৌকার প্রার্থীর বিপরীতে তাঁরা প্রত্যেকেই দুর্বল প্রতিদ্বন্দ্বী।

এরই মধ্যে সব ভোটকেন্দ্র ও বুথে পোলিং এজেন্টের তালিকা চূড়ান্ত করেছে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেক। তবে বাকি চার প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে শুধু দু’জন মোট ২৮৯টি ভোটকেন্দ্রের প্রতিটিতে একজন করে এজেন্ট দিলেও প্রতিটি বুথে তাঁদের প্রতিনিধিত্ব থাকছে না। অপর দুই প্রার্থী ১ হাজার ৭৩২টি বুথের মধ্যে ১ হাজার ২০০টির মতো বুথে পোলিং এজেন্ট দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

জাকের পার্টির মেয়র প্রার্থী এস এম সাব্বির হোসেন জানান, সব বুথে পোলিং এজেন্ট দেওয়া হয়তো সম্ভব হবে না। তবে ২৮৯টি ভোটকেন্দ্রের সবকটিতে একজন করে পোলিং এজেন্ট দেবেন।

স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী এস এম শফিকুর রহমান মুশফিক বলেন, ইভিএমে ভোট হওয়ায় ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে ভোটারের আঙুলের ছাপ নেওয়ার প্রয়োজন হবে। সে কারণে এবার প্রতিটি বুথে পোলিং এজেন্ট না দিলেও চলবে। প্রতিটি কেন্দ্রে একজন করে এজেন্ট দেবেন।

জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী শফিকুল ইসলাম মধু বলেন, তাঁরা প্রতিটি কেন্দ্রে একজন করে পোলিং এজেন্ট চূড়ান্ত করেছেন। তবে সব বুথে এজেন্ট দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। ১ হাজার ৭৩২টি বুথের মধ্যে প্রায় ১ হাজার ২০০ বুথে এজেন্ট দেওয়া হবে। তিনি বলেন, পোলিং এজেন্টদের ৫০০ টাকা করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, অনেক কাউন্সিলর ও মেয়র প্রার্থী কেউ ১ হাজার টাকা, আবার কেউ দেড় হাজার টাকা দিচ্ছেন। তাঁদের হয়তো অবৈধ টাকা আছে। তিনি ৫০০ টাকা দিয়ে লোক পাচ্ছেন না। আবার দুপুরে তাঁদের বিরিয়ানি দিতে হবে।

ইসলামী আন্দোলনের মেয়র প্রার্থীর প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট হাসান ওবায়দুল করীম জানান, তাঁরা ইতোমধ্যে ২৮৯টি ভোটকেন্দ্রের জন্য ২৮৯ জন পোলিং এজেন্ট নির্ধারণ করেছেন। এখন ১ হাজার ৭৩১টি ভোটকক্ষের জন্য এজেন্টের তালিকা তৈরি করছেন। কিন্তু এত স্বল্প সময়ে সব ভোটকক্ষের জন্য পোলিং এজেন্ট দেওয়া সম্ভব হবে না।

দলটির মেয়র প্রার্থী আবদুল আওয়াল বলেন, পরিকল্পনা আছে সব বুথে এজেন্ট দেওয়ার। সব না পারলেও যত বেশি সংখ্যক দেওয়া যায়, সেই চেষ্টা করছেন।

আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেক জানান, তিনি ২৮৯টি ভোটকেন্দ্র ও ১ হাজার ৭৩২টি ভোটকক্ষেই পোলিং এজেন্ট দেবেন। সব বুথে অন্য প্রার্থীদের এজেন্ট না দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, এটা তাঁরা ঠিক করছেন না। কারণ, নির্বাচনের দিন বিদেশি বা দেশি পর্যবেক্ষক এসে যদি দেখে সব বুথে আওয়ামী লীগের পোলিং এজেন্ট আছে, অন্য প্রার্থীদের নেই; তখন তাঁরা বিভিন্ন ধরনের মন্তব্য বা ধারণা করতে পারেন।

এ ব্যাপারে রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন বলেন, সব প্রার্থীরই সমান সংখ্যক পোলিং এজেন্ট দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। এটা প্রার্থীদের সিদ্ধান্তের ব্যাপার। তবে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হবে।