রাজধানীর বাড্ডার সাঁতারকুলের শান্তিপাড়ায় অপু ইসলাম (৩৫) নামে এক শ্রমিক লীগ নেতাকে পিটিয়ে ভবন থেকে ফেলে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার এ ঘটনায় ১২ জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।

অপু বাড্ডার সাঁতারকুলের উত্তরপাড়া এলাকার মৃত সোহরাব হোসেনের ছেলে এবং সাঁতারকুল ইউনিট শ্রমিক লীগের আহ্বায়ক ছিলেন।

প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, কাদাযুক্ত রাস্তায় শুকনা স্থানে হাঁটাকে কেন্দ্র করে তর্কাতর্কির জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। এ ঘটনায় মৃতের ভাই খোরশেদ আলম বাদী হয়ে ছয়জনকে আসামি করে শনিবার বাড্ডা থানায় হত্যা মামলা করেছেন।

অপুর খালাতো ভাই দীপু হাসান জানান, এক সময় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার ব্যবসা করতেন অপু। সম্প্রতি কিছু করতেন না। বাড়ি ভাড়া দিয়ে চলতেন।

স্বজন ও পুলিশ সূত্র জানায়, বৃষ্টির কারণে শুক্রবার শান্তিপাড়ার রাস্তায় কাদা হয়ে যায়। রাত সাড়ে ৮টার দিকে অপু ওই রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। বিপরীত দিক দিয়ে হাঁটছিলেন সাঁতারকুল এলাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন ছাত্র। রাস্তার দু’পাশেই কাদা। মাঝখানে একটু শুকনা থাকায় সেখান দিয়ে অপু এবং ছাত্ররা আগে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কে আগে যাবেন– এ নিয়ে অপুর সঙ্গে তর্ক বাধে তাঁদের।

তর্কের এক পর্যায়ে তাঁরা অপুকে তাঁদের আট তলা ভবনের সাত তলায় মেসে নিয়ে যান এবং মারধর করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। পরে ভবন মালিক কয়েকজনকে নিয়ে এসে তাঁকে উদ্ধার করেন। রাত সাড়ে ৯টার দিকে ওই বাড়ির বাসিন্দা এবং একটি স্কুল অ্যান্ড কলেজের চার শিক্ষক মীমাংসার কথা বলে অপুকে ফোনে ডাকেন সাত তলার মেসে।

এ সময় অপু সাত-আটজন বন্ধুকে ভবনের নিচে রেখে নাহিম নামে এক বন্ধুকে নিয়ে সাত তলায় যান। এ সময় তাঁকে আবারও মারধর করা হয় এবং লিফটের ফাঁকা স্থান দিয়ে নিচে ফেলে দেওয়া হয়। পরে নিচে থাকা বন্ধুরা তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

রাত আড়াইটার দিকে লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়। পাশাপাশি ওই মেসে পুলিশ অভিযান চালায়। এ সময় ১২ জনকে আটক করে থানায় নেওয়া হয়।

বাড্ডা থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ সমকালকে বলেন, ‘তুচ্ছ ঘটনায় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। কয়েকজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’

নিহতের স্বজনরা জানান, আজ বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে লাশ সাঁতারকুলের উত্তরপাড়ার বাড়িতে নেওয়া হয়। রাতে সাঁতারকুল কবরস্থানে দাফন করা হয়। অপুর সাত বছরের একটি মেয়ে ও তিন বছরের ছেলে রয়েছে।

বাড্ডা থানার দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানান, যে ১২ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে কয়েকজন হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তাঁদের ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে রোববার আদালতে পাঠানো হতে পারে।