ঢাকা শনিবার, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫

২৮ ছাত্রসংগঠনের মতবিনিময়

সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা রাখায় প্রত্যয়

সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা রাখায় প্রত্যয়

কাটাবনের একটি হোটেলে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: সমকাল

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১৩:২৩

দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলসহ ২৮টি ছাত্রসংগঠন মতবিনিময় সভা করেছে।বৃহস্পতিবার রাজধানীর কাটাবনে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় ছাত্রনেতারা বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব, অভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গণতান্ত্রিক পরিবেশ, ছাত্রসংসদ নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করেন। এছাড়াও নেতারা অভ্যুত্থানের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ভূমিকাসহ সমসাময়িক গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন বিষয়ে তাদের মতামত ব্যক্ত করেন।

মতবিনিময় সভায় ছাত্রনেতারা বলেন, ‘ছাত্র-জনতার গণ-ভ্যুত্থানের মুখে ফ্যাসিস্ট হাসিনা দেশ থেকে পালিয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ দীর্ঘ ১৫ বছর ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। গণঅভ্যুত্থানে দুই  হাজারের অধিক মানুষ শহীদ ও ৩০ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। ভারত রাজনৈতিকভাবে ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে টিকিয়ে রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে। কিন্তু এতে ব্যর্থ হয়ে এখন নানা ধরণের উস্কানি দেওয়ার চেষ্টা করছে শেখ হাসিনা। 

আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা তারই প্রকাশ বলে মনে করেন সংগঠনগুলোর নেতারা। ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ী, দূতাবাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ভারত ব্যর্থ হয়েছে। এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায় ছাত্র সংগঠনগুলো।

গণঅভ্যুত্থানের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ভূমিকার সমালোচনা করে নেতারা বলেন, অভ্যুত্থানের পর থেকেই সংগঠনটির নেতারা ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী ছাত্র সংগঠনগুলোকে অপরায়নের দিকে ঠেলে দিয়েছেন। অভ্যুত্থানে হাজারো জনতার রক্তের ওপরে যে জাতীয় ঐক্য গড়ে উঠেছিলো, গোষ্ঠীগত স্বার্থ উদ্ধারে ব্যবহারের কারণে তা ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। 

সংগঠনগুলোর নেতারা মনে করেন, অভ্যুত্থানের মধ্যে দিয়ে গড়ে উঠা এই জাতীয় ঐক্যে যদি ভাঙনের সৃষ্টি হয়; তার দায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের। কোনভাবেই তারা এই অভিযোগ অস্বীকার করতে পারবে না।

সংগঠনগুলোর নেতারা ঘোষণা করেন, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশের ছাত্রসমাজ ঐক্যবদ্ধ রয়েছে। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত এদেশের ছাত্র-জনতা জীবন দিয়ে হলেও মোকাবিলা করবে।

মতবিনিময় সভায় ছাত্রনেতারা বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে গণহত্যার বিচার, আহতদের সুচিকিৎসা, নিহতদের পরিবারের পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে হবে। দেশে সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক যে কোনো পদক্ষেপ ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করা হবে। একইসঙ্গে দখলদারিত্বমুক্ত নিরাপদ ক্যাম্পাস, শিক্ষার্থীদের গণতন্ত্র ও সংগঠনের অধিকার চর্চার পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়াও ছাত্ররাজনীতি বন্ধের অপতৎপরতার বিরুদ্ধে তারা ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

ছাত্রনেতারা দাবি করেন, সারাদেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর গণতান্ত্রিক সংস্কারের লক্ষ্যে (১৯৭৩ সালের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আদেশ ও ছাত্র সংসদের গঠনতন্ত্রের সংস্কার শেষে) কমিশন গঠন করে সংস্কার শেষে দ্রুত ছাত্রসংসদ নির্বাচন দিতে হবে।

সভায় অংশ নেওয়া ছাত্র সংগঠনগুলো হলো- জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র সমাজ,  বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন, ছাত্র আন্দোলন (এনডিএম), বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (জেএসডি), জাতীয় ছাত্র সমাজ (জাফর), জাগপা ছাত্রলীগ, বাংলাদেশ ছাত্র মিশন, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, ভাষানী ছাত্র পরিষদ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (বিসিএল), নাগরিক ছাত্র ঐক্য , বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ, বাংলাদেশ জাতীয় ছাত্র সমাজ (পার্থ), ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র মজলিস, বাংলাদেশ ছাত্রপক্ষ, রাষ্ট্রসংস্কার ছাত্র আন্দোলন, বাংলাদেশ মুসলিম ছাত্রলীগ (নুর আলম), সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, বাংলাদেশ খেলাফত ছাত্র মজলিস, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ ও বিপ্লবী ছাত্র যুব আন্দোলন।

আরও পড়ুন

×