অনুপ্রবেশকারীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না: ওবায়দুল কাদের
ওবায়দুল কাদের
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৮ আগস্ট ২০২০ | ০৪:১১
অনুপ্রবেশকারীদের দলে আশ্রয় ও প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না বলে দলীয় নেতাকর্মীদের হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দুঃসময়ে দীর্ঘদিনের ত্যাগী নেতাকর্মীরাই দলকে ধরে রাখেন। সুসময়ের বসন্তের কোকিলরা দুঃসময়ে থাকে না। তাই সবাইকে সতর্ক করে দিয়ে বলবো, দলের কোনো স্তরে কোনোভাবেই অনুপ্রবেশকারীদের আশ্রয় ও প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না।
শুক্রবার আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমণ্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক উপ-কমিটির উদ্যোগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের প্রতিনিধিদের কাছে করোনা প্রতিরোধে স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী হস্তান্তর অনুষ্ঠানে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। সংসদ ভবনের তার সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত হন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমি একটা কথা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, অনুপ্রবেশকারীরাই দল ও সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেন। দুঃসময়ের পরীক্ষিত নেতাকর্মীরা কখনো দল ও সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়- এমন কাজ করেন না। সাম্প্রতিককালে দেখা গেছে, দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নের জন্য অনুপ্রবেশকারীরাই দায়ী।’
তিনি বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণের শুরু থেকেই বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সরকার কার্যকর পদক্ষেপ নিয়ে আসছে। তার সুদক্ষ নেতৃত্ব ও নিরলস পর্যবেক্ষণের কারণে সরকার শুরু থেকেই করোনাভাইরাসে সৃষ্ট পরিস্থিতি তুলনামূলকভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছে। এ ভাইরাসের অতীত ইতিহাস না থাকায় চিকিৎসা সেবার ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ একটি নতুন অভিজ্ঞতা হিসেবে দেখা দিয়েছিল। কিন্তু শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ও সরকারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় অল্পসময়ে জনসচেতনতা তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি চিকিৎসা সেবা প্রদানে বাংলাদেশের এখন সক্ষমতাও তৈরি হয়েছে, যা দিন দিন বাড়ছে।
সেতুমন্ত্রী বলেন, জনগণের চাহিদা অনুযায়ী সুযোগ সম্প্রসারণের পাশাপাশি পর্যাপ্ত বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাতেও চিকিৎসা সেবার সুযোগ দিন দিন বাড়ছে। দেশে এখন আন্তর্জাতিক মানের চিকিৎসা হচ্ছে। চিকিৎসা ক্ষেত্রে আমাদের বিদেশমুখিতা কমিয়ে আনতে হবে। বিশেষায়িত হাসপাতালগুলোকে রূপান্তর করতে হবে সেন্টার অব এক্সিলেন্স-এ।
তিনি বলেন, শুধু রাজধানী কেন্দ্রিক নয়, চিকিৎসা ব্যবস্থাকে তৃণমূলে ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যেই সরকার কাজ করছে। এ খাতে ব্যবস্থাপনা দক্ষতা বাড়াতে এবং অনিয়ম দূর করতে সম্প্রতি নেওয়া হয়েছে বেশ কিছু পদক্ষেপ। এসব কার্যক্রম এগিয়ে নিতে চিকিৎসা সংশ্লিষ্ট সবার আন্তরিক সহযোগিতা প্রয়োজন। চিকিৎসা ব্যবস্থা একটি টিমওয়ার্ক। চিকিৎসক নার্স টেকনোলজিস্ট স্বাস্থ্যকর্মী চিকিৎসা সরঞ্জামসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে গড়ে তুলতে হবে শক্তিশালী টিমওয়ার্ক।
ধানমণ্ডির দলীয় সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয় প্রান্তে অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী এমপি বলেন, আওয়ামী লীগের ভক্তরা ও বঙ্গবন্ধুর অনুসারীরা সারাদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থেকে জয়ী হওয়ার দৃঢ়প্রতিজ্ঞা নিয়েই করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অবতীর্ণ হয়েছেন। করোনায় মৃত্যুর হার আমরা শূন্যে নিয়ে যেতে চাই। সেজন্য আমরা এখনো লড়াই করছি, গোটা জাতিও লড়াই করছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে।
তিনি বলেন, করোনার শুরু থেকে বাংলার জনগণ প্রধানমন্ত্রী ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুশাসনগুলো যথাযথভাবে মেনে চলার চেষ্টা করেছে। এদেশের মানুষ শেখ হাসিনার আহ্বানে সাড়া দিয়েছেন। সেই কারণে কভিড তার পরাক্রম দিয়ে এদেশের জনগণকে ওইভাবে আত্মসমর্পণে বাধ্য করতে পারেনি। আমরা এগিয়ে যাচ্ছি, এগিয়ে যাবোই। মুক্তিযুদ্ধে যদি আমরা জয়লাভ করতে পারি, তাহলে এই করোনাকেও পরাভূত করতে পারবো।
আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন দলের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।