শান্তিপূর্ণ আন্দোলন সহিংস করার অপচেষ্টা করছে বিএনপি: কাদের

ওবায়দুল কাদের- ফাইল ছবি
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০ অক্টোবর ২০২০ | ০৭:৫৯
ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনে ভর করে কোন স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী যাতে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে না পারে সেদিকে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনকে ভিন্নখাতে নিয়ে বিএনপি সরকারের পতন চায়! শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে সহিংস করার অপচেষ্টা করছে বিএনপি। সরকার এ বিষয়ে সজাগ রয়েছে।
শনিবার গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। সংসদ ভবনের তার সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বর্ধিত সভায় যুক্ত হন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
ওবায়দুল কাদের বলেন, গাজীপুরের কাপাসিয়ায় ধর্ষণের ঘটনায় বিএনপির ছাত্র সংগঠনের সাবেক নেতাদের জড়িত থাকার খবর এসেছে। এরপরও বিএনপি নেতারা এ বিষয়ে মুখে কুলুপ এটেছেন কেন? তারা কী বিএনপি ও তাদের ছাত্র সংগঠনের ধর্ষণকারীদের রক্ষা করতে চান?
তিনি বলেন, ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনের নামে যারা ষড়যন্ত্র ও গুজব রটাচ্ছে, তাদেরও চিহ্নিত করার কাজ চলছে। আন্দোলনের নামে যেকোনো ধরনের অস্থিরতা ও ষড়যন্ত্র সৃষ্টির অপপ্রয়াস জনস্বার্থে সরকার কঠোর হস্তে দমন করবে।
সেতুমন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনার সরকার শুধু ধর্ষণ আর নারীর প্রতি সহিংসতাই নয়, যেকোনো অন্যায় ও অপকর্মের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে। প্রতিটি ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, আনা হয়েছে বিচারের আওতায়। ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান থেকে শুরু করে স্বাস্থ্যখাতের অনিয়ম রুখতে যে শুদ্ধি অভিযান সরকার পরিচালনা করছে- তা কারো দাবির প্রেক্ষিতে নয়, স্বপ্রণোদিত হয়েই করছে।
তিনি বলেন, দলীয় পরিচয়ও শেখ হাসিনার কাছে কোনো অপরাধীর রক্ষাকবচ হতে পারেনি এ পর্যন্ত। তাই তো এদেশের নারীদের আস্থার ঠিকানা শেখ হাসিনা ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে আইন সংশোধনের নির্দেশ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে মন্ত্রিসভায় আইন সংশোধনের প্রস্তাব আসছে।
দলীয় নেতাদের উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, দলের কোনো পর্যায়ে সন্ত্রাসী, ধর্ষক ও মাদকসেবীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না। কমিটি গঠনে ত্যাগী নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করতে হবে। অপরাধের সঙ্গে জড়িত কেউ যেন কমিটিতে ঠাঁই না পায়। খারাপ লোকদের দিয়ে দলভারি করা যাবে না। খারাপ লোকেরা উন্নয়ন ও অর্জনকে ম্লান করে দেবে।
নেতাকর্মীদের স্থানীয় সরকার নির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, এসব নির্বাচনে জয়ের লক্ষ্যে এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে। আর দলীয় প্রার্থীর জয়ের জন্য যথাযথ প্রার্থী নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাই যাচাই-বাছাই করে শক্তিশালী ও ক্লিন ইমেজের প্রার্থীর নাম প্রস্তাব করে কেন্দ্রে পাঠাতে হবে। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দলীয় প্রার্থীর বিজয়ে কাজ করতে হবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, শক্তিশালী ও গণমুখী সংগঠনের জন্য সাংগঠনিক ঐক্যের বিকল্প নেই। সংগঠনের মজবুত জনভিত্তি তৈরি করতে হলে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ছোট-খাট বিষয়ে মতের অমিল থাকলে তা মিটিয়ে ফেলতে হবে। দলের সভাপতি শেখ হাসিনার নির্দেশ হচ্ছে ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায় পর্যন্ত শক্তিশালী সংগঠন গড়ে তুলতে হবে। পাশাপাশি শহর ও পৌরসভা সংগঠনগুলোকেও মজবুত করতে হবে। জনসমর্থনও বাড়াতে হবে। দলের জেলা সম্মেলনের আগে ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও উপজেলার সম্মেলন অবশ্যই শেষ করতে হবে বলেও জানান আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।