
রাজশাহীতে 'বাংলাবিদ' প্রতিযোগিতা
সঠিক বাংলা লেখা বলা চর্চা প্রয়োজন
২৮ এপ্রিল ১৮ । ০০:০০ | আপডেট: ২৭ এপ্রিল ১৮ । ২২:৫৪
রাজশাহী ব্যুরো ও রাবি প্রতিনিধি

কেঁদেই চলেছেন সাওদা খানম শান্তা। তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছেন সাদিয়া খানম কান্তা। কিন্তু শান্তার চোখের পানি যেন থামার নয়। শান্তা ও কান্তা যমজ বোন। পড়ছেনও দু'জন একই সঙ্গে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্কুলের দশম শ্রেণিতে। 'ইস্পাহানি মির্জাপুর-বাংলাবিদ' প্রতিযোগিতার রাজশাহী বিভাগীয় পর্যায়ের সেরা ২১-এর মধ্যে রয়েছে শান্তার নাম। কিন্তু কান্তা সেরা ২১-এ না থাকায় শান্তাও প্রতিযোগিতায় আর অংশ নেবে না বলে জানায়। দীর্ঘ সময় কান্তাসহ কয়েকজন বোঝানোর পর অবশেষে প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় শান্তা।
শান্তা ও কান্তা গত বছর বাংলাবিদ প্রতিযোগিতার প্রথমবারের আয়োজনে ঢাকা স্টুডিও রাউন্ড পর্যন্ত ছিল। বাদ পড়েছিল একসঙ্গেই। কিন্তু এবার কান্তা আগে বাদ পড়ায় শান্তা বলল, 'এতদিন যখন যেখানে যে প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছি, দুইজন একসঙ্গেই নিয়েছি। এখন কান্তা না থাকলে আমিও আর অংশ নেব না।' কিন্তু কান্তা তাকে আশ্বাস দিতে থাকে 'এটা প্রতিযোগিতা, এমনটি হতেই পারে। আমার জন্যই না হয় তুই অংশ নে।'
নতুন প্রজন্মের কাছে শুদ্ধ বাংলা বানান ও ব্যবহার ছড়িয়ে দিতে আয়োজিত বাংলা প্রতিযোগিতা 'ইস্পাহানি মির্জাপুর-বাংলাবিদ'-এর রাজশাহী বিভাগীয় পর্ব অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার সকাল ৯টায় রাজশাহীর শহীদ মামুন মাহমুদ পুলিশ লাইন স্কুল মাঠে দ্বিতীয়বারের মতো আয়োজিত এ প্রতিযোগিতার রাজশাহী বিভাগীয় পর্ব উদ্বোধন করা হয়। জাতীয় সঙ্গীত ও সঠিকভাবে বাংলা ভাষার ব্যবহারের শপথের মাধ্যমে শুরু হয় অনুষ্ঠান। এরপর সকাল ১০টায় নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এতে রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন স্কুলের সহস্রাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেয়। ইস্পাহানি মির্জাপুর চা-এর পৃষ্ঠপোষকতায় অনুষ্ঠানের মিডিয়া পার্টনার ছিল সমকাল।
সহস্রাধিক শিক্ষার্থীর মধ্য থেকে 'নৈর্ব্যক্তিক' অংশে বিজয়ী ১৩১ জনকে নিয়ে 'অনুধাবনমূলক' অংশের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এদের মধ্য থেকে সেরা ৪১ জনকে 'প্রয়োগ রাউন্ডের' জন্য
নির্বাচিত করা হয়। দুপুরে এই ৪১ শিক্ষার্থীকে নিয়ে শুরু হয় বানান শুদ্ধিকরণ, শব্দ ভাণ্ডার যাচাই ও উচ্চারণের খেলা। এই রাউন্ড থেকে সেরা ২১ জনকে 'স্টুডিও রাউন্ডের' জন্য নির্বাচিত করা হয়। সন্ধ্যা ৭টায় শুরু হয় স্টুডিও রাউন্ড, যেখানে সৃজনশীল লেখা, উপস্থাপনা ও বিচারকদের প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে সেরা ১০ জনকে জাতীয় পর্যায়ের জন্য চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত করা হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় এই প্রতিবেদন লেখার সময় সেরা ২১ জনকে নিয়ে স্টুডিও রাউন্ড চলছিল।
প্রতিযোগিতায় বিচারক হিসেবে ছিলেন অধ্যাপক রুহুল আমিন প্রামাণিক, আবৃত্তি শিল্পী মাহীদুল ইসলাম ও কবি হানিফ খান। অধ্যাপক প্রামাণিক বলেন, 'আয়োজনটি বেশ ইতিবাচক। কেননা, এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বাংলার প্রতি আরেকটু আগ্রহী হবে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা সংগ্রাম, বাংলা ভাষার জন্য সংগ্রাম- এগুলো তাদের মনের মধ্যে উচ্চারিত হবে। ফলে এর চেতনাও তাদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়বে।' তবে এ জন্য নিয়মিত চর্চা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন আরেক বিচারক মাহীদুল ইসলাম। তিনি বলেন, 'এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে বাংলার বেশ জগাখিচুড়ি অবস্থা। তাই সঠিক উচ্চারণ, বানানের জন্য শিক্ষার্থীদের ফেসবুককেন্দ্রিক হওয়া যাবে না। এ ক্ষেত্রে সঠিক বাংলা চর্চার জন্য বাবা-মা, শিক্ষক ও বইয়ের সহযোগিতা নিতে হবে।'
প্রতিযোগিতায় সেরা ২১-এর অন্যতম দু'জন বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী সাদিয়া আফরোজ তুলি ও অষ্টম শ্রেণির সুমাইয়া পারভীন বলে, 'প্রতিটি পর্বেই কিছুটা উদ্বেগ কাজ করছিল। তবে গতবারের তুলনায় এ বছর প্রশ্নগুলো অনেক মানসম্পন্ন হয়েছে।'
সেরা ৪১-এর একজন রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুলের সামিউল হাসান বলে, 'এখন ফেসবুকের কারণে বাংলা ভাষা অনেক বিকৃত হচ্ছে। এখানে এসে সেগুলো বুঝতে পারছি। পাশাপাশি অনেক বানান নিয়ম, উচ্চারণ নীতি, ব্যাকরণগত দিক শিখতে পেরেছি, যা বাংলার প্রতি আরও আগ্রহী করে তুলছে।'
আয়োজকদের একজন এসএম দিদারুল হাসান জানান, পুঁথিগত ও শ্রেণিকক্ষের ফলাফলমুখী শিক্ষা এবং বিদেশি ভাষা ও সংস্কৃতির আগ্রাসন থেকে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের রক্ষা করে শিক্ষাকে আনন্দময় করে তোলাই এই প্রতিযোগিতার মূল উদ্দেশ্য।
২০১৭ সালে প্রথমবারের মতো 'বাংলাবিদ' অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ইস্পাহানি মির্জাপুর টি লিমিটেড। এ বছর এর দ্বিতীয় আয়োজন। এই মেধাভিত্তিক টিভি রিয়েলিটি শো প্রচারিত হবে বেসরকারি টিভি 'চ্যানেল আইয়ে'। রমজানের পর ঢাকায় চূড়ান্ত প্রতিযোগিতা শুরু হবে।
শান্তা ও কান্তা গত বছর বাংলাবিদ প্রতিযোগিতার প্রথমবারের আয়োজনে ঢাকা স্টুডিও রাউন্ড পর্যন্ত ছিল। বাদ পড়েছিল একসঙ্গেই। কিন্তু এবার কান্তা আগে বাদ পড়ায় শান্তা বলল, 'এতদিন যখন যেখানে যে প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছি, দুইজন একসঙ্গেই নিয়েছি। এখন কান্তা না থাকলে আমিও আর অংশ নেব না।' কিন্তু কান্তা তাকে আশ্বাস দিতে থাকে 'এটা প্রতিযোগিতা, এমনটি হতেই পারে। আমার জন্যই না হয় তুই অংশ নে।'
নতুন প্রজন্মের কাছে শুদ্ধ বাংলা বানান ও ব্যবহার ছড়িয়ে দিতে আয়োজিত বাংলা প্রতিযোগিতা 'ইস্পাহানি মির্জাপুর-বাংলাবিদ'-এর রাজশাহী বিভাগীয় পর্ব অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার সকাল ৯টায় রাজশাহীর শহীদ মামুন মাহমুদ পুলিশ লাইন স্কুল মাঠে দ্বিতীয়বারের মতো আয়োজিত এ প্রতিযোগিতার রাজশাহী বিভাগীয় পর্ব উদ্বোধন করা হয়। জাতীয় সঙ্গীত ও সঠিকভাবে বাংলা ভাষার ব্যবহারের শপথের মাধ্যমে শুরু হয় অনুষ্ঠান। এরপর সকাল ১০টায় নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এতে রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন স্কুলের সহস্রাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেয়। ইস্পাহানি মির্জাপুর চা-এর পৃষ্ঠপোষকতায় অনুষ্ঠানের মিডিয়া পার্টনার ছিল সমকাল।
সহস্রাধিক শিক্ষার্থীর মধ্য থেকে 'নৈর্ব্যক্তিক' অংশে বিজয়ী ১৩১ জনকে নিয়ে 'অনুধাবনমূলক' অংশের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এদের মধ্য থেকে সেরা ৪১ জনকে 'প্রয়োগ রাউন্ডের' জন্য
নির্বাচিত করা হয়। দুপুরে এই ৪১ শিক্ষার্থীকে নিয়ে শুরু হয় বানান শুদ্ধিকরণ, শব্দ ভাণ্ডার যাচাই ও উচ্চারণের খেলা। এই রাউন্ড থেকে সেরা ২১ জনকে 'স্টুডিও রাউন্ডের' জন্য নির্বাচিত করা হয়। সন্ধ্যা ৭টায় শুরু হয় স্টুডিও রাউন্ড, যেখানে সৃজনশীল লেখা, উপস্থাপনা ও বিচারকদের প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে সেরা ১০ জনকে জাতীয় পর্যায়ের জন্য চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত করা হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় এই প্রতিবেদন লেখার সময় সেরা ২১ জনকে নিয়ে স্টুডিও রাউন্ড চলছিল।
প্রতিযোগিতায় বিচারক হিসেবে ছিলেন অধ্যাপক রুহুল আমিন প্রামাণিক, আবৃত্তি শিল্পী মাহীদুল ইসলাম ও কবি হানিফ খান। অধ্যাপক প্রামাণিক বলেন, 'আয়োজনটি বেশ ইতিবাচক। কেননা, এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বাংলার প্রতি আরেকটু আগ্রহী হবে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা সংগ্রাম, বাংলা ভাষার জন্য সংগ্রাম- এগুলো তাদের মনের মধ্যে উচ্চারিত হবে। ফলে এর চেতনাও তাদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়বে।' তবে এ জন্য নিয়মিত চর্চা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন আরেক বিচারক মাহীদুল ইসলাম। তিনি বলেন, 'এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে বাংলার বেশ জগাখিচুড়ি অবস্থা। তাই সঠিক উচ্চারণ, বানানের জন্য শিক্ষার্থীদের ফেসবুককেন্দ্রিক হওয়া যাবে না। এ ক্ষেত্রে সঠিক বাংলা চর্চার জন্য বাবা-মা, শিক্ষক ও বইয়ের সহযোগিতা নিতে হবে।'
প্রতিযোগিতায় সেরা ২১-এর অন্যতম দু'জন বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী সাদিয়া আফরোজ তুলি ও অষ্টম শ্রেণির সুমাইয়া পারভীন বলে, 'প্রতিটি পর্বেই কিছুটা উদ্বেগ কাজ করছিল। তবে গতবারের তুলনায় এ বছর প্রশ্নগুলো অনেক মানসম্পন্ন হয়েছে।'
সেরা ৪১-এর একজন রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুলের সামিউল হাসান বলে, 'এখন ফেসবুকের কারণে বাংলা ভাষা অনেক বিকৃত হচ্ছে। এখানে এসে সেগুলো বুঝতে পারছি। পাশাপাশি অনেক বানান নিয়ম, উচ্চারণ নীতি, ব্যাকরণগত দিক শিখতে পেরেছি, যা বাংলার প্রতি আরও আগ্রহী করে তুলছে।'
আয়োজকদের একজন এসএম দিদারুল হাসান জানান, পুঁথিগত ও শ্রেণিকক্ষের ফলাফলমুখী শিক্ষা এবং বিদেশি ভাষা ও সংস্কৃতির আগ্রাসন থেকে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের রক্ষা করে শিক্ষাকে আনন্দময় করে তোলাই এই প্রতিযোগিতার মূল উদ্দেশ্য।
২০১৭ সালে প্রথমবারের মতো 'বাংলাবিদ' অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ইস্পাহানি মির্জাপুর টি লিমিটেড। এ বছর এর দ্বিতীয় আয়োজন। এই মেধাভিত্তিক টিভি রিয়েলিটি শো প্রচারিত হবে বেসরকারি টিভি 'চ্যানেল আইয়ে'। রমজানের পর ঢাকায় চূড়ান্ত প্রতিযোগিতা শুরু হবে।
© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩
সম্পাদক : আলমগীর হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ
টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com