
৬৪.৭০% কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ
প্রকাশ: ২২ জানুয়ারি ২০ । ০১:৫৬ | প্রিন্ট সংস্করণ
বকুল আহমেদ

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ভোটগ্রহণের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই নির্বাচনী
প্রচার জমে উঠছে। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ছুটছেন মেয়র ও কাউন্সিলর
প্রার্থীরা। সমর্থকরাও ভোট চাইছেন প্রার্থীর পক্ষে। ১০ জানুয়ারি থেকে শুরু
হওয়া নির্বাচনী প্রচারে গতকাল মঙ্গলবার গাবতলীতে বিএনপির মেয়র প্রার্থী
তাবিথ আউয়ালের ওপর একটি হামলার ঘটনা ছাড়া আর বড় ধরনের কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা
ঘটেনি। শান্তিপূর্ণভাবেই প্রচার চলছে। তবে ভোটগ্রহণের দিন, অর্থাৎ ১
ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আগাম প্রস্তুতি
নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ইতোমধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র চিহ্নিত
করা হয়েছে। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে ৬৪ দশমিক ৭০ শতাংশ কেন্দ্র
ঝুঁকিপূর্ণ। ভোটকেন্দ্রে মারামারি, হট্টগোল, প্রার্থীর বাড়ির নিকটবর্তী
কেন্দ্রে পেশিশক্তি প্রয়োগ ও জাল ভোট দেওয়ার আশঙ্কা থেকে ঝুঁকিপূর্ণ
তালিকায় নেওয়া হয়েছে এসব কেন্দ্র। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর
নিরাপত্তায় থাকবে এসব কেন্দ্র। এ ছাড়া বাকি ৩৫ দশমিক ৩০ শতাংশ সাধারণ
কেন্দ্রেও সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা
রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী এসব ঝুঁকিপূর্ণ
কেন্দ্র চিহ্নিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্নিষ্টরা।
ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার (ডিএমপি) মোহা. শফিকুল ইসলাম সোমবার সমকালকে
বলেন, 'এখন পর্যন্ত নির্বাচনী প্রচারে কোনো হট্টগোল হয়নি। শান্তিপূর্ণভাবেই
প্রচার চালাচ্ছেন প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে
নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।
প্রতিটি কেন্দ্রে থাকবে কঠোর নিরাপত্তা। এ ছাড়া পুলিশের টহল টিম ও
স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকবে প্রতিটি থানা এলাকায়। পোশাকে ও সাদা পোশাকে
পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হবে।
নির্বাচন কমিশন সূত্র জানিয়েছে, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মোট ওয়ার্ড
১২৯টি। এর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে (ডিএসসিসি) ৭৫টি ও ঢাকা উত্তর
সিটি করপোরেশনে (ডিএনসিসি) ৫৪টি ওয়ার্ড। দুই সিটিতে ভোটগ্রহণ হবে দুই হাজার
৪৬৮টি কেন্দ্রে। এর মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ তালিকায় এক হাজার ৫৯৭টি কেন্দ্র।
সাধারণ কেন্দ্রের সংখ্যা ৮৭১টি। অবশ্য নির্বাচন কমিশন ও আইনশৃঙ্খলা
রক্ষাকারী বাহিনী ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রকে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র বলে উল্লেখ
করে। ঝুঁকি নেই এমন কেন্দ্রকে বলে সাধারণ কেন্দ্র। মোট দুই হাজার ৪৬৮
কেন্দ্রের মধ্যে ডিএসসিসিতে এক হাজার ১৫০টি কেন্দ্র, যার মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ
৭২১টি এবং সাধারণ কেন্দ্র ৪২৯টি। ডিএনসিসিতে এক হাজার ৩১৮টি কেন্দ্র, যার
মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ ৮৭৬টি এবং সাধারণ কেন্দ্র ৪৪২টি।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে নিরাপত্তার জন্য পুলিশের
বাড়তি নজরদারি থাকবে। ঝুঁকিপূর্ণ প্রতিটি কেন্দ্রে নিয়োজিত থাকবেন একজন
পুলিশ কর্মকর্তা ও পাঁচজন ফোর্স। এ ছাড়া থাকবেন ১৪-১৫ আনসার সদস্য। সাধারণ
কেন্দ্রে থাকবেন একজন কর্মকর্তা ও তিনজন ফোর্স। পুলিশের পাশাপাশি আনসার
সদস্যও থাকবেন। এ ছাড়া প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে পুলিশের টহল টিম থাকবে।
টহল টিমে থাকবেন একজন পুলিশ কর্মকর্তা ও পাঁচজন ফোর্স। প্রতিটি থানায়
পুলিশের দুটি স্ট্রাইকিং টিম রাখা হবে। এর প্রতি টিমে তিন পুলিশ কর্মকর্তা ও
১২ জন ফোর্স থাকবেন। এ টিম থানায় অবস্থান করবে। কোথাও আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত
হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ওই টিম দ্রুত ছুটে যাবে ঘটনাস্থলে। নির্বাচনে
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে অস্থায়ী কন্ট্রোল রুমও থাকবে।
ডিএসসিসি এলাকায় পর্যবেক্ষণের জন্য দুটি অস্থায়ী কন্ট্রোল রুমের মধ্যে একটি
আবদুল গণি রোডে এবং অন্যটি থাকবে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে। ডিএনসিসি এলাকার
জন্য থাকবে তিনটি অস্থায়ী কন্ট্রোল রুম। সেগুলো হলো মিরপুর পুলিশ লাইন্স,
ডিপ্লোম্যাটিক সিকিউরিটি পুলিশ লাইন্স ও এপিবিএন পুলিশ লাইন্স। এসব
কন্ট্রোল রুমে এক হাজার থেকে এক হাজার ২০০ পুলিশ সদস্য নিয়োজিত থাকবেন।
নির্বাচনকেন্দ্রিক বড় ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে
ওই সদস্যরা ঘটনাস্থলে ছুটে যাবেন।
পুলিশের পাশাপাশি র্যাবও নির্বাচনকে ঘিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
র্যাবের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, ভোটের দিন পোশাক ও সাদা পোশাকে
র্যাবের পর্যাপ্ত সংখ্যক সদস্য মাঠে থাকবেন। ভোটকেন্দ্র, টহল টিম ও
স্ট্রাইকিং টিমে ভাগ হয়ে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবেন তারা।
© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩
সম্পাদক : মোজাম্মেল হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ
টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com