হার মানুক বয়স...

প্রকাশ: ১৫ জানুয়ারি ২০ । ১০:২১ | প্রিন্ট সংস্করণ

সুদীপ্তা শিউলী

ববিতা- সমকাল

ত্বকে বয়সের ছাপ সবচেয়ে বেশি পড়ে। উজ্জ্বল ত্বক মানে তারুণ্যের আভা। তাই বলে সারাজীবন তো আর কেউ তরুণ থাকে না। অনেক ক্ষেত্রে মেকআপ দিয়েও লুকিয়ে রাখা যায় না বয়সের বলিরেখা। তবে চেষ্টা করলে মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করে ত্বকের লাবণ্য ধরে রেখে আজীবন বয়স ঠেকিয়ে রাখতে পারেন। এজন্য আপনাকে কিছু নিয়মকানুন অভ্যাসে পরিণত করতে হবে।

স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্যাভ্যাস

মিষ্টি বা ভাজাপোড়া খাদ্য ত্বকের জন্য মোটেও স্বাস্থ্যকর নয়। চর্বিযুক্ত খাবারের বেলায়ও এ কথা খাটে। একই সঙ্গে মানসিক চাপের মুহূর্তে কতটা খান সেটাও লক্ষ্য রাখতে হবে।

গভীরভাবে দম নিন

শরীরে অক্সিজেন ও কার্বনডাই-অক্সাইডের ভারসাম্য তৈরি করতে আপনি স্বাভাবিকভাবে অনেক বেশি এনার্জি পাবেন। শ্বাস-প্রশ্বাসের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করার জন্য নিয়মিত ব্রিদিং এক্সারসাইজ করুন। ব্রিদিং এক্সারসাইজের সময় মনকে একাগ্রভাবে নিজের শ্বাস-প্রশ্বাসের ওপর নিবিষ্ট করুন। গভীরভাবে শ্বাস নিয়ে ধীরে ধীরে ছাড়ূন। এ সময় মন থেকে অন্যসব ভাবনা সরিয়ে দিন। দিনে দু'বার এভাবে শ্বাস নিন। ধীরে ধীরে অভ্যাস গড়ে ওঠে আপনাকে মানসিক অবসাদমুক্ত থাকতে সাহায্য করবে। সচেতনতার গভীরে আপনি অনায়াসে পৌঁছে যেতে পারবেন। যে কোনো বিষয়ে উত্তেজিত হওয়ার আগে আপনি বিষয়টির ব্যাখ্যা করতে পারবেন।

নিয়মিত ব্যায়াম করুন

আমাদের মনের ভেতর প্রতিদিন অসংখ্য অবসাদ জমা হয়। জীবনযাপনের প্রয়োজনে আমরা তার অনেকটাই অবদমিত করে রাখি। প্রতিদিন ৩০ মিনিটের ব্যায়ামই অবসাদ ঝেড়ে ফেলতে সাহায্য করে। শরীরকে ছাড় দেবেন না। শুইয়ে-বসিয়ে রাখলে শরীরের আলস্য মনের মধ্যে হানা দেবেই। ব্যায়ামের মাধ্যমে শরীর যতটা সক্রিয় হয়ে ওঠে, ততটা আর অন্য কিছুতে হয় না। দৈনন্দিন রুটিনে ফিটনেসের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত রাখুন। হাঁটা, জগিং, স্ট্রেচিং, ইয়োগা যা হোক কিছু একটা করুন। এতে রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক থাকবে, যা শরীরের কোষ ও ত্বকে বেশি পুষ্টি জোগান দেবে। ব্যায়াম ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। ফলে অনেক বেশি অক্সিজেন নেওয়া সম্ভব হয়, যা মানসিক চাপ কমায় এবং বয়সকালীন অনেক রোগ প্রতিহত করে।

ভালো কাজে মন

সারাদিন কী করলেন দিন শেষে কখনও কি তা ভেবে দেখেছেন? না করলে আজ থেকেই শুরু করুন। পছন্দমতো একটি ডায়েরি নিন। রাতে বসে সারাদিন যেসব কাজ করতে আপনার ভালো লেগেছে তার তালিকা করে ফেলুন। ভালো লাগার কারণগুলো উল্লেখ করুন। এ তালিকা মানসিকভাবে চাপের সময় আপনাকে চাঙ্গা করে দেবে। নিজের ওপর আপনার বিশ্বাস ফিরে আসবে। আপনি বুঝতে পারবেন খারাপ সময় দীর্ঘস্থায়ী হয় না। কীভাবে নিজেকে গুছিয়ে নিতে হয় তাও জেনে যাবেন আপনি। অনেক মন্দের ভিড়ে কীভাবে ভালোকে খুঁজে নিতে হয় তাও বুঝতে পারবেন আপনি। আর এ আনন্দের প্রতিচ্ছবি পড়বে আপনার মুখশ্রীতে।

বিকল্প নেই ঘুমের

স্ট্রেস কাটাতে ঘুমের বিকল্প নেই। ডাক্তারই বলুন কিংবা বিউটিশিয়ান, সবাই এ বিষয়ে একমত। যতটা ঘুমালে শরীর ঝরঝরে লাগে ততটা ঘুম নিশ্চিত করুন। রাতে পর্যাপ্ত ঘুম হলে শরীর তরতাজা হয়ে উঠবে। প্রচুর প্রাণশক্তি পরবর্তী দিনটিতে আপনাকে আরও কর্মক্ষম করে তুলবে। ঘুমকে বলা হয় বিনামূল্যে এবং সহজে পাওয়া যায় এমন কসমেটিক মেডিসিন।

নিজেকে সময় দিন

সময়ের চাকায় আমাদের সবার জীবনই বাঁধা পড়ে গেছে। চেষ্টা করুন ব্যস্ততার এ দৈনন্দিন রুটিনের মধ্যেও নিজের জন্য কিছু সময় ব্যয় করতে। চলে যান কোনো নিরিবিলি কোনোখানে কিংবা সকালে বা রাতে ১০-১৫ মিনিট বাড়ির বারান্দায় বসুন। গাছপালা দিয়ে সাজিয়ে নিন ঘরের কোনো একটা কোণ। বসা যেতে পারে সেখানেও। নিজের সঙ্গে এ দেখা-সাক্ষাতের সুযোগটুকু আপনার একঘেয়েমি কাটিয়ে দেবে। এ একাকিত্ব আপনার সামনে উপলব্ধির এক নতুন জগৎ খুলে দেবে। যে কোনো বিষয় বুঝতে, নতুন করে ভাবতে পারবেন। নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হবে আপনার সামনে।

জীবনযাপনের সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়া আপনাকে সুসংগঠিত করবে। মানসিক চাপ কমিয়ে ফেলবে। আর এর সুফল ভোগ করবে আপনার ত্বক। আপনি পারবেন বয়সকে লুকিয়ে রাখতে পারেন।

© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩

সম্পাদক : মোজাম্মেল হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ

টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com