
প্রতিমন্ত্রীর আত্মীয় বলে কথা
প্রকাশ: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০ । ২২:৫৬
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার থানাহাট এইউ পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে এসএসসি বাংলা দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষায় অনৈতিক সুবিধা না দেওয়ায় কক্ষ পরিদর্শক চায়না বেগমকে গালাগালসহ চাকরিচ্যুত ও হাত কেটে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন এক পরীক্ষার্থীর বাবা এনামুল হক। হামলার আশঙ্কায় পরীক্ষা শেষ হওয়ার বেশ কিছু সময় পর ওই শিক্ষিকাকে পুলিশ পাহারায় থানাহাট ইউনিয়নের শান্তিনগর এলাকায় তার বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়। মঙ্গলবার এ ঘটনা ঘটে।
এনামুল হক সম্পর্কে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেনের স্ত্রীর বড় ভাই। তিনি চিলমারীর থানাহাট ইউনিয়নের দাওয়াইটারী এলাকার অধিবাসী এবং পেশায় ব্যবসায়ী।
এদিকে, ঘটনা তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তাহের আলীকে সভাপতি এবং সমাজসেবা কর্মকর্তা লুৎফর রহমান ও উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা জাহেদুল ইসলামকে সদস্য করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছেন উপজেলা পরীক্ষা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও ইউএনও এ ডব্লিউ এম রায়হান শাহ।
ঘটনার শিকার কক্ষ পরিদর্শক ও চিলমারী উচ্চ বিদ্যালয়ের 'কম্পিউটার' বিষয়ের শিক্ষিকা চায়না বেগম বলেন, এনামুল হকের মেয়ে অর্পিতা থানাহাট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের মানবিক বিভাগের পরীক্ষার্থী হিসেবে থানাহাট এইউ পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের ১২ নম্বর কক্ষে পরীক্ষা দিচ্ছে। মঙ্গলবার পরীক্ষার নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার পরও ওই পরীক্ষার্থী উত্তরপত্র জমা না দিয়ে লিখতে থাকে। ফলে অন্য পরীক্ষার্থীরাও অর্পিতার মতো সময় দাবি করে। এ সময় হৈচৈ শুনে কেন্দ্রে ট্যাগ অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালনরত সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা জাহেদুল ইসলাম ওই কক্ষে এসে উত্তরপত্র নিতে বলেন। তখন তার উপস্থিতিতে সবার উত্তরপত্র নেওয়া হয়। এতে অর্পিতা ক্ষিপ্ত হয়ে দোতলার বারান্দা থেকে চিৎকার করে তার বাবাকে ডেকে আনে। এনামুল হক কক্ষে এসে অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল করার পাশাপাশি চাকরিচ্যুত ও হাত কেটে নেওয়ার হুমকি দেন।
তিনি আরও বলেন, বুধবার দুপুরে তার প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক তাকে এ ঘটনার সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত পরবর্তী পরীক্ষাগুলোতে কক্ষ পরিদর্শকের দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকতে বলেছেন।
থানাহাট এইউ পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্র সচিব শেফাউন নাহার বলেন, উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে তা শান্ত করার পর ওই কক্ষ পরিদর্শককে সরিয়ে আনা হয়। অভিভাবক এনামুল হক ঘটনাটি ঠিক করেননি বলে তাকে জানিয়েছি।
প্রসঙ্গত, শেফাউন নাহার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেনের বড় বোন।
এ বিষয়ে এনামুল হকের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি দাবি করেন, পরীক্ষা শেষে উত্তরপত্র রিভাইসড দেওয়ার সুযোগ না দিয়ে তা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এ জন্য ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে কেন্দ্র সচিবের কাছে অভিযোগ করেছি। এ ছাড়া কোনো ঘটনা ঘটেনি। যে অভিযোগগুলো করা হচ্ছে, তা মিথ্যা ও বানোয়াট।
এ প্রসঙ্গে ইউএনও এ ডব্লিউ এম রায়হান শাহ বলেন, তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩
সম্পাদক : আলমগীর হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ
টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com