
আইনশৃঙ্খলা
পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু বাড়ছে কেন
প্রকাশ: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০ । ০১:১৮ | প্রিন্ট সংস্করণ
--
থানা হেফাজত কিংবা পুলিশ হেফাজত সাধারণ মানুষের ভরসার জায়গা, সেখানে অপরাধীরাও নিরাপদ থাকবেন, এটাই প্রত্যাশিত। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে পুলিশ হেফাজতে মৃত্যুর অঘটন যেভাবে বাড়ছে, তাতে ভরসার সেই কাচের দেয়ালটিও যেন ভেঙে পড়ছে। বুধবার সমকালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থেকে আটক এক নারী মঙ্গলবার ওই থানা হেফাজতে থাকা অবস্থায় মারা গেছেন। আমাদের মনে আছে, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি গাজীপুরেও একই ধরনের অঘটন ঘটেছিল। জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা হেফাজতেও এক আসামির মৃত্যু ঘটেছিল। প্রথম দুটি ক্ষেত্রে পুলিশ মৃত্যুর কারণ হিসেবে অসুস্থতা এবং তৃতীয়টির ক্ষেত্রে 'আত্মহত্যা' বলে দাবি করলেও স্বজনরা অভিযোগ করছেন, পুলিশি নির্যাতনেই তাদের প্রাণহানি ঘটেছে। আমরাও মনে করি, এভাবে 'অসুস্থতাজনিত' মৃত্যু যেমন অস্বাভবিক, তেমনই অগ্রহণযোগ্য। কারণ যে অভিযোগেই আটক বা গ্রেপ্তার করা হোক না কেন, আদালতে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত তার সব ধরনের আইনি সুযোগ পাওয়ার অধিকার রয়েছে। বিধিমতো আটকের সময়ই বা পরপরই পুলিশের পক্ষে সংশ্নিষ্ট ব্যক্তির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা উচিত। যদি শারীরিক বা মানসিক অসুস্থতা থেকেই থাকে, তবে থানায় হেফাজতে না রেখে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নেওয়া দরকার।
আলোচ্য তিন ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, আটকদের সঙ্গে তাদের স্বজনদেরও দেখা করতে দেওয়া হয়নি। বিশেষত মোহাম্মদপুরে পুলিশ হেফাজতে মৃত নারীর মৃতদেহও দেখতে দেওয়া হয়নি বলে স্বজনরা অভিযোগ করছেন। এই চিত্র কোনোভাবেই সন্তোষজনক হতে পারে না। মনে রাখতে হবে, আটক ও হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদের ক্ষেত্রে উচ্চ আদালতের সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। আমরা দেখতে চাই, আসামি বা অভিযুক্ত আটক বা গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে পুলিশ আরও সতর্ক হবে। আইন ও নিয়ম মেনে চলবে। একই সঙ্গে আলোচ্য তিন মৃত্যুর ক্ষেত্রে কারও ঔদাসীন্য বা অতি উৎসাহ কাজ করেছে কি-না, তাও তদন্ত করে দেখতে হবে। নিছক তদন্ত নয়, দায়ীদের বিরুদ্ধে নিতে হবে ব্যবস্থাও। অন্যথায় এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু আমাদের আরও দেখতে হবে।
© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩
সম্পাদক : মোজাম্মেল হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ
টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com