অভয়নগরে যুব মহিলালীগ নেত্রীর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ, বহিষ্কার দাবি

প্রকাশ: ০২ মার্চ ২০ । ০০:২২

সমকাল ডেস্ক

যশোরের নওয়াপাড়া পৌর যুব মহিলা লীগের সভাপতি ও অভয়নগর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মিনারা পারভীনের বিরুদ্ধে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের হয়রানি, সংখ্যালঘু নির্যাতন, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ভাংচুরসহ বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছে।

তার এসব কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে রোববার নওয়াপাড়া পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ ও প্রেমবাগ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে। এতে মিনারা পারভীনকে দল থেকে বহিষ্কার ও তার শাস্তির দাবি জানান আওয়ামী লীগ নেতারা।

নওয়াপাড়া পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি আলী হায়দারের সভাপতিত্বে চেঙ্গুটিয়া বাজারে ওই প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন- সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আকরাম আলী গাজী, প্রেমবাগ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সরদার বাবুল আক্তার, সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম মিলন, আওয়ামী লীগ নেতা মিজানুর রহমান মোল্লা, শেখ নজরুল ইসলাম, শ্রমিক লীগ নেতা মনোয়ার হোসেন, পৌর কাউন্সিলর আব্দুল গফ্‌ফার বিশ্বাস, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সম্পাদক শফি কামাল, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা উজ্জল কুন্ডু, বিশ্বজিৎ সরকার, চেঙ্গুটিয়া বাজার কমিটির সভাপতি আবু জাফর ও মহাকাল পাইলট স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক অভিভাবক সদস্য অরবিন্দু ঘোষ প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, মিনারা পারভীন চেঙ্গুটিয়া বাজারে প্রশান্ত শীলের পুকুর জোরপূর্বক ভরাট করে নিজ বাড়ির রাস্তা নির্মাণ করেছেন। অটল শীল, দিনুশীলের গাছ কেটে কেটেছেন। জোর করে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সামনে খাম্বা পুঁতে নিতাই সাহা ও কয়েকজনের বাড়ির ওপর দিয়ে নিজ বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়েছেন। এমন আরও নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। এর আগে বালিয়াডাঙ্গা গ্রামে আতিয়ার রহমান মোল্লার বাড়ির জমি দখল করিয়ে প্রতিবেশীর রাস্তা নির্মাণে সরাসরি ইন্দন দেন মিনারা পারভীন। এ নিয়ে আদালতে মামলা চলছে।

যুব মহিলা লীগ নেত্রী মিনারা পারভীনের রোববার নওয়াপাড়ায় বিক্ষোভ সমাবেশ হয়। ছবি: সমকাল

তারা আরও বলেন,বহিরাগতদের সমাগম ঘটিয়ে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টির পায়তারা চালাচ্ছে মিনারা পারভীন। তার বিরুদ্ধে গত ১৫ ও ১৭ ফেব্রুয়ারি চেঙ্গুটিয়া বাজারে ভাড়াটিয়া গুণ্ডা নিয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ ওঠে। এর আগে গত ১২ ফেব্রুয়ারি ওই বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ খান এ মজলিস ওই জায়গা বিদ্যালয়ের মর্মে এক সপ্তাহের মধ্যে দোকান সরিয়ে নিতে নোটিশ দেন। কিন্তু নোটিশের প্রাপ্তির দুই দিন যেতে না যেতেই বিএনপি-জামায়াত ক্যাডার রাজু সরদার, মুজাহিদ হোসেন ও ইকরাম হেসেন, আলী হোসেনসহ আরও কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে ওই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর চালান মিনারা পারভীন। বিষয়টি নিয়ে আদালতে মামলা চলছে। তবে অভিযুক্তরা এখনও প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে।  

বক্তারা বলেন, স্কুলের জমিতে ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলে বাণিজ্যিক অবকাঠামো গড়ে তুলতে তিনি এ হামলা চালান। স্কুলে নানা অনিয়মের সঙ্গে তার নাম জড়িয়ে আছে। যশোর শিক্ষাবোর্ডেও তার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ জমা আছে। এরপরও অদৃশ্য শক্তির জোরে সব অনিয়ম জায়েজ করে এলাকায় ত্রাস চালাচ্ছেন। হামলা-আক্রমণ, মামলার ভয়ে তার বিরুদ্ধে এলাকায় কেউ কথা বলতে সাহস পান না।

প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করেন, মিনারা পারভীন মহাকাল পাইলট স্কুল অ্যান্ড কলেজকে ব্যক্তিস্বার্থে ব্যবহার করছেন। প্রতিষ্ঠানের জমি উদ্ধারের নামে বাণিজ্যিক প্রজেক্ট বানিয়ে সেখানে স্বজনপ্রীতি করে নিজের মামাকে বিভিন্ন অনৈতিক সুবিধা দিচ্ছেন। সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষের কক্ষে প্রভাব খাটিয়ে নিজের নির্বাচনী পোস্টার পর্যন্ত সাঁটিয়ে রেখেছেন।

© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩

সম্পাদক : মোজাম্মেল হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ

টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com