
প্রকাশ্যে পপি চাষ
দুঃসাহস বটে!
প্রকাশ: ১০ মার্চ ২০ । ০১:২৪ | প্রিন্ট সংস্করণ
--
আফিম, হেরোইনসহ নানা ধরনের মাদকদ্রব্য যে পপি থেকে তৈরি হয়, সেটি যেভাবে রাজধানীর উপকণ্ঠে প্রকাশ্যে চাষ হওয়ার খবর সংবাদমাধ্যমে এসেছে, তাতে আমরা উদ্বিগ্ন না হয়ে পারি না। আমরা আরও বিস্মিত যে, 'পপি চাষে জড়িত তিন ইউপি সদস্য।' গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রোববার মুন্সীগঞ্জে ভ্রাম্যমাণ আদালতের দল অভিযান চালিয়ে পপি চাষের যে বিপুল পরিমাণ আলামত জব্দ করে, তাকে আমরা স্বাগত জানাই। যদিও অভিযানের আগেই খবর পেয়ে রোপণ করা বেশিরভাগ পপি গাছ নষ্ট করে ইউপি সদস্য খোরশেদ মাঝি, মিজানুর রহমান ও স্বপন দেওয়ানসহ তাদের সহযোগীরা পালাতে সক্ষম হয়। এটা স্পষ্ট যে, নিষিদ্ধ পপি চাষের সঙ্গে স্থানীয় প্রভাবশালীরাই জড়িত। এমনকি সমকালের আলোচ্য প্রতিবেদনে এসেছে, অভিযুক্তদের অন্তত একজনের বিরুদ্ধে মাদক, বিস্ম্ফোরক দ্রব্য আইনসহ একাধিক মামলাও রয়েছে।
সাধারণত নিষিদ্ধ এ পপি দুর্গম এলাকায় চাষ হয়। অভিযোগ আছে, মিয়ানমার থেকে বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠী বাংলাদেশের উপজাতীয়দের ব্যবহার করে পপি চাষ করে থাকে। দেশের বিভিন্ন স্থানে গোপনে পপি চাষের অভিযোগও রয়েছে। পপি চাষ যেভাবে দেশের অন্যান্য জায়গায় বিস্তৃত হচ্ছে, তাতে প্রশাসনের আরও তৎপর হওয়া প্রয়োজন। পপি চাষ ছড়িয়ে পড়লে মাদকও সহজলভ্য হয়ে যাবে; সে ক্ষেত্রে আমাদের প্রজন্ম রক্ষা কঠিন হয়ে পড়বে। আমরা মনে করি, সরকার মাদকের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযান ইতোমধ্যে সম্পন্ন করলেও এ ব্যাপারে শূন্য সহিষুষ্ণতা এখনও চলমান। বাংলাদেশ অবস্থানগতভাবে মাদকের গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গল তথা মিয়ানমার, থাইল্যান্ড ও লাওস এবং গোল্ডেন ক্রিসেন্ট তথা আফগানিস্তান, ইরান ও পাকিস্তানের মধ্যবর্তী অঞ্চল বলে মাদকের ঝুঁকি এখানে বেশি। তার ওপর যদি পপি চাষ বন্ধ করা না যায়, তাহলে দেশকে সহজে মাদকমুক্ত করা সম্ভব হবে না।
আমরা চাই, মুন্সীগঞ্জে পপি চাষের ঘটনায় তদন্ত করে জড়িতদের বের করা হোক। সেখানে মামলার কথাও বলেছে সংশ্নিষ্ট থানা পুলিশ। ফলে আইনগতভাবেও অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করা সম্ভব। প্রভাবশালী বলে তারা যেন ছাড় না পায়। প্রকাশ্যে পপি চাষের মতো ধৃষ্টতা যারা দেখাতে পারে, তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতেই হবে।
© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩
সম্পাদক : মোজাম্মেল হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ
টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com