
আমাজনের আগুন নিভেছে, নেভেনি
প্রকাশ: ১১ জুন ২০ । ১০:৩০ | আপডেট: ১১ জুন ২০ । ১১:৫৫
অনলাইন ডেস্ক

নিশ্চিহ্ন সবুজ, তৃষ্ণার্ত আরমাডিলো
মহাবন আমাজনের অসংখ্য প্রাণীর মধ্যে ছোট্ট একটি প্রাণী আরমাডিলো। বড় আয়েশি প্রাণী সে। দিনে ১৬ ঘণ্টা ঘুমোয়। বাকি আটঘণ্টা খাবার দাবারের কাজে ব্যয় করে। তারপর আবার ঘুম। অরণ্যের স্যাঁতসেতে জমির মধ্যে গর্ত করে বসবাস করে। কিন্তু বর্মের মতো শক্ত ত্বকে ঢাকা এই প্রাণীটার অস্তিত্ব এখন হুমকির মুখে। বন কেটে চাষবাস শুরু হওয়ায় জমির আর্দ্রভাব কেটে যাচ্ছে। শুকিয়ে যাচ্ছে মাটি। ফলে শুষ্ক পরিবেশে গৃহহীন হয়ে পড়েছে আরমাডিলোরা। খবর রয়টার্সের
কিছুদিন আগে আগুনে পুড়েছে আমাজন। বনপোড়ার সে ভয়াবহ দৃশ্য চঞ্চল করে তুলেছিল পুরো বিশ্বের পরিবেশসচেতন মানুষকে। সেই দৃশ্য গোটা বিশ্বকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। এমন এক সময়েও নির্বিকার ছিলেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জায়ের বলসোনারো। ক্লাবে গিয়ে মনের আনন্দে স্ট্যান্ড-আপ কমেডি উপভোগ করেছেন। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে আগুন নিভলেও আমাজনের বিপদ এখনও কাটেনি। সে আগুন হলো মানুষের ক্ষুধার আগুন। ক্ষুধার আগুন নেভাতে নির্বিচারে কেটে সাফ করে দেওয়া হচ্ছে বন। চাষের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে বনভূমিকে। মানুষের ক্ষুধার আগুন নেভানোর ব্যবস্থা করে উঠতে পারছে না ব্রাজিলের সরকারগুলো। তাই মানুষ বন কেটে উজাড় করে দিচ্ছে।
বন রক্ষা করবে কী, আমাজনের ব্রাজিল অংশে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের নামে সরকারি মদতেই সবুজ ধ্বংস করে চলছে কৃষিকাজ। এর ফলে অস্তিত্ব সংকটের মুখে অরণ্যে বসবাসকারী বিভিন্ন বিরল প্রাণী। আরমাডিলো নামের ছোট্ট ওই প্রাণীটাকে নিয়ে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দারুণ আলোড়ন জাগিয়েছে।
আমাজনে যথেচ্ছ অরণ্য ধ্বংসের ফলে শুধু প্রকৃতি নয়, সেখানকার বাস্তুতন্ত্র ভেঙে পড়েছে। আমাজনের বৃষ্টি অরণ্যে বহু বিপন্ন প্রাণীর বসবাস। অরণ্য ধ্বংসের ফলে তাদের অস্তিত্বও আজ খাদের কিনারায় এসে ঠেকেছে।
সম্প্রতি একটি ৫০ সেকেন্ডের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। এতে দেখা যাচ্ছে, পাশের জমি থেকে উঠে এসে রাস্তার ওপর দাঁড়িয়ে থাকা জলের ট্যাংকার থেকে গড়িয়ে পড়া পানি খাচ্ছে একটি আরমাডিলো। দেখে বোঝা যাচ্ছে, ছোট্ট এই প্রাণীটির কপালে খাবার বা জল কিছুই জোটেনি বহুদিন ধরে।
পরিবেশপ্রেমীদের দাবি, বলসোনারো ক্ষমতায় আসার পর থেকে অরণ্য ধ্বংসের ঘটনা বেড়েছে। বন সাফ করে কৃষিজমি ও চারণভূমি বাড়াতেই ব্রাজিলের 'শিল্পপতি' প্রেসিডেন্টের মদতে এ সব হচ্ছে বলে অভিযোগ তাদের। পরিবেশবিদদের এই অভিযোগ যে অমূলক নয়, তা ব্রাজিলের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা আইএনপিই-র সাম্প্রতিকতম পরিসংখ্যান থেকেই পরিষ্কার। ২০১৯ সালে বনভূমি ধ্বংসের ঘটনা আগের রিপোর্টগুলোর চেয়েও বেশি বলে সাম্প্রতিকতম রিপোর্টে জানিয়েছে এই সংস্থাটি। গত বছর রেইন ফরেস্টটির ১০ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকার সবুজ ধ্বংস করা হয়েছে, যা তার আগের বছরের থেকে ৩৪ শতাংশ বেশি। কিন্তু এসব পরিসংখ্যানে পাত্তা দিচ্ছেন না ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট। বিশ্ব উষ্ণায়নের আশঙ্কা সত্বেও বেপরোয়াভাবে সবুজ ধ্বংসে ইন্ধন দিয়ে চলেছেন তিনি।
© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩
সম্পাদক : আলমগীর হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ
টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com