
‘তিনি ছিলেন সংগীতের এক মহীরুহ’
প্রকাশ: ১২ আগস্ট ২০ । ১২:২৭ | আপডেট: ১২ আগস্ট ২০ । ১২:৩০
রাসেল আজাদ বিদ্যুত

সামিনা চৌধুরী। বরেণ্য কণ্ঠশিল্পী। সম্প্রতি 'ফেরারী পাখি' শিরোনামে একক সংগীতানুষ্ঠানে গান গেয়ে অনেকের প্রশংসা কুড়িয়েছেন। করোনায় অনেক দিন ঘরবন্দি থাকার পর গানের নতুন আয়োজন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন। এ সময়ের ব্যস্ততা ও অন্যান্য প্রসঙ্গ নিয়ে কথা হয় তার সঙ্গে-
কেমন আছেন?
একদম ভালো নেই। ক'দিন আগে এন্ড্রুদা [এন্ড্রু কিশোর] চলে গেলেন। সেই কষ্ট মিলিয়ে যাওয়ার আগেই পেলাম আলী চাচাকে [আলাউদ্দিন আলী] হারানোর খবর। ছোটবেলা থেকে আলী চাচার স্নেহ-ভালোবাসায় বড় হয়েছি। তার সঙ্গে সম্পর্ক রক্তের কিনা- সেটা কেউ জানতে চায়নি, এতটাই কাছের মানুষ হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। শিল্পীজীবন বেছে নেওয়ার পেছনেও তার উৎসাহ ছিল শুরু থেকে। শেখারও সুযোগ হয়েছে অনেক কিছু। সেই কাছের মানুষকে হারানোর কষ্ট যে কী, তা বলে বোঝানো যাবে না। একদিকে তিনি যেমন আমাদের পরিবারের সবার আপনজন, তেমনি ছিলেন সংগীতের এক মহীরুহ। আলাউদ্দিন আলীর গান চিরস্থায়ী।
এবার ভিন্ন প্রসঙ্গে আসি, আপনার একক সংগীতানুষ্ঠান 'ফেরারী পাখি' এতটা সাড়া ফেলবে, তা কি অনুমান করতে পেরেছিলেন?
যখন গান করি, তখন একটা অনুমান হয় যে গানটি শুনলে শ্রোতার ভালো লাগবে কিনা। কিন্তু এটা অনুমান করা কঠিন, একেকটি আয়োজন দর্শক- শ্রোতার কাছে কতটা সাড়া ফেলবে। 'ফেরারী পাখি' অনুষ্ঠানটিও নিয়ে অনুমান করতে পারিনি যে এত সাড়া ফেলবে। কেউ কেউ বলেছেন, অনেক দিন পর প্রত্যাশিত কিছু পেলে যেমন আনন্দ হয়, এই অনুষ্ঠান দেখার পর তাদের এমনই অনুভূত হয়েছে।
বলেছিলেন, স্বাস্থ্য নিরাপত্তা ছাড়া কোনো কাজ করবেন না। এখন যে কাজগুলো করছেন, সেগুলো করতে গিয়ে কি ঝুঁকিপূর্ণ মনে হচ্ছে না?
করোনা-ঝুঁকি তো এখনও আছে। তারপরও ঝুঁকি নিয়ে কিছু কাজ করছি। শ্রোতার সঙ্গে ভালোবাসার সম্পর্ক বলেই দূরে থাকতে পারিনি। সবাই জানেন, যখন কারও সঙ্গে ভালোবাসার সম্পর্ক তৈরি হয়, তখন তাদের ছেড়ে দূরে থাকা সম্ভব হয় না। অনেকের প্রত্যাশা থাকার পরও গত রোজার ঈদে কোনো অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পারিনি। করোনার জন্য সব ধরনের রেকর্ডিং বন্ধ ছিল। নতুন গানের ভিডিও নির্মাণ, প্রকাশ কোনোটাই করা হয়নি। তারপরও কিন্তু ভক্ত-শ্রোতার প্রত্যাশা ফুরিয়ে যায়নি। তাই অনেক দিনের বিরতি ভেঙে নতুন সব আয়োজন করে যাচ্ছি।
কণ্ঠশিল্পীর পাশাপাশি উপস্থাপনায় আপনাকে নিয়মিত দেখা যাবে?
আমি উপস্থাপক নই, তাই উপস্থাপনায় নিয়মিত দেখা যাবে এমন সম্ভাবনাও নেই। 'তারকা কথন' উপস্থাপনা নিয়ে যা হয়েছে, তাকে দুর্ঘটনা বলব।
প্রথম হলেও আপনার উপস্থাপনা সাবলীল ছিল- এমন কথা বলেছেন অনেকে। এ নিয়ে আপনার কী মত?
সব কাছের বিচারক তো দর্শক-শ্রোতা। তাদের যদি মনে হয়, আমার উপস্থাপনা সাবলীল ছিল, তাহলে মনে করব, উপস্থাপনায় পাস মার্ক পেয়েছি। এটা ঠিক যে, শুরুতে একটু নার্ভাস ছিলাম। পরে যখন শ্রদ্ধেয় আজাদ রহমানকে নিয়ে বলা শুরু করলাম, তখন ভুলে গেছি, আমি কোনো টিভি সেটে বসে আছি। এ ছাড়া দেশ-বিদেশের অনেকের সঙ্গে কথা বলা, স্মৃতির পাতা মেলে ধরা- সব মিলিয়ে অভিজ্ঞতা মন্দ ছিল না।
নতুন করে কাজে ফিরেছেন। এখন কি অসমাপ্ত কাজগুলো শেষ করার পরিকল্পনা আছে?
নচিকেতার সুরে কয়েকটি গান রেকর্ড করেছি। সেগুলো কীভাবে প্রকাশ পাবে, তা নিয়ে অ্যালবামের সমন্বয়ক, গীতিকার জুলফিকার রাসেলের সঙ্গে কথা বলতে হবে। এর বাইরে কিছু গানের কাজ আছে, সেগুলো শেষ করা জরুরি। পাশাপাশি বাবার [খ্যাতিমান শিল্পী মাহমুদুন্নবী] কালজয়ী গানগুলো নিয়ে 'আমার গানের প্রান্তে' নামে যে ধারাবাহিক অ্যালবামের আয়োজন করছিলাম, তার আরও কিছুটা কাজ এগিয়ে নিতে হবে।
© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩
সম্পাদক : মোজাম্মেল হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ
টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com