
দুঃস্বপ্নের করোনা
পাশে দাঁড়ানোর নতুন ইতিহাস
প্রকাশ: ২৮ অক্টোবর ২০ । ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
--

করোনায় পুরো বিশ্ব যখন বিপর্যস্ত, চিকিৎসা নেই, ঘরবন্দি পুরো পৃথিবী, আয় নেই, ঘরে খাবার নেই- এতসব 'নেই'-এর ভিড়ে মানুষই মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। সংক্রমণের ভয়কে জয় করে, মৃত্যুকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রচনা করেছে মানবিকতার নতুন ইতিহাস। বলা হয়ে থাকে, প্রযুক্তির বেড়াজালে আধুনিক পৃথিবীর মানুষের মধ্যে মনুষ্যত্ব হারিয়ে যাচ্ছে দিন দিন। কিন্তু করোনাকালের বিশ্বজুড়ে লাখো লাখো মানবিকতার গল্প আমাদের নতুন করে ভাবতে সাহায্য করবে।
মানুষ সভ্যতার অন্যতম ভয়াবহ এই সংকটকালে একে অন্যের পাশে দাঁড়িয়েছেন নিজের সাধ্যের পুরোটা দিয়েই। ইতালির কাসনিগোর জুভার্নি বাতিসতার একটি চার্চের ফাদার জুয্যাপো বিআরদালির কথাই যদি বলি। করোনায় আক্রান্ত হয়ে নিজের মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও আরেকজনের জীবন বাঁচানোর নজির সৃষ্টি করেছিলেন তিনি। লাইফ সাপোর্টের সংকট থাকায় ৭২ বছর বয়সী ফাদার তাকে দেওয়া লাইফ সাপোর্ট খুলে অচেনা কম বয়সী এক রোগীকে দেওয়ার নির্দেশ দেন। ওই রোগী তার পরিচিত কেউ নন। তার কয়েক দিনের মধ্যে বিআরদালির মৃত্যু ঘটে।
ভারতের অল্প্রব্দ প্রদেশের ছোট্ট ছেলেটির কথাই যদি বলি, নিজের তিল তিল করে জমানো মাত্র ৯৭১ রুপি সে তুলে দিয়েছিল করোনাভাইরাস আক্রান্ত দুর্গতদের চিকিৎসার স্বার্থে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশ নেওয়া ব্রিটেনের শতবর্ষী বৃদ্ধ ক্যাপ্টেন টম মোরে ১০০ বার নিজের বাড়ির সীমানা প্রদক্ষিণ করেছিলেন করোনায় আক্রান্তদের জন্য চাঁদা তুলতে। বিশ্বময় আলোড়ন তোলা এই ঘটনায় ক্যান্স্যার আক্রান্ত মানুষটির এই উদ্যোগে মানুষ বাড়িয়ে দেয় সাহায্যের হাত। প্রথমে মাত্র এক হাজার পাউন্ড অর্থ সংগ্রহের লক্ষ্য থাকলেও শেষ পর্যন্ত টাকা ওঠে প্রায় ১৮ মিলিয়ন পাউন্ড, বাংলাদেশি টাকায় যা ২০০ কোটি টাকার মতো। এই টাকা ব্যয় করা হয় করোনাযুদ্ধে নিয়োজিত স্বাস্থ্যকর্মীদের সেবার জন্য।
করোনার লকডাউন চলাকালে মানুষের সাহায্যে পথে নেমেছেন মানুষই। নিজের পদ-পরিচয়-পেশা আর অবস্থান ভুলে সবাই সবার পাশে ছিলেন। করোনায় মৃত্যুবরণ করা মানুষগুলোর দাফন কিংবা শেষকৃত্য অনুষ্ঠান হয়নি সংক্রমণের ভয়ে। এসব মানুষ পায়নি তার স্বজনদের শেষ বিদায়টুকু। তাদের পাশে ছিল করোনার ভয়কে জয় করা লাখো স্বেচ্ছাসেবক।
বাংলাদেশের কথাই যদি বলা হয়, সরকারি সাহায্যের বাইরে অসংখ্য প্রতিষ্ঠান দেশের কর্মহীন হয়ে পড়া দরিদ্রদের খাবার, স্বাস্থ্যসেবা সরঞ্জাম পৌঁছে দিয়েছে ঘরে ঘরে। কেউ কেউ রান্না করা খাবার বিতরণ করেছে, কেউ দিয়েছে চাল-ডাল-তেল-আলু-লবণের মতো প্রধান খাবারগুলো। প্রতিষ্ঠানের বাইরে ব্যক্তি উদ্যোগে করোনায় অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর গল্পগুলো একে একে লিখে শেষ করতে যাওয়ার দুঃসাধ্য সাহস দেখাতে পারবে না কেউ। ছাত্রছাত্রীরা নিজেরা চাঁদা তুলে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে অসহায়দের সাহায্য বিলিয়েছে। আইন-প্রশাসনের কর্মীরা নিজেদের জীবনবাজি রেখে, পরিবার-পরিজন ঘরে রেখে দিনরাত একাকার করে জনসাধারণকে সব ধরনের সাহায্য দিয়েছেন দিনের পর দিন। ঘরে ঘরে খাবার পৌঁছে দেওয়া, বাজার পৌঁছে দেওয়া, অসুস্থ রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া, করোনায় মৃত ব্যক্তির দাফনের ব্যবস্থা করাসহ সব কাজেই তারা ছিলেন মানুষের পাশে।
করোনাকালে সবই যখন ছিল স্তব্ধ, বেঁচে থাকার আপ্রাণ চেষ্টায় মানুষ ভুলতে বসেছিল সামাজিকতার সব নিয়ম, ঘরে বন্দিই জীবনই যেন হয়ে উঠেছিল চরম নিয়তি- তখনই মানুষ একে অন্যের পাশে দাঁড়িয়ে অতীতের মতোই। নতুন কালের এই নতুন মহামারি আমাদের হারিয়ে যাওয়া মানবিকতাকে পুনরুজ্জীবিত করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য ইতিহাসের পাতায় লিখে রাখল মানবিকতার হাজারো নতুন গল্প।
মানুষ সভ্যতার অন্যতম ভয়াবহ এই সংকটকালে একে অন্যের পাশে দাঁড়িয়েছেন নিজের সাধ্যের পুরোটা দিয়েই। ইতালির কাসনিগোর জুভার্নি বাতিসতার একটি চার্চের ফাদার জুয্যাপো বিআরদালির কথাই যদি বলি। করোনায় আক্রান্ত হয়ে নিজের মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও আরেকজনের জীবন বাঁচানোর নজির সৃষ্টি করেছিলেন তিনি। লাইফ সাপোর্টের সংকট থাকায় ৭২ বছর বয়সী ফাদার তাকে দেওয়া লাইফ সাপোর্ট খুলে অচেনা কম বয়সী এক রোগীকে দেওয়ার নির্দেশ দেন। ওই রোগী তার পরিচিত কেউ নন। তার কয়েক দিনের মধ্যে বিআরদালির মৃত্যু ঘটে।
ভারতের অল্প্রব্দ প্রদেশের ছোট্ট ছেলেটির কথাই যদি বলি, নিজের তিল তিল করে জমানো মাত্র ৯৭১ রুপি সে তুলে দিয়েছিল করোনাভাইরাস আক্রান্ত দুর্গতদের চিকিৎসার স্বার্থে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশ নেওয়া ব্রিটেনের শতবর্ষী বৃদ্ধ ক্যাপ্টেন টম মোরে ১০০ বার নিজের বাড়ির সীমানা প্রদক্ষিণ করেছিলেন করোনায় আক্রান্তদের জন্য চাঁদা তুলতে। বিশ্বময় আলোড়ন তোলা এই ঘটনায় ক্যান্স্যার আক্রান্ত মানুষটির এই উদ্যোগে মানুষ বাড়িয়ে দেয় সাহায্যের হাত। প্রথমে মাত্র এক হাজার পাউন্ড অর্থ সংগ্রহের লক্ষ্য থাকলেও শেষ পর্যন্ত টাকা ওঠে প্রায় ১৮ মিলিয়ন পাউন্ড, বাংলাদেশি টাকায় যা ২০০ কোটি টাকার মতো। এই টাকা ব্যয় করা হয় করোনাযুদ্ধে নিয়োজিত স্বাস্থ্যকর্মীদের সেবার জন্য।
করোনার লকডাউন চলাকালে মানুষের সাহায্যে পথে নেমেছেন মানুষই। নিজের পদ-পরিচয়-পেশা আর অবস্থান ভুলে সবাই সবার পাশে ছিলেন। করোনায় মৃত্যুবরণ করা মানুষগুলোর দাফন কিংবা শেষকৃত্য অনুষ্ঠান হয়নি সংক্রমণের ভয়ে। এসব মানুষ পায়নি তার স্বজনদের শেষ বিদায়টুকু। তাদের পাশে ছিল করোনার ভয়কে জয় করা লাখো স্বেচ্ছাসেবক।
বাংলাদেশের কথাই যদি বলা হয়, সরকারি সাহায্যের বাইরে অসংখ্য প্রতিষ্ঠান দেশের কর্মহীন হয়ে পড়া দরিদ্রদের খাবার, স্বাস্থ্যসেবা সরঞ্জাম পৌঁছে দিয়েছে ঘরে ঘরে। কেউ কেউ রান্না করা খাবার বিতরণ করেছে, কেউ দিয়েছে চাল-ডাল-তেল-আলু-লবণের মতো প্রধান খাবারগুলো। প্রতিষ্ঠানের বাইরে ব্যক্তি উদ্যোগে করোনায় অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর গল্পগুলো একে একে লিখে শেষ করতে যাওয়ার দুঃসাধ্য সাহস দেখাতে পারবে না কেউ। ছাত্রছাত্রীরা নিজেরা চাঁদা তুলে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে অসহায়দের সাহায্য বিলিয়েছে। আইন-প্রশাসনের কর্মীরা নিজেদের জীবনবাজি রেখে, পরিবার-পরিজন ঘরে রেখে দিনরাত একাকার করে জনসাধারণকে সব ধরনের সাহায্য দিয়েছেন দিনের পর দিন। ঘরে ঘরে খাবার পৌঁছে দেওয়া, বাজার পৌঁছে দেওয়া, অসুস্থ রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া, করোনায় মৃত ব্যক্তির দাফনের ব্যবস্থা করাসহ সব কাজেই তারা ছিলেন মানুষের পাশে।
করোনাকালে সবই যখন ছিল স্তব্ধ, বেঁচে থাকার আপ্রাণ চেষ্টায় মানুষ ভুলতে বসেছিল সামাজিকতার সব নিয়ম, ঘরে বন্দিই জীবনই যেন হয়ে উঠেছিল চরম নিয়তি- তখনই মানুষ একে অন্যের পাশে দাঁড়িয়ে অতীতের মতোই। নতুন কালের এই নতুন মহামারি আমাদের হারিয়ে যাওয়া মানবিকতাকে পুনরুজ্জীবিত করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য ইতিহাসের পাতায় লিখে রাখল মানবিকতার হাজারো নতুন গল্প।
© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩
সম্পাদক : মোজাম্মেল হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ
টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com