কালিয়াকৈর

বনের জমিতে গরুর খামার ও মাদ্রাসা

প্রকাশ: ০৩ নভেম্বর ২০ । ০০:০০ | আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০ । ০৯:১৩ | প্রিন্ট সংস্করণ

এম তুষারী, কালিয়াকৈর (গাজীপুর)

কালিয়াকৈরে ওলামা পরিষদের সভাপতি মুফতি এমদাদুল হকের বনের জমিতে নির্মিত মাদ্রাসার একাংশ-সমকাল

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকায় বনের জমিতে একটি গরুর ফার্ম ও মাদ্রাসা গড়ে তোলার অভিযোগ উঠেছে ওলামা পরিষদের সভাপতি মুফতি এমদাদুল হকের বিরুদ্ধে।

সোমবার সকালে ওই মাদ্রাসায় গিয়ে জানা গেছে, দু'দিকে বনের জমি রয়েছে। মাঝখানে প্রায় ৫০-৬০ শতাংশ জমির ওপর খেলার মাঠ রয়েছে। পূর্ব পাশে তিনতলা পাকা বিল্ডিং, যেখানে ক্লাস ও প্রশাসনিক কার্যক্রম চালানো হয়। উত্তর পাশে সেমিপাকা টিনশেড সে ঘরটির ৩-৪ ফুট বনের জমির ওপর গড়ে উঠেছে। তবে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ বিষয়টি অস্বীকার করেছে। ওই টিনশেডের পেছনে বনের জমিতে কয়েকটি রান্নাঘর আর পশ্চিম পাশে একটি গরুর ফার্ম গড়ে তোলা হয়েছে।

এ বিষয়ে মুফতি এমদাদুল হকের ছোট ভাই মাওলানা আশরাফুল ইসলাম জানান, রান্নাঘর ও গরুর ফার্ম বনের জমিতে রয়েছে। তবে উত্তর পাশের ঘর বনের জমিতে কিনা তা বড় ভাই মুফতি এমদাদুল হক জানাতে পারেন।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, বনের জমি দখল করে গরুর খামার, বসতবাড়ি নির্মাণ, দোকানপাট নির্মাণ, মাদ্রাসার ছাত্র দিয়ে গাড়ি ভাঙচুর, জোরপূর্বক অন্যের জমির ওপর দিয়ে রাস্তা নির্মাণ, ছাত্রলীগ নেতা ও শিক্ষককে মারধর, দোকানদারদের মারধরসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন মুফতি এমদাদুল হক। তিনি কালিয়াকৈর উপজেলার ডাইনকিনি এলাকার সিরাজুল ইসলাম ওরফে খোদা বক্সের ছেলে। তিনি উপজেলার চন্দ্রা এলাকার দারুল উলুম মাহামুদনগর মাদ্রাসার প্রিন্সিপালের দায়িত্ব পালন করছেন। তার নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে অপর দুই ভাই মাওলানা লিয়াকত ও মাওলানা আশরাফুল ইসলামকে এবং মাদ্রাসার ছাত্রদের ব্যবহার করে থাকেন।

গত ২০ অক্টোবর কালিয়াকৈর পৌর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল মামুন (সবুজ) ও তার চাচা জাতির পিতা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারী শিক্ষক মো. আখতার হোসেনের জমির ওপর দিয়ে জোরপূর্বক রাস্তা নির্মাণ করতে যান চন্দ্রা দারুল উলুম মাহামুদনগর মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা এমদাদুল হক।

গত ১২ আগস্ট রাত ৯টার দিকে এমদাদুল হকের নেতৃত্বে তার ভাই ইয়াকুব, মোহাম্মদ আলী, আশরাফুল ইসলাম এবং লিয়াকত সংঘবদ্ধভাবে তাদের ছোট ভাই ইছহাকের স্ত্রী সুমিকে এলোপাতাড়িভাবে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন। পরে অজ্ঞান অবস্থায় অন্যত্র ফেলে রেখে চলে যান তারা। এ ঘটনায় কালিয়াকৈর থানায় সুমি বাদী হয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, এ ঘটনায় সুমি বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ সিরাজগঞ্জ আদালতে তাদের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। মুফতি এমদাদুল হক মাদ্রাসাকে পুঁজি করে প্রায় এক একর বনের জমিতে থাকা শত শত গজারি গাছ কেটে জমি দখল করে বসতবিটা, গরুর খামার ও বেশ কয়েকটি দোকান গড়ে তুলেছেন বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেন। চন্দ্রার দারুল উলুম মাহামুদনগর মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল ও ওলামা পরিষদের

সভাপতি মুফতি এমদাদুল হক বলেন, আমি বনের জমিতে কোনো স্থাপনা করিনি। তবে গরুর ফার্ম ও রান্নার জায়গাটি বনের জমিতে পড়তে পারে। এতে প্রতিপক্ষ আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা একটি দুঃখজনক বিষয়।

চন্দ্রা বিট কর্মকর্তা মঞ্জুরুল ইসলাম জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যদি বনের জমিতে অবৈধ স্থাপনা করা হয়ে থাকে, তাহলে ভেঙে দেওয়া হবে।

© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩

সম্পাদক : মোজাম্মেল হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ

টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com