আসছে বিজয় দিবসে মেট্রোরেল চালুর আশা পরিকল্পনামন্ত্রীর

প্রকাশ: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২১ । ২২:৩৭

সমকাল প্রতিবেদক

স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পূর্তি উপলক্ষে আসছে বিজয় দিবসে মেট্রোরেলের উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত অংশ যাতায়াতের জন্য খুলে দেওয়ার আশা প্রকাশ করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি বলেছেন, স্বাধীনতা দিবসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে এটা হবে অন্যতম উপহার।

মেট্রোরেলের উত্তরা অংশের কাজের অগ্রগতি সরেজমিনে পরিদর্শন শেষে বুধবার এ প্রত্যাশার কথা জানান মন্ত্রী। মেট্রোরেলের ভাড়া যাত্রীপ্রতি কতো টাকা হবে তা নিয়ে কাজ করছে এ সংক্রান্ত কমিটি। আগামী মাসের মধ্যেই ভাড়া নির্ধারণ করে সুপারিশ জমা দেবে কমিটি। 

তবে আসছে বিজয় দিবসে মেট্রোরেল চালুর বিষয়ে মন্ত্রীর প্রত্যাশা পূরণ হওয়া নিয়ে সংশয় রয়েছে। সরেজমিনে মেট্রোরেলের নির্মাণ অগ্রগতি পরিদর্শনে দেখা গেছে, এই রুটের অনেক কাজ এখনো বাকি। ভায়াডাক্ট (উড়াল সড়কের ওপর রাস্তা) সম্পূর্ণ দৃশ্যমান হয়নি। ট্রেনের জ্বালানি হিসেবে বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হবে, কিন্তু বৈদ্যুতিক লাইন নির্মাণও বাকি। বিশেষ করে মিরপুর থেকে আগারগাঁও অংশের কাজ চলছে ধীরগতিতে। 

ভায়াডাক্ট নির্মাণ, বিদ্যুৎ লাইন নির্মাণসহ অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণ শেষ করা হলে পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চলাচল শুরু হবে। ৬টি কোচের এই ট্রেন আনা হবে জাপান থেকে। কবে নাগাদ তা দেশে এসে পৌঁছবে তা নিয়েও আছে সংশয়। 

অবশ্য, কর্তৃপক্ষ আশা করছেন শিগগিরই জাহাজে করে ট্রেন জাপান থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেবে। আগামী ২৩ এপ্রিল তা ঢাকায় এসে পৌঁছাতে পারে বলে আশা করছেন প্রকল্পের কর্মকর্তারা।

ব্রিফিংয়ে প্রকল্পের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিক বলেন, পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চালুর পরও অনেক কাজ থাকবে। ১০০ কিলোমিটারের গতি নিয়ন্ত্রণ, বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা, গন্তব্যে নির্ধারিত সময়ে পৌঁছানো, স্টেশনে এসে থামলে সতর্ক সংকেত, স্বয়ংক্রিয়ভাবে দরজা খোলা আবার নির্ধারিত সময়ে বন্ধ হয়ে যাওয়া- এরকম বিষয়গুলো ভালোভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে উপযুক্ত অবস্থায় আসতে হবে। পরীক্ষামূলক সময়টা কোনো কোনো দেশে ছয় মাস এবং কোনো দেশে এক বছর পর্যন্ত লেগে যায়।

উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত উড়াল সড়কের মোট দৈর্ঘ ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। এই অংশের সার্বিক বাস্তবায়ন অগ্রগতি ৭৬ দশমিক ৯৭ শতাংশ। এই দূরত্বে উত্তরা উত্তর থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মোট ৯টি স্টেশন।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, 'কোভিডের কারণে প্রকল্পের বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত হয়েছে। প্রকল্পের জাপানি প্রকৌশলীদের অনেকেই এখনো ঢাকায় আসতে পারেননি। কোভিডের আগে তিন শিফটে কাজ চলত। এখন দুই শিফটে করতে হয়। এই পিছিয়ে পড়ার কারণে নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না যে, এবারের বিজয় দিবসেই মেট্রোরেল যাত্রীদের জন্য খুলে দেওয়া হবে। তবে সরকার চায় এই উপযুক্ত সময়েই জনগণ সরকারের কাছ থেকে উপহারটা যেন পায়। এই সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ওপর সরকারের আস্থা রয়েছে।'

এম এ মান্নান আরও বলেন, 'মেট্রোরেল ব্যবহারকারীদের জন্য সহজ ও ব্যয়সাশ্রয়ী করা হবে। পয়সা দিলে অটোমেটিক পানির বোতল বের হয়ে আসা, বিশ্রামাগারসহ সর্বাধুনিক সুযোগ থাকবে এক একটি স্টেশনে। ভাড়া নির্ধারণেও সরকার টাকা কামানোর চিন্তা করবে না। বরং প্রকল্পের ব্যয় উঠে আসার বিষয়টি মাথায় রেখেই ভাড়া নির্ধারণ করা হবে।'

ঢাকা মহনগর এবং সংলগ্ন পার্শ্ববর্তী এলাকার যানজট নিরসনে এবং গণপরিবহন সংকট নিরসনে ৬টি মেট্রোরেলের সমন্বয়ে ঢাকা মাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) আওতায় এ প্রকল্পের কাজ চলছে। এ কর্মপরিকল্পনার গুরুত্বপূর্ণ অংশ উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২৬ দশমিক ১০ কিলোমিটার মাস রেপিড ট্রানজিটের (এমআরটি) বাস্তবায়ন অগ্রগতি ৫৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে মতিঝিল থেকে কমলাপুর স্টেশন পর্যন্ত ১ দশমিক ৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের বর্ধিতাংশ নির্মাণেও জরিপ শেষ করা হয়েছে।

© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩

সম্পাদক : আলমগীর হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ

টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com