
মিয়ানমারে জান্তার গুলিতে নিহত ১৩, চীনা কারখানায় আগুন
প্রকাশ: ০৭ এপ্রিল ২১ । ১৭:১১ | আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২১ । ০০:৩৮
অনলাইন ডেস্ক

চীনের মালিকানাধীন কারখানায় আগুন লাগিয়ে দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা- সংগৃহীত
মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে দিন দিন গণতন্ত্রপন্থিদের আন্দোলনের তীব্রতা বাড়ছে। জান্তাবিরোধী প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ দমন করতে নির্বিচারে হত্যা, গ্রেপ্তার ও ইন্টারনেট বন্ধ করেও তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না নিরাপত্তা বাহিনী।
বুধবার দেশটির গাগেং অঞ্চলের কালে শহরের তাহরান প্রতিবাদ ক্যাম্পে জড়ো হয়েছিলেন বিক্ষোভকারীরা। এ সময় এতে নির্বিচারে গুলি চালায় নিরাপত্তা বাহিনী। মিয়ানমার নাউ জানায়, এতে অন্তত আটজন নিহত হয়েছেন। এদিন ইয়াঙ্গুনের কাছে বাগো শহরে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে আরও দুই বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। সব মিলিয়ে এদিন মারা গেছেন ১৩ জন। খবর মিয়ানমার নাউ, রয়টার্স ও এএফপির।
দেশটির স্বাধীন পর্যবেক্ষণ সংস্থা অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স (এএপিপি) বিবৃতিতে জানায়, মঙ্গলবার পর্যন্ত নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে অন্তত ৫৮৪ বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন।
বুধবার এই আন্দোলনের মধ্যে ইয়াঙ্গুনে চীনা মালিকানাধীন একটি পোশাক কারখানায় আগুন লাগার খবর দিয়েছে দেশটির দমকল বিভাগ। তবে অগ্নিকাণ্ডে হতাহতের সংখ্যা ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানায়নি কর্তৃপক্ষ। এদিকে, এ শহরের আরেক এলাকায় বিক্ষোভকারীদের চীনের পতাকায় আগুন দেওয়ার ছবি ফেসবুকেও এসেছে। এর আগে গত মাসে জান্তাকে সমর্থন দেওয়া চীনের বিনিয়োগ করা ৩২টি কারখানায় অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছিল।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশজুড়ে গণতন্ত্রপন্থিদের সমন্বিত আন্দোলনের ফলে ক্রমেই নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে জান্তা। জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার নিষেধাজ্ঞার ফলে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে দেশটি।
ফিচ সলিউশন নামে একটি আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থা বুধবার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, মিয়ানমারে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় পশ্চিমা দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞার ফলে সফলতা আসছে। অন্যদিকে, বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠী ও আদিবাসী জাতি এ আন্দোলনে সমর্থন দেওয়ায় মধ্যম মানের সহিংস বিপ্লবের পূর্বাভাস পাওয়া যাচ্ছে।
ফিচ সলিউশন বলছে, 'বেসামরিক ও সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর ওপর নিরাপত্তা বাহিনীর ক্রমবর্ধমান সহিংসতায় দেখা যাচ্ছে যে, সেনাবাহিনী ক্রমেই দেশের নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে।'
অন্যদিকে, বুধবার এক বিবৃতিতে জান্তার প্রধান জেনারেল মিন অং হদ্মাইং বলেন, আইন অমান্য আন্দোলনের কারণে হাসপাতাল, স্কুল, সড়ক, ব্যাংক, বিভিন্ন দপ্তর ও কারখানা স্থবির হয়ে আছে। এই অসহযোগ আন্দোলন মিয়ানমারকে 'ধ্বংস করে দিচ্ছে'।
আগেই সেনা অভ্যুত্থানের পর দেশে এক বছরের জরুরি অবস্থা জারি করে এর মধ্যে সাধারণ নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছিল জান্তা। সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে আলজাজিরার পক্ষ থেকে জান্তার মুখপাত্রকে নির্বাচনের সময়সূচি জিজ্ঞাসা করা হলেও তার উত্তর দেননি তিনি। পরে এ জরুরি অবস্থার মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানোর ইঙ্গিত দেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জ মিন তুন।
© সমকাল ২০০৫ - ২০২২
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোজাম্মেল হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ
টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com