
তামিলের দুর্দান্ত ৫টি থ্রিলার সিনেমা
প্রকাশ: ২১ এপ্রিল ২১ । ১৭:০৬ | আপডেট: ২১ এপ্রিল ২১ । ১৭:১৯
নুর ইসলাম টিপু

ভারতে বলিউডকে টেক্কা দিচ্ছে সাউথ ইন্ডিয়ান ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি। মূলত দক্ষিণ ভারতের চারটি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে এই সাউথ ইন্ডিয়ান ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি গঠিত। তামিল (কলিউড), তেলেগু (টলিউড), মালায়ালাম (মলিউড) এবং কন্নড় (স্যান্ডলউড)। এদের মধ্যে সবচেয়ে বড় ইন্ডাস্ট্রি হলো তামিল।
উরাধুরা অ্যাকশনের পাশাপাশি দুর্দান্ত সব থ্রিলার সিনেমা তৈরিতে তামিল ইন্ডাস্ট্রির জুড়ি মেলা ভার। আজ তেমনই তামিলের পাঁচটি দুর্দান্ত থ্রিলার সিনেমার সঙ্গে আপনাদের পরিচয় করিয়ে দিবো। লকডাউনের এই সময়ে বাসায় বসে দেখতে পারেন এই সিনেমাগুলো
১. Dhuruvangal Pathinaaru (2016): দীপক একজন অবসর প্রাপ্ত পুলিশ অফিসার। অবসরের পর নতুন বাসার কাজে নিজেকে ব্যস্ত রেখেছেন। হঠাৎ একদিন তার ফোনে পরিচিত একজনের নম্বর থেকে কল আসে, যার ছেলে পুলিশ অফিসার হতে চায়। কিন্তু ছেলেকে পুলিশ অফিসার বানাতে রাজি নন তিনি। তাই ছেলেকে পাঠাতে চান দীপকের কাছে, যাতে দীপক উনার ছেলেকে বুঝাতে পারেন পুলিশের চাকরিতে জীবন কতোটা ঝুঁকি রয়েছে। কারণ একটি কেস নিয়ে দীপকের ভয়ংকর অভিজ্ঞতা রয়েছে। সেই ছেলে দীপকের কাছে আসলে, অফিসার দীপক তার সেই কেস নিয়ে বিস্তারিত বলতে থাকেন। এভাবেই সিনেমার গল্প আগাতে থাকে। কি ছিলো সেই কেসের মাঝে? কেনো তিনি অন্য কাউকে পুলিশে আসার ব্যাপারে অনুৎসাহিত করেন? সব প্রশ্নের উত্তর মিলবে সিনেমাতে। কিন্তু আপনি যা চিন্তা করছেন, তারচেয়েও বড় চমক অপেক্ষা করছে সিনেমার শেষ ভাগে। দুর্দান্ত এই থ্রিলার সিনেমাটি আগে না দেখে থাকলে অবশ্যই দেখে নিতে পারেন।
২. Ratsasan (2018): আপনি যদি ফেসবুকে সিনেমার গ্রুপগুলোতে যুক্ত থাকেন, তাহলে এই সিনেমার নাম এতোদিনে অবশ্যই অনেকবার শুনে ফেলেছেন। সিনেমার শুরুতেই অরুন কুমার নামের একজন তরুণকে দেখা যায়, যার স্বপ্ন সাইকোপ্যাথ নিয়ে সিনেমা নির্মাণ করবেন। কিন্তু স্ক্রিপ্ট নিয়ে অনেক প্রযোজক-পরিচালকের কাছে গেলেও, কোথাও সাড়া মেলেনি সেভাবে। নিজের স্বপ্নকে বিসর্জন দিয়ে অনেকটা বাধ্য হয়ে পুলিশে জয়েন করেন অরুন। ঠিক সেই সময় শহরে একের পর এক স্কুল ছাত্রীর নৃশংসহ মরদেহ উদ্ধার হতে থাকে। মরদেহের পাশে আবার একটি করে গিফট বক্স পাওয়া যায়। এসব কেসের তদন্তে যুক্ত হন অরুন কুমার। তিনি কি পারবেন সাইকো কিলারকে থামাতে? তার সিনেমার স্ক্রিপ্ট লেখার অভিজ্ঞতা কি কোনো কাজে আসবে এখানে? কেনোই বা সাইকো কিলার বেছে বেছে স্কুল পড়ুয়া তরুণীদের হত্যা করছেন? গিফট বক্স পাঠানোর উদ্দেশ্যই বা কি? এসব প্রশ্নের উত্তর মিলবে সিনেমার শেষে। রক্ত হিম করা টান টান উত্তেজনার এই থ্রিলার সিনেমাটি আপনাদের হৃদযন্ত্রের যে বড় পরীক্ষা নিবে, সে ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই।
৩. Thadam (2019): এঢ়িল ও কাভিন দুজন দেখতে একই রকম। কিন্তু দুজনের চরিত্রে আকাশ-পাতাল ব্যবধান। এদের মধ্যে এঢ়িল একজন ইঞ্জিনিয়ার এবং তার কনস্ট্রাকশন কোম্পানি আছে। তার জীবনযাপন অনেক বেশি ডিসেন্ট। মেয়েদের সাথে কথা বলতেও ভয় পায় এঢ়িল। অন্যদিকে কাভিন একটু ভবঘুরে টাইপের, অনেক বেশি চালাক। ধান্দাবাজি করে মানুষের টাকা হাতিয়ে নেয় কাভিন। জুয়া খেলা এবং অনেক মেয়ের সাথে সম্পর্ক করাই তার কাজ। এক রাতে শহরে আকাশ নামের একজন খুন হলে সন্দেহভাজন হিসেবে তাদের দুজনকেই আটক করে পুলিশ। দুজনের কেউ-ই খুনের ব্যাপারে স্বীকার করে না। তাদের দুজনের চেহারা যেমন এক, তেমনি ফরেনসিক রিপোর্টে দুজনের ডিএনএ-ও মিলে যায়। তাহলে দুজনের মধ্যে খুনী কে? ডিএনএ টেস্ট একই আসার কারণ কি? কখনো মনে হবে এঢ়িল, আবার কখনো মনে হবে কাভিন খুন করেছে। সিনেমায় পুলিশের মাথা যেমন চক্কর খেয়েছিল অপরাধী খুঁজতে, তেমনি সিনেমাটি দেখার সময় আপনার চিন্তাশক্তিও ঘুরপাক খাবে শিওর। আরেকটি তথ্য আপনাদের জানিয়ে রাখি। এই সিনেমাটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত।
৪. Imaikkaa Nodigal (2018): একটি কিডন্যাপের দৃশ্য দিয়ে সিনেমার শুরু। প্রথম ৫ মিনিটের মাথাতেই কিডন্যাপারকেও দেখানো হয়। কি ভাবছেন? সিনেমা শেষ! এমন যদি চিন্তা করে থাকেন, তাহলে আপনার চিন্তাকে ১৮০ ডিগ্রি পাল্টে দিবে এই সিনেমাটি। সিনেমার গল্পে আসি। শহরে হঠাৎ এক সাইকোপ্যাথের আবির্ভাব ঘটে। যে কিনা কিডন্যাপের পরে টাকা দাবী করে। কিন্তু টাকা দেওয়ার পরেও সে নৃশংসভাবে খুন করে। সাইকো নিজেকে রুদ্র নামে পরিচয় দেয়। কিন্তু রুদ্র এমন একজন সাইকোপ্যাথ, যে পাঁচ বছর আগে সিবিআইয়ের অপারেশনে অফিসার অঞ্জলীর হাতে মারা গিয়েছিল। রুদ্র তখন মারা গেলে এখন আবার ফিরে আসে কিভাবে? সে আবার সিবিআই অফিসার অঞ্জলীকে একের পর এক চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে থাকে। পুরো সময় জুড়ে পুলিশের সাথে ইঁদুর-বিড়াল লড়াই চলে নিজেকে রুদ্র দাবী করা সাইকো প্যাথের। এক বসাতেই শেষ করার মতো দারুন থ্রিলার। আশাকরি উপভোগ করবেন বেশ।
৫. Iravukku Aayiram Kangal (2018): এক বৃষ্টিমুখর রাতে নির্জন শহরের কোনো একটা বাড়িতে এক তরুণীর লাশ পড়ে আছে। সেই রাতে বাড়িটিতে ওই তরুণীকে খুন করতে একের পর এক মানুষ আসে। কিন্তু বাসায় যিনিই প্রবেশ করেন, তিনিই অবাক হয়ে যান। কারণ তার আগেই অন্য কেউ একজন এসে তরুণীকে খুন করে পালিয়ে গিয়েছে। অন্য সবার মতো শহরের একজন সাধারণ ট্যাক্সি ড্রাইভারও এসেছিলেন সেই বাড়িতে। কিন্তু বাড়িতে প্রবেশ করতেই বুঝতে পারেন, এখানে কোনো ঝামেলা চলছে। তাই তিনি দ্রুত বাড়িটি থেকে বের হয়ে চলে যান। কিন্তু তাকে বের হওয়ার সময় পাশের বাসা থেকে একজন দেখে ফেলে এবং পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ সেই তরুণীয় হত্যাকারী হিসেবে ট্যাক্সি ড্রাইভারকে হন্যে হয়ে খুঁজতে থাকেন। ট্যাক্সি ড্রাইভার কি আসলেই হত্যাকারী? সেই রাতে সে কেনো ওই বাড়িতে গিয়েছিল? অন্য যারা হত্যা করতে গিয়েছিল, সেটার পেছনের কারণ কি? তরুণীটিকে আসলে কে হত্যা করলো? সব প্রশ্নের উত্তর মিলবে সিনেমাটিতে। সিনেমার শেষভাগে আপনার জন্য আরেকটি বড় টুইস্ট অপেক্ষা করছে। শেষ হইয়াও যেনো হইলো না শেষ!
© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩
সম্পাদক : মোজাম্মেল হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ
টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com