রাবিতে নিয়োগের আগে চলে দরকষাকষিও, অডিও ফাঁস

প্রকাশ: ১০ মে ২১ । ০১:২০

নুরুজ্জামান খান, রাবি

ফাইল ছবি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বিদায়ী উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহানের শেষ কর্মদিবসে গণনিয়োগের বিতর্ক কাটতে না কাটতে এবার নিয়োগ নিয়ে দরকষাকষির কথোপকথনের অডিও ফাঁস হয়েছে। নিয়োগ নিয়ে চলমান বিতকের্র মধ্যেই বিভিন্ন সামাজিকমাধ্যমে ঘুরে বেড়াচ্ছে আলী হায়দারের কথোপকথনটি। কথোপকথনে তাকে একজন চাকরিপ্রার্থীকে 'কত দিতে সামর্থ্য আছে?' এমনটি বলতে শোনা যায়। তবে এই কথোপকথনটি পরিবহন দপ্তরের সাবেক প্রশাসক ও উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আলী হায়দারের নয় বলে তিনি দাবি করেছেন। তাকে ফাঁসাতে কেউ কারসাজির মাধ্যমে এটি করেছে বলে তার দাবি। এক মিনিট ৪৫ সেকেন্ডের কথোপকথনটি সমকালের হাতে এসেছে। এ ছাড়া অপর এক চাকরিপ্রার্থীর সঙ্গেও আলী হায়দারের কথোপকথনের একটি অডিও পাওয়া গেছে।

বিদায়ী উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান প্রথম মেয়াদে নিয়োগ পেয়ে শিক্ষক হিসেবে আলী হায়দারকে নিয়োগ দেন। দ্বিতীয় নিয়োগ পাওয়ার পর তাকে পরিবহন দপ্তরের প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেন এম আব্দুস সোবহান। একই এলাকায় বাড়ি হওয়ার কারণে দু'জনের মধ্যে ভালো সম্পর্ক ছিল। সব সময় ভিসির সঙ্গেই থাকতেন তিনি। ভিসির কার্যালয় ও বাসভবনে তার অবাধ যাতায়াত ছিল।

ফাঁস হওয়া দু'জনের কথোপকথনটি তুলে ধরা হলো-

আলী হায়দার: এখন ঘটনা হচ্ছে কী শোনো, আমি বলি। আসলে সেখানে লোকজন আছে তো; সিনিয়র লোকজন। ওরা আবার বিভিন্ন ধান্দায় থাকে; বোঝো না?

চাকরিপ্রার্থী: স্যার, যা থাকে আপনি ম্যানেজ করেন। আপনি শুধু ওগুলা আমাকে বলবেন।

আলী হায়দার: ওরা আবার খুব ভয় পায়। বোঝো না?

চাকরিপ্রার্থী: কোনো সমস্যা নেই স্যার। বললাম, শুধু এটা আপনি আর আমার মধ্যে।

আলী হায়দার: তোমার সামর্থ্য কতটুকু?

চাকরিপ্রার্থী: স্যার, এটা আপনি বললে তারপর সামর্থ্য অনুযায়ী আমি চেষ্টা করব।

আলী হায়দার: আমি এই কাজ করব না যে, তুমি একটা জিনিস বিক্রি করে এনে দাও। এটা করা যাবে না।

চাকরিপ্রার্থী: এখন আমার বাবা হয়তো বা আমি খোলাখুলি বলি স্যার, তিনি এখন যে অবস্থায় আছেন; ৮-১০ পর্যন্ত উঠতে পারবেন।

আলী হায়দার: ওইটুকুই ওইটুকুই? আমি তোমাকে বলি, আমি বলব না- ওইটুকুতেই হবে। তোমার যা আছে তা বিক্রি করার দরকার নেই।

চাকরিপ্রার্থী: বুঝেছি স্যার।

আলী হায়দার: তোমার অ্যাকাউন্ট আছে না?

চাকরিপ্রার্থী: জি স্যার।

আলী হায়দার: তোমার ওই অ্যাকাউন্ট থেকে পার করে দিবা।

চাকরিপ্রার্থী: জি স্যার, আমি নতুন অ্যাকাউন্ট খুলেছি। এই বিষয়ে স্যার আপনি নিশ্চিত থাকেন- কেউ জানবে না। আমি তামিমা এবং সুমাইয়া থেকে আপনি এবং আপনার পরিবার সম্পর্কে জেনেছি।

আলী হায়দার: (একজনের নাম অস্পষ্ট) দু'লাখ প্রথমে দিয়েছে তারপর আবার দিয়েছে। তুমি নিশ্চিত থাকো, যাও।

চাকরিপ্রার্থী: ইনশাল্লাহ স্যার।

তবে আলী হায়দারের সঙ্গে কথোপকথনকারীর পরিচয় পাওয়া যায়নি। এ ছাড়াও তাদের আলোচনার মধ্যে থাকা তামিমা ও সুমাইয়ার পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ বিষয়ে আলী হায়দার সমকালকে বলেন, আমি কারও সঙ্গে টাকার লেনদেন করিনি। কাউকে ক্যাম্পাসে চাকরিও দিইনি। ভিসি স্যারের সঙ্গে আমার সম্পর্ক ভালো ছিল। তাই কেউ এমনটি ষড়যন্ত্র করছে।

© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩

সম্পাদক : মোজাম্মেল হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ

টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com