
চট্টগ্রামে মিতু হত্যা
তিন মাস আগেই হত্যার পরিকল্পনা করেন বাবুল
জবানবন্দি দিতে অস্বীকৃতি রিমান্ড শেষে কারাগারে
প্রকাশ: ১৮ মে ২১ । ০০:০০ | আপডেট: ১৮ মে ২১ । ০১:৫৯ | প্রিন্ট সংস্করণ
আহমেদ কুতুব, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামের আলোচিত মাহমুদা খানম মিতুকে হত্যা করার পরিকল্পনা করা হয় ঘটনা সংঘটিত হওয়ার তিন মাস আগেই। বাবুল আক্তার পরিকল্পনা সাজিয়ে তা বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেন পুলিশের সোর্স কামরুল ইসলাম সিকদার ওরফে মুসাকে। মুসা প্রথমে রাজি না হলে তাকে চট্টগ্রাম ছাড়া করার হুমকিও দেন বাবুল। মুসা মিতুকে খুন না করে তালাক দেওয়ার প্রস্তাব দিলে আরও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন বাবুল। চাপে পড়েই মুসা তার 'অপারেশন দল' নিয়ে মিতুকে খুন করেন। সংশ্নিষ্ট তদন্ত সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। এদিকে গতকাল সোমবার স্ত্রীকে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেওয়ার কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে বেঁকে বসেন বাবুল আক্তার। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) তদন্ত সূত্রে আরও জানা গেছে, মিতু খুনের আগে টানা তিন মাস একাধিকবার মুসার সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে কথা হয় বাবুল আক্তারের। বাবুল তাকে নতুন নতুন দিকনির্দেশনাও দিতেন। মুসা নিজে বাঁচতে বাবুলের হোয়াটসঅ্যাপ কল লাউডস্পিকারে দিয়ে অন্য একটি মোবাইল ফোনে কথোপকথন রেকর্ড করে রাখতেন। তাদের কথাবার্তা শোনাতেন 'অপারেশন'-এর দায়িত্বে থাকা ওয়াসিম, কালু, আনোয়ারদেরও। নিখুঁতভাবে খুনের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বাবুল আক্তার মুসাকে মোটরসাইকেল কিনতেও টাকা দিয়েছেন।
মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক সন্তোষ চাকমা সমকালকে বলেন, মিতুকে হত্যার পরিকল্পনা তিন মাস আগেই করার তথ্যটি আমরা অন্য আসামিদের কাছ থেকে জানতে পেরেছি। মোটরসাইকেল কেনার অর্থ দেওয়াসহ বহু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও জানা গেছে। বাবুল আক্তার রিমান্ডে প্রথম দিকে মুখ না খুললেও শেষে এসে পিবিআইর হাতে থাকা বহু তথ্য দেখালে তিনি বিষয়টি স্বীকার করেছেন। আদালতে গিয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেবেন বলে জানালেও শেষ মুহূর্তে তিনি মত বদল করেছেন।
তদন্ত সংশ্নিষ্ট সূত্রে আরও জানা গেছে, বাবুল আক্তার মুসাকে মারাত্মক চাপ দিয়ে একপ্রকার ফাঁদে ফেলে মিতুকে খুন করাতে রাজি করেন। এ জন্য দুটি অস্ত্রও সংগ্রহ করে দেন তিনি। অস্ত্র দুটি সংগ্রহ করে দেন ভোলা। গোয়েন্দা পুলিশ ২০১৬ সালের ২৮ জুন বাকলিয়া এলাকা থেকে ভোলা ও তার সহযোগী মনিরকে পয়েন্ট ৩২ বোরের একটি পিস্তলসহ গ্রেপ্তার করে। পিবিআই এখন মিতু খুনে ব্যবহার করা দ্বিতীয় অস্ত্রটি উদ্ধারের চেষ্টা করছে।
সূত্র জানায়, মিতুকে হত্যার পর বাবুলের সঙ্গে মুসার হোয়াটসঅ্যাপে কথোপকথনের রেকর্ডসহ গুরুত্বপূর্ণ আলামত নষ্ট করা হয়েছে। যে হোয়াটসঅ্যাপে তারা কথা বলতেন, তার কোনো আলামত মামলার কেইস ডকেট কিংবা জব্দ তালিকায় নেই। এমনকি মামলার আসামিরা জানিয়েছেন, সেই সময় অপারেশন ও তদন্তের দায়িত্বে থাকা তিনজন কর্মকর্তা সব আলামত হাতে পেয়েও তা জব্দ করেননি। তবে সেই হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর থেকে নষ্ট করা আলামত উদ্ধারের সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে পিবিআই।
তদন্ত কর্মকর্তা সন্তোষ চাকমা বলেন, আমাদের হাতে বহু চাঞ্চল্যকর তথ্য রয়েছে। তদন্তের স্বার্থে এখনই তা প্রকাশ করা হবে না। বাবুল ও সাকুকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। কারাবন্দি ওয়াসিম ও আনোয়ারকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর সব পরিস্কার হয়ে যাবে।
শেষ মুহূর্তে জবানবন্দি দেননি বাবুল:মিতু হত্যা মামলার প্রধান আসামি সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার জবানবন্দি দেওয়ার জন্য রাজি হলেও শেষ মুহূর্তে বেঁকে বসেন। পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে গতকাল সকাল ১১টায় তাকে আদালতে পাঠায় পিবিআই। বিকেলে তাকে এজলাসে তোলা হলেও তিনি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিতে রাজি হননি। পরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সরোয়ার জাহান তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার (প্রসিকিউশন) কাজী শাহাবুদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেছেন, জবানবন্দি দেওয়ার জন্য বিচারক বাবুলকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য তিন ঘণ্টা সময় দেন। বিচারকের খাস কামরায় আসামিকে দেওয়া নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার পর উল্টে যান বাবুল। তারপর শুনানি শেষে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর সন্তোষ চাকমা বলেন, বাবুল আক্তারকে ফের রিমান্ডে নেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন করা হবে।
গত ১২ মে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্রেদ্বট সরোয়ার জাহানের আদালত মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় প্রধান আসামি স্বামী সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের পাঁচ দিনের রিমান্ডে মঞ্জুর করেন। মিতুর বাবা সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন বাদী হয়ে পাঁচলাইশ থানায় বাবুল আক্তারসহ আটজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলা তদন্ত করার জন্য পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর কাছে হস্তান্তর করে পাঁচলাইশ থানা পুলিশ। এর আগে ১০ মে মামলার বাদী হিসেবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো কার্যালয়ে ডেকে আনা হয় বাবুল আক্তারকে। তার পরই পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয় তাকে।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) তদন্ত সূত্রে আরও জানা গেছে, মিতু খুনের আগে টানা তিন মাস একাধিকবার মুসার সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে কথা হয় বাবুল আক্তারের। বাবুল তাকে নতুন নতুন দিকনির্দেশনাও দিতেন। মুসা নিজে বাঁচতে বাবুলের হোয়াটসঅ্যাপ কল লাউডস্পিকারে দিয়ে অন্য একটি মোবাইল ফোনে কথোপকথন রেকর্ড করে রাখতেন। তাদের কথাবার্তা শোনাতেন 'অপারেশন'-এর দায়িত্বে থাকা ওয়াসিম, কালু, আনোয়ারদেরও। নিখুঁতভাবে খুনের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বাবুল আক্তার মুসাকে মোটরসাইকেল কিনতেও টাকা দিয়েছেন।
মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক সন্তোষ চাকমা সমকালকে বলেন, মিতুকে হত্যার পরিকল্পনা তিন মাস আগেই করার তথ্যটি আমরা অন্য আসামিদের কাছ থেকে জানতে পেরেছি। মোটরসাইকেল কেনার অর্থ দেওয়াসহ বহু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও জানা গেছে। বাবুল আক্তার রিমান্ডে প্রথম দিকে মুখ না খুললেও শেষে এসে পিবিআইর হাতে থাকা বহু তথ্য দেখালে তিনি বিষয়টি স্বীকার করেছেন। আদালতে গিয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেবেন বলে জানালেও শেষ মুহূর্তে তিনি মত বদল করেছেন।
তদন্ত সংশ্নিষ্ট সূত্রে আরও জানা গেছে, বাবুল আক্তার মুসাকে মারাত্মক চাপ দিয়ে একপ্রকার ফাঁদে ফেলে মিতুকে খুন করাতে রাজি করেন। এ জন্য দুটি অস্ত্রও সংগ্রহ করে দেন তিনি। অস্ত্র দুটি সংগ্রহ করে দেন ভোলা। গোয়েন্দা পুলিশ ২০১৬ সালের ২৮ জুন বাকলিয়া এলাকা থেকে ভোলা ও তার সহযোগী মনিরকে পয়েন্ট ৩২ বোরের একটি পিস্তলসহ গ্রেপ্তার করে। পিবিআই এখন মিতু খুনে ব্যবহার করা দ্বিতীয় অস্ত্রটি উদ্ধারের চেষ্টা করছে।
সূত্র জানায়, মিতুকে হত্যার পর বাবুলের সঙ্গে মুসার হোয়াটসঅ্যাপে কথোপকথনের রেকর্ডসহ গুরুত্বপূর্ণ আলামত নষ্ট করা হয়েছে। যে হোয়াটসঅ্যাপে তারা কথা বলতেন, তার কোনো আলামত মামলার কেইস ডকেট কিংবা জব্দ তালিকায় নেই। এমনকি মামলার আসামিরা জানিয়েছেন, সেই সময় অপারেশন ও তদন্তের দায়িত্বে থাকা তিনজন কর্মকর্তা সব আলামত হাতে পেয়েও তা জব্দ করেননি। তবে সেই হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর থেকে নষ্ট করা আলামত উদ্ধারের সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে পিবিআই।
তদন্ত কর্মকর্তা সন্তোষ চাকমা বলেন, আমাদের হাতে বহু চাঞ্চল্যকর তথ্য রয়েছে। তদন্তের স্বার্থে এখনই তা প্রকাশ করা হবে না। বাবুল ও সাকুকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। কারাবন্দি ওয়াসিম ও আনোয়ারকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর সব পরিস্কার হয়ে যাবে।
শেষ মুহূর্তে জবানবন্দি দেননি বাবুল:মিতু হত্যা মামলার প্রধান আসামি সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার জবানবন্দি দেওয়ার জন্য রাজি হলেও শেষ মুহূর্তে বেঁকে বসেন। পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে গতকাল সকাল ১১টায় তাকে আদালতে পাঠায় পিবিআই। বিকেলে তাকে এজলাসে তোলা হলেও তিনি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিতে রাজি হননি। পরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সরোয়ার জাহান তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার (প্রসিকিউশন) কাজী শাহাবুদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেছেন, জবানবন্দি দেওয়ার জন্য বিচারক বাবুলকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য তিন ঘণ্টা সময় দেন। বিচারকের খাস কামরায় আসামিকে দেওয়া নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার পর উল্টে যান বাবুল। তারপর শুনানি শেষে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর সন্তোষ চাকমা বলেন, বাবুল আক্তারকে ফের রিমান্ডে নেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন করা হবে।
গত ১২ মে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্রেদ্বট সরোয়ার জাহানের আদালত মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় প্রধান আসামি স্বামী সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের পাঁচ দিনের রিমান্ডে মঞ্জুর করেন। মিতুর বাবা সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন বাদী হয়ে পাঁচলাইশ থানায় বাবুল আক্তারসহ আটজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলা তদন্ত করার জন্য পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর কাছে হস্তান্তর করে পাঁচলাইশ থানা পুলিশ। এর আগে ১০ মে মামলার বাদী হিসেবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো কার্যালয়ে ডেকে আনা হয় বাবুল আক্তারকে। তার পরই পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয় তাকে।
© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩
সম্পাদক : আলমগীর হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ
টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com