
রমেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের সব এসি-ফ্যান নষ্ট
রোগীদের ভোগান্তি
প্রকাশ: ০৫ জুন ২১ । ১৮:২৫ | আপডেট: ০৫ জুন ২১ । ১৮:৪২
রংপুর প্রতিনিধি

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের সব এসি বিকল হওয়ায় তীব্র গরমে রোগীদের চরম ভোগান্তি- সমকাল
রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের সব এসি বিকল হওয়ায় তীব্র গরমে রোগীদের চরম ভোগান্তি সৃষ্টি হয়েছে। গত তিন মাসের বেশি সময় ধরে ইউনিটের ৩টি সেন্ট্রাল এসিসহ ১০টি এসিই বিকল হয়ে পড়েছে। এতে তীব্র গরম সহ্য করতে না পেরে চরম যন্ত্রণা নিয়ে দিন পার করছেন রোগীরা। দুর্ভোগ কমাতে দ্রুত এসি মেরামতের কথা জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
রসেক সূত্রে জানা যায়, দেশের উত্তরের পুড়ে যাওয়া রোগীদের একমাত্র ভরসাস্থল রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিট। এখানে ১২টি শয্যায় রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়। শীত মৌসুমের পর থেকে হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের এসিগুলো বিকল হতে থাকে। এতে করে গ্রীষ্মের তীব্র তাপদাহে চরম যন্ত্রণায় দিন পাড় করছে রোগীরা। ইউনিটের সব এসি ও ফ্যান নষ্ট থাকায় হাত পাখা কিংবা নিজ ব্যবস্থাপনায় ফ্যান কিনে গরম নিবারণের চেষ্টা চালাচ্ছেন রোগীর স্বজনরা। স্বচ্ছল ব্যক্তিদের অনেকেই হাসপাতাল ছেড়ে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এছাড়া এসি নষ্ট হওয়ায় ড্রেসিং রুমসহ ওয়ার্ডে ঘর্মাক্ত শরীর নিয়ে সেবা দিচ্ছেন চিকিৎসক ও নার্সরা। এতে করে দ্রুত রোগ সংক্রমণের মাধ্যমে প্রাণহানির আশংঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে চিকিৎসাধীন বেশ কয়েকজন রোগীর মৃত্যুরও খবর পাওয়া গেছে।
বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন কুড়িগ্রাম উলিপরের রুবেল মিয়া (৩২) বলেন, বিদ্যুতের শকের মাধ্যমে তার শরীর পুড়ে গেছে। ৬ দিন ধরে বার্ন ইউনিটে ভর্তি আছি। এসি-ফ্যান কিছুই নেই। গরমে প্রচুর কষ্ট হয়। তাই শুক্রবার বাড়ি থেকে একটি ফ্যান আনা হয়েছে।
রোগীর স্বজন আফজালুর রহমান (৪৮) বলেন, আমার বড় ভাই প্রায় ২ মাস ধরে বার্ন ইউনিটে চিকিৎসা নিচ্ছে। এখানে আসার পর থেকেই দেখছি এসি নেই। তীব্র গরমে বিছানায় ছটফট করছেন তিনি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বলা হলেও তাদের কোন ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। এ ছাড়া হাসপাতালের বার্ন ইউনিট থেকে গ্যাসের ঔষধ ছাড়া আর কোনো ঔষধ সরবরাহ করা হয়নি। এ বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের নজরদারী আরো বাড়ানো দরকার।
খুলনা থেকে আসা রোগীর স্বজন মাসুদা বলেন, এসি-ফ্যান ছাড়া রোগীরা কেমন কষ্ট পাচ্ছে তা একমাত্র রোগীরাই বলতে পারবে। আল্লাহর কাছে দোয়া করছি যেন দ্রুত এসির ব্যবস্থা করা হয়। না হলে রোগীকে বাঁচানো সম্ভব হবে না।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. রেজাউল করিম বলেন, বার্ন ইউনিটের সবগুলো এসি নষ্ট হয়ে গেছে। এগুলো মেরামত করার জন্য গণর্পূত অধিদপ্তরকে জানানো হয়েছে। তারা একটি প্রকল্প করে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। এই প্রকল্পে আইসিইউ, সিসিইউ এবং বার্ন ইউনিটের এসি রয়েছে। তবে এ প্রকল্প পাস হতে অনেক সময় লাগবে। হাসপাতালের বিভিন্ন জায়গায় যে কাজ চলমান রয়েছে সেটির সঙ্গে সমন্বয় করে আমরা বার্ন ইউনিটের এসি মেরামত করার চেষ্টা করছি। গণপূর্ত এটি করে দেবে বলে আমাদের জানিয়েছে।
রংপুর গণপূর্ত অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন সমকালকে বলেন, রংপুর মেডিকেল কলেজের আইসিইউ, সিসিইউ, বার্ন ইউনিটের এসিগুলো আমাদের নয়। ইউনিটগুলো চালুর সময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ লাগিয়েছে। তারাই নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় মেরামত করেছে। আমরা শুক্রবার চিঠি পাওয়ার পর ওইদিন রাতেই বার্ন ইউনিটের জন্য কিছু স্ট্যান্ড ফ্যান সরবরাহ করেছি। খুব দ্রুতই নতুন এসি লাগানো হবে। এ ছাড়া মন্ত্রণালয়ের সাথে কথা হয়েছে। আইসিইউ, সিসিইউ ও বার্ন ইউনিটের জন্য থাকছে বিশেষ বরাদ্দ। আশা করি, সব ইউনিটে নতুন এসি দ্রুতই লাগানো সম্ভব হবে।
© সমকাল ২০০৫ - ২০২৩
সম্পাদক : মোজাম্মেল হোসেন । প্রকাশক : আবুল কালাম আজাদ
টাইমস মিডিয়া ভবন (৫ম তলা) | ৩৮৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮ । ফোন : ৫৫০২৯৮৩২-৩৮ | বিজ্ঞাপন : +৮৮০১৭১৪০৮০৩৭৮ | ই-মেইল: samakalad@gmail.com